Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাশ্মীর এখনও বিতর্কিত, ভারতকে স্মরণ করিয়ে দিলো জাতিসংঘ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২১, ৫:৩২ পিএম

ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি হওয়ার দুই দিন পর, মহাসচিবের মুখপাত্র স্পষ্ট করেছেন যে, জম্মু ও কাশ্মীর বিরোধ নিয়ে জাতিসংঘের অবস্থান বদলায়নি। জাতিসংঘে

ভারতের রাষ্ট্রদূত টি.এস. তিরমূর্তি রাজ্যটি এখন ভারতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে বিবৃতির পর দেয়ার পর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এই মন্তব্য করা হয়।

নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় বুধবার বিকালে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিককে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, এই ৭০ বছরেরও বেশি পুরনো বিবাদে জাতিসংঘের অবস্থান কী? উত্তরে তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে আমাদের অবস্থান সুপ্রতিষ্ঠিত এবং পরিবর্তিত হয়নি।’ যখন সাংবাদিকরা তাকে এই বিষয়ে জাতিসংঘের অবস্থান জানতে চান তখন তিনি বলেন, ‘আপনারা এটি জাতিসংঘের রেজুলেশনে পাবেন। আমি এটি পুনরাবৃত্তি করব না, কিন্তু এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।’

সোমবার বিকেলে, জাতিসংঘে ভারতের রাষ্ট্রদূত টি.এস. জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলোতে বিতর্কিত অঞ্চলে জনমত গঠনের জন্য ভারতের প্রতিশ্রুতি ব্যাখ্যা করতে চাইলে তিনি দাবি করেন, জম্মু ও কাশ্মীর ‘ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ’। জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলকে অবৈধভাবে সংযুক্ত করার বিষয়ে নয়াদিল্লির ৫ আগস্ট, ২০১৯ সালে নেয়া পদক্ষেপ নিয়ে একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সংবিধানের অন্যান্য বিধানের মতো অনুচ্ছেদ ৩৭০ এ যে কোনও পরিবর্তন বা সংশোধন, সংসদের একমাত্র অধিকার। ভারত প্রজাতন্ত্র।’ তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশনের উপরেও আলোকপাত করেছিলেন যা জম্মু ও কাশ্মীরকে একটি বিতর্কিত অঞ্চল হিসাবে স্বীকৃতি দেয় এবং কাশ্মীরের জনগণের স্ব-সিদ্ধান্তের অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুনির আকরাম, যিনি এর আগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ভারতের আচরণ ‘সাবধানে পর্যবেক্ষণ’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি তিরুমূর্তির দাবি মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তার কার্যালয় থেকে জারি করা একটি বিবৃতিতে আকরাম স্পষ্ট করে বলেছেন,

ক) জম্মু ও কাশ্মীর একটি জাতিসংঘ-স্বীকৃত বিতর্কিত অঞ্চল এবং এটি ‘ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ’ নয়। খ) জনমত গঠনের আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলি বলবৎ থাকে এবং শুধুমাত্র নিরাপত্তা পরিষদই বাতিল করতে পারে। গ) ৫ আগস্ট ২০১৯ এ ভারতের একতরফা এবং অবৈধ পদক্ষেপ নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন নং ৯১ এবং নং ১২২ লঙ্ঘন করে। ঘ) ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে এ বিষয়ে সংলাপ হতে পারে যদি ভারত ৫ আগস্ট, ২০১৯ তারিখে এবং তার পরে আরোপিত সকল একতরফা এবং অবৈধ ব্যবস্থা প্রত্যাহার করে, অধিকৃত জম্বু-কাশ্মীরে শুরু হওয়া জনসংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তনগুলো পুনরুদ্ধার করে এবং সেখানে নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করে।

জাতিসংঘও ভারতের অবৈধ সংযুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছিল, নয়াদিল্লিকে মনে করিয়ে দিয়েছিল যে এই অঞ্চলে জাতিসংঘের অবস্থান জাতিসংঘের সনদ এবং প্রযোজ্য নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন দ্বারা পরিচালিত হয়। `মহাসচিব ১৯৭২ সালের ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের চুক্তিকে স্মরণ করেন, যা সিমলা চুক্তি নামেও পরিচিত, যেখানে বলা হয়েছে যে, জম্মু ও কাশ্মীরের চূড়ান্ত অবস্থা জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিষ্পত্তি করতে হবে’, জাতিসংঘ স্পষ্ট করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মহাসচিব কাশ্মীরের ভারতীয় অংশে বিধিনিষেধের প্রতিবেদনে উদ্বিগ্ন, যার ফলে ওই অঞ্চলে মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে।’ সূত্র : ডন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ