বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সারাদেশের ন্যায় কঠোর লকডাউন শিথিল সিলেটে। কিন্তু গতিশীল হয়ে উঠছে করোনা সিলেটে। করোনা পরিস্থিতি দিনে দিনে ব্যাপকতা ছড়াচ্ছে। লকডাউন শিথিল কার্যকরের প্রথমদিনে আগের সব রেকর্ড ভেঙে অবনত হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছেন ২২ জন সিলেটে। মৃত্যুর এ হিসেবে নতুন ধাক্কা দিয়েছে জনজীবনে। আতংকও কম নয়। কিন্তু এখন লকডাউন নেই, পুরানো পরিবেশে ব্যস্ত হয়ে উঠছে সিলেট। শিথিলের প্রথম দিন নগরীসহ সকল স্থানে রাস্তাঘাটে মানুষের উপচেপড়া ভীড়। আজ বুধবার (১১ আগস্ট) সকাল থেকেই নগরীতে লেগে আছে যানজট। এতে করে লকডাউন পরবর্তী সময়ে সিলেটে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় আছেন স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মকর্তারাও। সিলেটে লকাডাউনকালেও মৃত্যু না কমার বিষয়ে স্বাস্থ্যবিভাগ সংশ্লিষ্টরা বলছেন- হাসপাতালে বেড ও অক্সিজেন সংকট থাকা, মানুষজন ইচ্ছে করেই অনেক সময় হাসপাতালের শরণাপন্ন না হওয়া এবং সর্বোপরি অসেচতনতাই মৃত্যু বাড়ার কারণ। প্রায় দুই মাস ধরে সিলেটে আইসিইউ বেড সংকট। করোনা রোগীদের ভর্তির জন্য হাসপাতালে সাধারণ বেডও পাওয়া যাচ্ছে না। ১ জুলাই থেকে যখন লকডাউন শুরু হয়, তখন সিলেটকে গ্রাস করতে শুরু করেছিলো করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। ওই সময় করোনা সংক্রমণের হার ছিল ২০ থেকে ২২ শতাংশের মধ্যে। মৃত্যুর হারও ছিল কম। সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী ছিলেন- লকডাউনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। কুরবানির হাট ছাড়া অন্য সময়ে সিলেটের মানুষ লকডাউন পালন করেছেন। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হননি। দোকানপাট ও গণপরিবহন চলেনি। লকডাউনের শেষ পর্যায়ে এসে এখন সিলেটে সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশ। জুলাই মাসে ওই হার গিয়ে পৌঁছেছিলো ৫০ শতাংশের উপরে। একদিনে প্রায় ১ হাজার রোগী শনাক্তের রেকর্ডও হয়েছে। বর্তমানে সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। তবে- এটি নিয়ে আশাবাদী হতে পারছেন না সিলেটবাসী। জুলাই মাসটি ভয়ঙ্কর ছিল সিলেটবাসীর জন্য। ওই এক মাসে সিলেটে শনাক্ত হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার রোগী। দুই শ’ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আগস্টের ১০ দিনেও একই হারে রোগী সংক্রমণ বেড়েছে ও মৃত্যু ঘটছে। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে এক শ’ জনের বেশি। শনাক্ত হয়েছেন সাড়ে ৩ হাজারের অধিক রোগী। সিলেটে সংক্রমণ আশানুরুপ না কমা ও মৃত্যু বাড়ার বিষয়ে সিলেট ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত শংকর বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়নি এটা ঠিক বলা যাবে না। সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখি নয়, নিম্নমুখি। তবে মৃত্যু বেড়েছে এটি ঠিক। তিনি বলেন, হাসপাতালে বেড ও অক্সিজেন সংকট থাকা, মানুষজন ইচ্ছে করেই অনেক সময় হাসপাতালের শরণাপন্ন না হওয়া এবং সর্বোপরি অসেচতনতাই মৃত্যু বাড়ার কারণ। উল্লেখ্য, আগের সকল রেকর্ড গুড়িয়ে সিলেটে মহামারি করোনাভাইরাসে গত চব্বিশ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো ৫৫৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার (১১ আগস্ট) সকালে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানিয়েছেন এ তথ্য। একই সময়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিলো ১৯১৭ টি। সে হিসেবে শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। এদিকে নতুন শনাক্তদের মধ্যে সিলেট ২৭৬ জন, সুনামগঞ্জে ৬৩, হবিগঞ্জে ৬১ ও ১১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয় মৌলভীবাজারে। এছাড়াও সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে সিলেট বিভাগে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ৪৭ শত ১১ জন। যার সর্বোচ্চ সিলেট ২৫ হাজার ২ শত ১১ জন, সুনামগঞ্জে ৫ হাজার ৪ শত ৭৫ জন, হবিগঞ্জে ৫ হাজার ৬ শত ৮৪ জন, ৬ হাজার ৭ শত ৩০ জন মৌলভীবাজারে। আর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ৩ হাজার ৯ শত ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে সিলেটে মোট প্রাণহানি হয়েছে ৮৪৪ জনের। এর সর্বোচ্চ সিলেট ৬২০ জন, সুনামগঞ্জে ৫৯ জন, হবিগঞ্জে ৪২ জন, মৌলভীবাজারে ৬৬ জন এবং ৫৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে করোনায় চিকিৎসাধীন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অপরদিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭১৫ জন সিলেট বিভাগে। আর নতুন করে আরও ৮২ জন ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।