Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কুড়িগ্রামে লকডাউন উপেক্ষা করে সড়কে উপচে পড়া ভিড়

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০২১, ৪:১৩ পিএম

কুড়িগ্রামে কঠোর লকডাউন প্রভাব ফেলেনি সাধারণ মানুষের মধ্যে। লকডাউনে শহরাঞ্চলে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও রাস্তায় লোক সমাগম দেখে বোঝার উপায় নেই কঠোর লকডাউন চলছে। অটোরিক্সা, ইজিবাইক, মোটর সাইকেল আর প্রাইভেট কার দখল করে নিয়েছে সড়কগুলো। প্রশাসন থেকে যতক্ষণ নজরদারী থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সড়ক নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তারা চলে যাওযার পর লেজে গোবরে অবস্থা হয় সড়কের।

এছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালতে কাউকে আটক করা হলে শুরু হয় উপর থেকে তদবির। ফলে সরকারের কোভিড নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়েছে। এদিকে ঈদকে সামনে রেখে পরিবারসহ দল বেঁধে সবাই ছুঁটে চলেছেন আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে। গ্রামের অবস্থা আরো ভয়াবহ। সেখানে স্বাভাবিক দিনের মত দোকানপাট সব খোলা থাকছে। চায়ের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে লোকজন। দূর থেকে প্রশাসনের গাড়ীর শব্দ কানে আসলেই দোকানপাট বন্ধ রেখে সবাই ছুটে আড়ালে লুকিয়ে পড়ছেন। তাদের নিজেদের মধ্যে নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা।
গত দুদিনে ভ্রাম্যমান আদালতে আটকে পরা লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা প্রশাসনের নজরদারি না থাকার কারণে রাস্তায় বের হচ্ছেন। যেহেতু বের হলে কিছুই হয় না, তাই কারণে অকারণে সবাই বাইরে যাচ্ছেন। সন্ধ্যার পর বিভিন্ন মোড়গুলোয় মোটর সাইকেলসহ আড্ডায় মেতে ওঠে তরুন ও যুবকেরা। প্রতিটি গলিতে ঠাসা ঠাসা মানুষ। সবাই যেন চোর পুলিশ খেলায় মেতেছে। শনিবার শহরের ত্রিমোহণী বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ টিমের মধ্যে আটকা পরেন দিনাজপুর জেলার পাবর্বতীপুর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মুসাক আলী মোল্লা। তিনি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বাসিন্দা। বাড়ি থেকে নিজস্ব প্রাইভেট কারে সরকারি লোগো লাগিয়ে কর্মস্থলে ফিরছিলেন। তাকে বেশিক্ষণ আটকে রাখা যায়নি। তিনি তদবির করে উপর থেকে ফোন করে সেখান থেকে ছাড়া পান। পল্লী বিদ্যুতের চাকুরী করা মোসলেম উদ্দিন স্ত্রী ও সন্তানসহ শ্বশুর বাড়িতে দাওয়াত খেয়ে ফেরার সময় মোটর সাইকেলসহ আটকা পরেন। আধা ঘন্টায় প্রায় অর্ধ শতাধিক মোটর সাইকেল আটক করা হলেও। তদবিরের চাপে অনেকেই সেখান থেকে ছাড়া পান।
সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের চর সিতাইঝাড় থেকে ধরলা নদী পেরিয়ে ত্রিমোহনীতে মোবাইল টিমে আটকে পরলেন দিনমজুর মফিজ, তার স্ত্রী ও ছোট সন্তান। তিনি জানেন না লকডাউন চলছে। লালমনিরহাট জেলার তিস্তায় মেয়ে জামাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তারা।
সদর উপজেলার হলোখানা বাজার থেকে টগরাইহাটে যাচ্ছিলেন এক এনজিও কর্মী। তাকে আটক করা হলে তিনি জানান, দশজন উপকারভোগীকে ছাগল দেয়া হয়েছিল। ঈদে সেগুলো বিক্রি হয়েছে কিনা দেখতে যাচ্ছেন। এমন হাজারো কাজে বা অকাজে বের হয়েছেন মানুষ। করোনার ভয়াবহতা তাদেরকে ছুঁতে পারেনি।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, করোনা আক্রমনের সংক্রমণ হার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৬৯৩জনের নমুনায় আক্রান্ত হয়েছে ১২৮জন। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। এখন পর্যন্ত জেলায় ৪০জনের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে ও মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন। ছোট যানবাহনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী এবং মাস্ক বিহিন চলাচলের কারণে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ এখন পর্যন্ত ১০৮টি মামলা ও বিভিন্ন কারণে ৪৯ হাজার ৭৫০ টাকা অর্থদন্ড করেছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রশাসন থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লকডাউন

১১ আগস্ট, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ