বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মাদকসহ ধরা পড়ার ভয়ে এএসআই লিটনকে চাপা দেয় প্রাইভেটকার চালক তাওহিদুল। ঘটনায় সময় গাড়িতে ইয়াবা, বিয়ার ও বিদেশি মদ ছিল। গত ৪ জুলাই রাতে গুলশান শুটিং ক্লাবের বিপরীত পাশে অবস্থিত পুলিশ চেকপোস্টের দায়িত্বরত ছিলেন এএসআই লিটন মিয়া। এ সময় তাওহিদুলের গাড়ি থামানোর চেষ্টা করলে লিটন মিয়াকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। তাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তির পাশাপাশি ভিডিওতে লিটনকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার নির্মম চিত্র ধরা পড়েছে। পুলিশ সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চেকপোস্টের ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও দেখা যায়, গত ৪ জুলাই রাতে গুলশান শুটিং ক্লাবের বিপরীত পাশে অবস্থিত পুলিশ চেকপোস্টের দায়িত্বরত ছিলেন এএসআই লিটন মিয়া। রাত ১টা ৪৯ মিনিটে একটি কালো রঙের প্রাইভেটকার দ্রæতগতিতে চেকপোস্টের দিকে এগোতে থাকে। দ্রæতগতিতে প্রাইভেটকারটিকে আসতে দেখে এএসআই লিটন মিয়া চেকপোস্টের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় তিনি গাড়িটিকে থামার সংকেত দেন। কিন্তু চালক তাওহিদুল সংকেত অমান্য করে লিটন মিয়ার ওপরে গাড়িটি উঠিয়ে দেন। এতে লিটন মিয়া গাড়িটির বোনেটের ওপর পরে গিয়ে আটকে যান। এ সময় চেকপোস্টে অবস্থানরত অন্য পুলিশ সদস্যরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেও গাড়িকে তারা ধরতে পারেনি। গাড়িটি দ্রæত গতিতে গুলশান চেকপোস্ট থেকে তেজগাঁও এলাকার দিকে চলে যায়।
ওই রাতের আরেকটি সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, ডিএমপির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সামনে গাড়িটিকে স্থানীয় জনতা ঘিরে রাখে। তখনও গাড়িটির বোনেটের ওপর পরে ছিল এএসআই লিটন।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, মামলার প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ঘটনার সময় প্রাইভেটকারটিতে তাওহিদুল মাদক বহন করছিলেন। ওই সময় গাড়িতে ৬০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩০ ক্যান বিয়ার ও ৪ বোতল বিদেশি মদ ছিল। মাদকসহ চেকপোস্টে ধরা পরার ভয়ে পুলিশের সংকেত অমান্য করে এএসআই লিটনকে গাড়িচাপা দিয়ে পালিয়ে যান চালক।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই আতিকুর রহমান বলেন, ঘটনার পরের দিন গুলশান থানা এলাকায় আমরা একটি মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছিলাম। অভিযানে ৬০ পিস ইয়াবা, ৪৮ ক্যান বিয়ার ও ৪ বোতল বিদেশি মদসহ তাওহিদুল ও প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়। পরে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখি এই গাড়িটির নাম্বার ৪ তারিখের ঘটনার সঙ্গে জড়িত গাড়ির নাম্বারের সঙ্গে মিলে গেছে।
তিনি বলেন, তাওহিদুলকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, ওই রাতে গাড়িতে মাদকসহ গুলশান চেকপোস্টে পাড় হতে চেয়েছিলেন তাওহিদুল। কিন্তু চেকপোস্টে এএসআই লিটন মিয়ার সংকেত দেখে তিনি ভয় পেয়ে যান।
তাই পুলিশের কাছে মাদকসহ হাতেনাতে ধরা পড়া এড়াতে লিটন মিয়াকে গাড়িচাপা দিয়ে পালিয়ে যান। তবে বোনেটের ওপরে লিটন মিয়া আটকে যাওয়ায় তাকে এভাবেই টেনে-হিঁচড়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সামনে নিয়ে যান। পরে সুবিধা মতো ওইখানে এএসআই লিটনকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। বোনেটের ওপর লিটনকে নিয়েই গাড়ি চালিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে যায় ওই চালক। পরের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এএসআই লিটনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।
উল্লেখ, পুলিশের সহায়তায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেন এএসআই লিটন মিয়াকে। সেখানে সাতদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে গত রোববার ১১ জুলাই দুপুরে মারা যান লিটন মিয়া। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।