পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোরবানি পশু চামড়ার দামে এবারও ধস কাটেনি সিলেটে। ২০১৯ সালে সিলেটসহ দেশে চামড়ার দামে যেভাবে ধস নেমেছিল, এবারও একই অবস্থা। বেশি দামে বিক্রির আশায় যারা শহর, নগর, গ্রাম-গঞ্জ থেকে চামড়া সংগ্রহ করেছিলে তারা এখন পড়েছেন বিপাকে। চামড়ার দাম এবারও সিলেটে খুবই কম। কোরবানির পশুর চামড়ার নায্য দাম না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেক খুচরা ক্রেতা। বাজারে এসে দাম না পেয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করে নদীতে ফেলে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছেন না তারা। গ্রাম থেকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দিয়ে যে চামড়া কিনে আনছেন, সেই চামড়া ২০০ টাকায়ও বিক্রি করতে পারছেন না বিক্রেতারা। বিক্রেতাদের অভিযোগ চামড়ায় কাটাছেঁড়া আছেÑ এমন অজুহাতে দাম কমিয়ে দিচ্ছেন পাইকাররা। এ নিয়ে পাইকারদের সঙ্গে খুচরা বিক্রেতাদের বাগবিতণ্ডাও হয়। এমন অবস্থায় এগিয়ে আসে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। সিসিক চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ নেন। প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে যে কেউ চামড়া নিয়ে গেলে বিনা পয়সায় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে দিচ্ছে সিসিক। পাশাপাশি যদি কেউ চামড়া বিক্রি করতে চান সেটিও ক্রয় করছে সিসিক।
অন্যদিকে সিলেটে চামড়া ১০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চামড়া ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, গ্রাম থেকে সরকারের বেঁধে দেয়া দাম থেকে বেশি দামে কিনে আনায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে শাহজালাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আহমদ বলেন, এবার চামড়ার অবস্থা বিবেচনায় ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায় ক্রয় করা হয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন, সেখানে তারা অতিরিক্ত দামে ক্রয় করে আনলে আমাদের কিছু করার নেই। এবার সিলেটে কোরবানির চামড়ার ৯০ শতাংশ যদিও বিক্রি হয়েছে। চামড়ার নিয়মিত ব্যবসায়ী এবং মৌসুমী ও বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ী মিলে এসব চামড়া ক্রয় করেছেন বলে শাহজালাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শামিম আহমদ জানান। সাড়ে চার লক্ষাধিক পশুর মধ্যে প্রায় দুই লক্ষাধিক পশুর চামড়া সরাসরি ক্রয় করেছেন ব্যবসায়ীরা। সেই সাথে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী ও বাইর থেকে আসা ব্যবসায়ী মিলে প্রায় ৯০ শতাংশের ওপর ক্রয় করেছেন পশুর চামড়া। বিক্রেতারা গত বছর বা এর আগের বছরের তুলনায় দামও ভালো পেয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে ঈদের আগে দামের দরপতন, ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া, লকডাউনের কারণে পরিবহন সংকটের সম্ভাবনাসহ নানা কারণে চামড়া সংগ্রহ নিয়ে ব্যবসায়ীরা ছিলেন টানাপড়নে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চামড়া ক্রয়ে বিনিয়োগ করেন ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শহরাঞ্চলে গরুর চামড়া আকার এবং মানের ওপর ভিত্তি করে সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। তবে চামড়া কিনলেও লাভ নিয়ে এখনো অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে কিছু ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
তবে এবার চামড়ায় কোনো সিন্ডিকেট যাতে না হয় বা ব্যবসায়ীদের লোকসান না হয়, সেদিকে কঠোর নজরদারি রয়েছে জানিয়ে সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ (অতিরিক্ত দায়িত্বে সিলেট বিভাগ) কর্মকর্তা রুস্তম আলী বলেন, প্রশাসন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি রয়েছে। তাই লোকসানের ঝুঁকি নেই। অপরদিকে, সিলেট বিভাগের চার জেলায় প্রায় সাড়ে চার লক্ষাধিক পশু কোরবানি হয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেটের প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র।
এদিকে, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। চামড়া প্রক্রিয়াজাতের জন্য নগরের দক্ষিণ সুরমার পারাইচকে সামিয়ানা টাঙিয়ে খোলা হয়েছে অস্থায়ী প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র। এই অস্থায়ী প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে যে কেউ চামড়া নিয়ে গেলে বিনা পয়সায় চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে দিচ্ছে সিসিক। পাশাপাশি যদি কেউ চামড়া বিক্রি করতে চান সেটিও ক্রয় করছে সিসিক। এখানে এগুলো প্রক্রিয়াজাতের শেষে ঢাকায় পাঠানোর কথা জানায় সিসিক।
সিসিকের গণসংযোগ কর্মকর্তা আবদুল আলিম শাহ্ জানান, চামড়া সংরক্ষণ, বিক্রয়-বিপণন সুবিধা নিশ্চিত এবং নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে নেয়া হয়েছে এ উদ্যোগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।