Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রশ্নের মুখে ভারতের তালেবান নীতি!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২১, ৮:৫২ পিএম

আফগানিস্তানে তালেবান তাণ্ডবের পটভূমিতে প্রশ্ন উঠলো ভারতের কাবুল-নীতি নিয়ে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, সে দেশে শান্তি ফেরানোর জন্য ‘সমস্ত পক্ষের’ সঙ্গে আলোচনা করছে ভারত। ক্রমশ স্পষ্ট হয়, নিজেদের নীতি বদলে তালেবানের সঙ্গেও আলোচনার দরজা খুলেছে সাউথ ব্লক। আপাতত সূত্রের খবর, সেই দরজা ভালো করে খোলার আগেই বার বার ধাক্কায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। -আনন্দবাজার

গত সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাশিয়া সফরে গিয়ে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা করেন। তাতে স্পষ্ট, তালেবানের সঙ্গে আলোচনার আগের অবস্থান থেকে পিছু হঠছে নয়াদিল্লি। পরপর ইরান এবং মস্কো গিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই দুটি দেশেই তাঁর সফরের ঠিক আগের দিন তালিবান প্রতিনিধি দলকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল ইরান এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জয়শঙ্করকে জানান, তালেবানের কাছ থেকে তাঁরা প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন যে আফগানিস্তানের বাইরে তাদের বুটের ছাপ পড়বে না। অর্থাৎ রাশিয়া অথবা মধ্য এশিয়ার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে না তালিবান। সূত্রের খবর, লাভরভ জয়শঙ্করকে এ-ও জানান, তালেবান আফগানিস্তানের বাইরে সন্ত্রাস না ছড়ালে রাশিয়াও নাক গলাবে না।

মস্কোর এ হেন অবস্থানের বিরোধিতা করে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, তালিবান যদি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে না গিয়ে হিংসার মাধ্যমে আফগানিস্তানের দখল নেয়, তা হলে তাকে বৈধতা দেওয়া চলে না। রাশিয়ার তা ভাবা উচিত। কূটনৈতিক শিবিরের প্রশ্ন, আজ হঠাৎ কেন ‘বৈধতার’ প্রশ্ন তুলতে হচ্ছে জয়শঙ্করদের? কারণ, এই তালিবানের সঙ্গেই তো দোহা এবং অন্যান্য জায়গায় নিঃশব্দে অনেক দিন ধরেই যোগাযোগ তৈরি করেছেন ভারতীয় নেতৃত্ব। দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার সামগ্রিক নিরাপত্তা, পাকিস্তানের মদতেপুষ্ট তালিবানকে নিয়ে ভারতের আশঙ্কার কথাও তাদের জানানো হয়েছে বিভিন্ন ভাবে। তা হলে আজ তালিবানকে নিয়ে রাশিয়ার (এবং ইরান) মতো নিশ্চিন্ত কেন নয় ভারত? আজ হঠাৎ তাদের ‘রাজনৈতিক বৈধতা’ নিয়ে চিন্তিতই বা কেন? পাশাপাশি আফগানিস্তানে হিংসা হঠাৎ যে বেড়ে যাবে, তার কি কোনও আগাম আন্দাজ তালেবানের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায়নি? শেষ মুহুর্তে বায়ুসেনার বিমান পাঠিয়ে আপৎকালীন ভিত্তিতে ভারতীয় কূটনীতিকদের কার্যত মৃত্যুমুখ থেকে ফেরাতে হচ্ছে কেন? এত আলোচনার পর এ টুকু আশ্বাস কি পাওয়া যায়নি যে ভারতীয় দূতাবাসগুলো নিরাপদ থাকবে অথবা আগাম সতর্কবার্তা পাওয়া যাবে, যাতে যথেষ্ট আগেই ভারত কর্মীদের ফিরিয়ে আনাতে পারে?

বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকা, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর, পাকিস্তানের মদদে গড়ে ওঠা জঙ্গি সংগঠন যাতে ওই অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে না পারে সে জন্যই নয়াদিল্লি সংযোগ তৈরি করছিল তালেবানের সঙ্গে। এখন প্রশ্ন উঠছে, পাকিস্তানের ‘ইন্ধনেই’ কি ভারতের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিল তারা? প্রশ্নগুলো ভারতের আফগানিস্তান সংক্রান্ত নীতিকে ঘোলাটে করে দিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।



 

Show all comments
  • dilawar jamali jamali ১৩ জুলাই, ২০২১, ৯:২৫ পিএম says : 0
    তালেবান বেক্কল না যে, নিজের পায়েই কুড়াল মারবে। এরা হলো এ জগতের সেরা উপহার তথা নীতিবান
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ১৩ জুলাই, ২০২১, ১০:০৩ পিএম says : 0
    ভারতের কি দরকার আছে এই বেপারে মাথা ঘামানোর,তালেবানেরা বুদ্ধি জীবি তাদের শিক্ষা দেওয়ার পয়োজন নেই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ