বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
২০২০ সালের ৯ এপ্রিল পটুয়াখালী জেলার দুমকী উপজেলার মো: দুলাল হোসেন প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের মধ্য দিয়ে পটুয়াখালী জেলার করোনা শুরুর পর থেকে গতকাল ৪ জুলাই পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে এখন ৫ হাজার ৮ জনে পৌছল। একই দিনে পটুয়াখালীতে আক্রান্তের সংখ্যাও ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৮২ জন। এ ছাড়া ও জেলায় এসময় মোট মৃতের সংখ্যা ৯০ জন।
এ দিকে বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী এ জেলার জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পটুয়াখালীতে প্রথম ৫০ শয্যার বেড দিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা শুরু করা হলেও করোনার দ্বিতীয় ধাপে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৬০ উন্নীত করা হয়।সর্বশেষ গত জুলাই মাসে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পেলে বেডের সংখ্যা বাড়িয়ে ৮০ টি উন্নীত করা হয়েছে। পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে বড় ৪৮ টি এবং সাধারণ ২৪৬ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে।
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য ৫টি আইসিইউবেড স্থাপনের কাজ জুলাই মাসের মধ্যবর্তী সময়ে শেষ হলে পটুয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ২৩ জুলাই মন্ত্রণালয়ে আইসিইউ মনিটর সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাদি চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবরে চিঠি দেন। এদিকে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক সদর উপজেলা ও পটুয়াখালী পৌর সভার চেয়ারম্যান সমাজসেবক সুলতান আহম্মেদ মৃধা ৫টি পেশেন্ট মনিটর সহ আইসিইউ পরিচালনার অন্যান্য আনুষঙ্গিক যন্ত্রাদি অনুদান হিসেবে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রদান করেন।পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সুপার ডা:আব্দুল মতিন জানান, ইতোমধ্যে আইসিইউ পরিচালনার জন্য পটুয়াখালী থেকে ৮জন ডাক্তার ও ১০ জন নার্সকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। আইসিইউ শুরু করার সব ধরনের প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আইসিইউর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু করতে পারবো।
পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ইউনিসেফের সহায়তায় ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যায়ে হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমের লাইনের কাজ সম্পন্ন হলে ও অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর কাজ বাকী রয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য মেনিফোল্ড সিলিন্ডার সিস্টেম চালুর মাধ্যমে রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্টা ইন্টারন্যাশনালের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার সজল মাহমুদ জানিয়েছেন ,পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আজ পটুয়াখালীতে তাদের লিকুইড অক্সিজেন প্লান্টের ট্যাংক পটুয়াখালী বিকেলে এসে পৌঁছেছে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি স্থাপনের মাধ্যমে তারা সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালু করবেন।
এ দিকে পটুয়াখালীতে করোনা শনাক্তকরন আরটিপিসিআর ল্যাব না থাকায় করোনা শনাক্তকরণে বিলম্ব হওয়া পটুয়াখালী বাসীর সর্বমহলের দাবীর মুখে পটুয়াখালীতে করোনা শনাক্তকরন আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত হলেও দীর্ঘদিনেও তা চুড়ান্তরুপ লাভ করেনি। পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো: ফয়জুল বাশার জানান,পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়েছে। প্রয়োজনীয় মেশিনের জন্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে, মেশিন প্রাপ্তি সাপেক্ষে পটুয়াখালীতে করোনা শনাক্তকরন প্রক্রিয়াটি সহজতর হয়ে যাবে ।
এদিকে পটুয়াখালীতে জুলাই মাসে করোনা আক্রান্তের পাশাপশি করোনা উপসর্গের শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পটুয়াখালীতে অক্সিজেন সিলিন্ডার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে।পৌর মেয়র অক্সিজেন ব্যাংক ,বাউফল পৌর মেয়র অক্সিজেন ব্যাংক,রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঢাকাস্থ জুবিলী বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র সমিতি,ব্যাচ -৮৬ অক্সিজেন ব্যাংক, পটুয়াখালীর ফেলে আসা দিনগুলি, পটুয়াখালী বাসী, জুবিলীয়ান ’৯০ নামে বিভিন্ন বেসরকারী ও স্বোচ্ছাসেবী সংগঠন অসুস্থদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করে যাচ্ছে।পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ পটুয়াখালীতে অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করার ব্যবস্থা না থাকায় সব গ্রুপের অক্সিজেন সিলিন্ডার বরিশাল থেকে নিজ পরিবহনের মাধ্যমে রিফিল করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এ ছাড়াও ঢাকাস্থ জুবিলী বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র সমিতি ফ্রি অক্সিজেন সরবরাহের পাশাপাশি কঠোর লকডাউনের মধ্যে অসহায় রোগীদের পরিবহনে ইজি বাইকও সরবরাহ করে আসছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবিএম মসিউল কবির মাসুম।
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, উপজেলা পর্যায় দুমকী,মির্জাগঞ্জ,ওকলাপাড়ায় সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনের মাধ্যমে ম্যানিফোল্ড পদ্ধতিতে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া ওদশমিনায় হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা রয়েছে। জিনএক্সপার্ট মেশিনের মাধমে কলাপাড়া, গলাচিপা ও পটুয়াখালী বক্ষব্যাধী হাসপাতালে করোনা শনাক্তকরন কাজ চলছে। জেলার ৬ টি উপজেলা হাসপাতালে প্রায় ৩ শ অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ রয়েছে। উপজেলা হাসপাতাল গুলিতে প্রথমে ৫ শয্যার দিয়ে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু করা হলেও পরবর্র্তীতে তা ১০ এ উন্নীত করা হয়।বর্তমানে রোগী বেড়ে যাওয়ায় ২০ শয্যায় উন্নীত করার ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।