Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

বর্তমানের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দরকার পরিকল্পিত ও সঠিক রূপরেখা

অজয় কান্তি মন্ডল | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

বিশেষজ্ঞরা যেমনটি ধারণা করেছিল বর্তমানে করোনার ভয়াবহতা ঠিক সেদিকেই মোড় নিচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক জায়গায় চিকিৎসকসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদির সংকট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার অনেক চিকিৎসককে ইতোমধ্যে মেডিকেল কলেজ থেকে হাসপাতালগুলোতে বদলী করেছে। পরিস্থিতি যেদিকে এগুচ্ছে তাতে করে অনেকটা পরিষ্কার যে, করোনার বর্তমান এই ঢেউ রুখতে সকলকে অনেক হিমিশিম খেতে হবে। সমসাময়িক বৈশ্বিক এই মহামারীর মধ্যে সকলের জীবন এখন বেশ হুমকির মুখে। দিনকে দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়া মৃত্যুর হার, আক্রান্তের হার, শনাক্তের হারের যে ঊর্ধ্বমুখী গতি সেটি আদৌ কবে নিন্মমুখী হবে তার পরিস্কার ধারণা পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। আপদকালীন এই সময় সকলকে ধৈর্যের সাথে যথাযথ নিয়ম কানুন পালনের মাধ্যমে মোকাবেলা করা ছাড়া সামনে বিকল্প কোন পথ আপাতত খোলা নেই।

বিশেষজ্ঞদের অনেকের ধারণা, গেল দিনগুলোতে অপরিকল্পিত লকডাউন করোনা বিস্তারে বেশি ভূমিকা রেখেছে। কেননা, প্রতিবার লকডাউনের নামে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করার সময়ে প্রশাসনে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করা হয়। আর সাথে সাথে শহরাঞ্চল বসবাসকারী অধিকাংশ জনগণ যে যেভাবে পারে গ্রামের পথে পা বাড়ায়। বিগত প্রতিটি লকডাউনের বাস্তব চিত্র ছিল এটি। ১০-১২ দিন আগে থেকে ব্যাপক তৎপরতা নিয়ে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা সবসময় মানুষের ভোগান্তি বৃদ্ধি ও করোনার বিস্তারে সহায়ক হয়ে এসেছে। এই ধরনের লকডাউন কোনভাবেই সুফল বয়ে আনছে না বা আনবে না। বিগত দিনগুলোর লকডাউনকরোনার বিস্তার গ্রামে ছড়িয়ে সেখান থেকে শহরে নিয়ে আবারো গ্রামে যাতায়াতের ফল এখন অনেকটা সুস্পষ্ট।

দেশের বিভিন্ন জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের ৫০ শতাংশের বেশি গ্রামের বাসিন্দা। এসব রোগীর রোগের তীব্রতা অনেক বেশি হওয়ার পরেই তারা হাসপাতালে আসছে চিকিৎসা নিতে। বাড়িতে নিজেরা ঘরোয়া উপায়ে বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট নিয়ে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে যখন পরিস্থিতি অতি খারাপের দিকে যখন যাচ্ছে তখন অনেকটা নিরুপায় হয়ে হাসপাতালের দিকে পা বাড়াচ্ছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে ওইসব রোগীর সংস্পর্শে থাকা পরিবার পরিজন সহ সকলেই আক্রান্ত হচ্ছে। সেইসাথে একই পরিবারের সকল সদস্য এবং নিকট আত্মীয়র ভিতর করোনার উপসর্গ মিলছে। এ ধরনের চিত্র এখন গ্রামের প্রতি বাড়ি বাড়ি দেখা যাচ্ছে।

প্রশাসন বিশালভাবে ঢাক ঢোল বাজিয়ে গেল পহেলা জুলাই থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ নামে জনগণের চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা শুরু করেছে। নিষেধাজ্ঞা আবারো পরবর্তী এক সপ্তাহের জন্য বর্ধিত হয়েছে। কিন্তু বরাবরের মতো এবারো ৫-৬ দিন আগে থেকেই জনগণের গ্রামে ফেরার পদ্ধতি বের করেই তবে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা দেখেছি জুন মাসের শেষের দিকে রাজধানী থেকে বের হওয়ার সড়ক মহাসড়কগুলো, নদী পারাপারের ফেরি সহ সর্বত্রই গৃহমুখী মানুষের ঢল। যে ঢল আটকানোর জন্য প্রশাসনের কোন রূপরেখা ছিলনা। ফলে মানুষ যে যেভাবে পেরেছে পায়ে হেঁটে, স্বাস্থ্যবিধির কোনরকম তোয়াক্কা না করে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটেছে বাড়ির পানে। কঠোর লকডাউন ঘোষণার ৪-৫ দিন আগে থেকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুলো সরকারের গৃহীত সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো বেশ ফলাও করে প্রচার করেছিল। তাতে জনমনে একরকম ভীতি সৃষ্টি হয়েছিল। তারই প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গণ পরিবহন বন্ধ থাকা সত্তে¡ও শত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে মুষ্টিমেয় মানুষ বেছে নিয়েছিল বাড়ির পানে ছোটার পথ। কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ার প্রথম ৩-৪ দিন উক্ত ভীতিকর অবস্থা অনেকের ভিতর বহাল ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আবারো আগের মতো হয়ে গেছে। প্রথম পর্যায়ের ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউনের শেষ হওয়ার দিকে দেখা গেছে সবাই যার যার ব্যক্তিগত গাড়ী নিয়ে পথে বের হয়ে পড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট ও লক্ষ্য করা গেছে।

প্রশাসন কঠোর নিয়ম নীতি সামনে রেখে গেল লকডাউনগুলোর মতো এবারেও প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। অনেকেই ধারণা করেছিল, হয়ত এবারে নিয়মনীতির যথাযথ প্রয়োগ হবে। কিন্তু ফল হয়েছে সেই ‘বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো’র মতই। প্রথম প্রথম আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ করা গেলেও কেন জানি না দিন সবাই যেন অনেকটা ক্লান্ত হয়ে গেছে। তা না হলে এত মানুষ রাস্তায় বের হওয়ার সুযোগ কীভাবে পেল? আইন যদি সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হয় তাহলে শুধুমাত্র নিরীহ মানুষের উপর প্রয়োগ না করে সবার উপর প্রয়োগ করা উচিত। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন গাড়ি ব্যবহৃত ব্যক্তিদের খোশ মেজাজে ঘুরতে দিয়ে শুধুমাত্র রিক্সা আরোহী বা পায়ে হাঁটা ব্যক্তিদের উপর আইন প্রয়োগ করা উচিত না। কঠোর হতে হলে সবদিক দিয়ে কঠোর হতে হবে। আর না পারলে সবাইকে যার যার মতো চলতে দিতে হবে। কেননা, এগুলোতে গরীব দুঃখী, দিনমজুরসহ মধ্যবিত্তদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মাসের পর মাস ঢিলেমি করে শুধুমাত্র কাগজ কলমে আইন প্রয়োগ করে এহেন ভোগান্তি বাড়ানোর দরকার নেই।

বর্তমানে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে করোনার ‘ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট’ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ডেলটা ভ্যারিয়েন্টে নাজেহাল করে দিয়েছে পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়াসহ আরও অনেক দেশ। ভারত এবং নেপাল পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়ায় চলছে এই ভ্যারিয়েন্টের তান্ডব। চিকিৎসা সরঞ্জামাদির অপ্রতুলতাসহ সেখানে দেখা দিয়েছে চরম অক্সিজেন সংকট। সেদেশের বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, দেশটিতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ, গেল ঈদে লাখো মানুষ দেশটির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে স্বজনদের সঙ্গে উৎসব উদযাপনে যোগ দেওয়া। ঠিক একই ঘটনার পুনরাবৃতি আমাদের দেশেও শুরু হতে বাকি নেই। গেল ঈদুল ফিতরে মানুষের অবাধে চলাচলের ফলাফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর,বি) জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের বিভাগ জানিয়েছে, দেশে গত জুন মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৭৮ শতাংশের দেহে ভারতে শনাক্ত হওয়া ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। গেল মে মাসে সনাক্ত হওয়া এই ভ্যারিয়েন্টের শতকরা পরিমাণ ৪৫ শতাংশ হলেও অল্প কিছুদিনের ভিতর এটি ব্যপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে। আইইডিসিআর,বি আরও বলেছে দেশে এখন করোনার ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের সুস্পষ্ট প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে।

এসব তথ্য এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে আমাদের দেশেও ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের তান্ডব শুরু হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অনেকটা দুস্কর হয়ে পড়েছে। জনসংখ্যার তুলনায় সীমিত সংখ্যক চিকিৎসক, চিকিৎসাকেন্দ্র ও চিকিৎসা সামগ্রীর অপ্রতুলতা এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য একেবারেই সহায়ক নয়। প্রশাসনের ঢিলেমি পদক্ষেপ এবং জনগণের অসচেতনতা এই পরিস্থিতি তৈরির প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রশাসন বারবার এধরনের ইঙ্গিত পেলেও পূর্ব থেকে তেমন কোন কঠোরতা দেখায়নি। সেইসাথে এখনো অনেক ভুল সিদ্ধান্ত বহাল তবিয়াতে অহরহ সর্বত্র চলছে। যেগুলোর খেশারত দিতে হচ্ছে বা অদূর ভবিষ্যতে দিতে হবে।
অপরিকল্পিত বিধিনিষেধ প্রয়োগে জনগণের ভোগান্তি বাড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। সঠিক কঠোরতা প্রয়োগ করতে পারলে করোনার বিস্তার রোধ করা যেত কিন্তু সেটি এখন আর সম্ভব নয়। কেননা ইতোমধ্যে এই ভাইরাসের বিস্তৃতি গ্রামের অলগলি পৌঁছেছে। এখন আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলেশন, সঠিক চিকিৎসা, আক্রান্তদের পরিবারের অন্যান্যদের র‌্যাপিড টেস্টের আওতায় নিয়ে এসে করোনার বিস্তার রোধ করতে হবে। সেইসাথে সকলকে যত দ্রুত পারা যায় টিকাদানের আওতায় আনতে হবে। টিকা প্রত্যাশীদের বয়স সীমা কমিয়ে এনে যাতে করে বেশি সংখ্যক জনগণকে টিকাদানের আওতায় আনা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। যদিও আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কাজগুলো বেশ কঠিন। তারপরেও এগুলো ছাড়া আপাতত কোন কার্যকর পদক্ষেপ সামনে নেই।

বিগত সময়ে প্রশাসনের অনেক অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তে মানুষ প্রতিদিন কাজ হারাচ্ছে, মধ্যবিত্তদেরও ব্যবসা-বাণিজ্য এবং আয় সংকুচিত হচ্ছে। দিনমজুর ও নিন্ম আয়ের মানুষ হয়ে পড়েছে দিশেহারা। এই পরিস্থিতিতে এই ধরনের মানুষের হাতে খাদ্য ও অর্থ সহায়তা পৌঁছে দিতে না পারলে সবকিছু এলোমেলো হয়ে পড়বে। সরকারের গৃহীত যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সবাই পেটের দায়ে পথে বের হয়ে পড়বে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সকল নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য ও অর্থ সহায়তার সুষম বণ্টন করতে হবে। প্রয়োজনে সরকারের কোন বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য বাহিনীকে উক্ত বিষয়ে তদারকি করার দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।

বর্তমানে অনেক দেশে সকল বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরে আসছে। সেখানে আমরা নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করে করোনা নিয়ন্ত্রণে যাওয়াটা অনেকটা ব্যর্থতার পরিচয় বহন করে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি সহ বেশ কিছু দেশ এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর ও তেমন কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার প্রয়োজন হচ্ছে না। কিন্তু আমাদের দেশের ঘটনা পুরোপুরি বিপরীত। আমদের উচিত ছিল এসব দেশগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে যথেষ্ট সচেতনতা অবলম্বন করে চলা। তাহলে এধরনের বিপদের মুখোমুখি পড়তে হতো না সেটা নিশ্চিত করে বলা যায়।

বর্তমানে চলমান কঠোর লকডাউন এবং বরাবরের লকডাউন গুলোর ভিতর তেমন কোন পার্থক্য লক্ষ করা যায়নি। বরং মনে হয়েছে এবারেও সমন্বয়হীনতার বেশ অভাব রয়েছে। খোলা রাখা হয়েছে সকল শিল্প কারখানাসহ ও আর্থিক লেনদেনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও বিমার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেশের জনগোষ্ঠীর বড় একটা অংশ কর্মরত। বিপরিতক্রমে, বন্ধ রাখা হয়েছে পরিবহন সেবা। তাহলে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত কর্মজীবীরা কীভাবে তাদের কর্মক্ষেত্রে পৌঁছাবে সেই বিষয়টা মাথায় রাখা জরুরি ছিল। অন্যদিকে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখলে আহামরি কোন সমস্যা হতো কিনা সেটাও ভেবে দেখা উচিত ছিল। এসব ক্ষুদ্র স্বার্থের কথা চিন্তা করে বৃহৎ কোন সিদ্ধান্তের ভিতর ফাটল ধরানোটা কতটা যুক্তিযুক্ত সেটা নীতি নির্ধারকদের গুরুত্বের সাথে ভেবে দেখা উচিত। একইভাবে গেল ঈদে ব্যবসায়ী মহলদের অনুরোধে খোলা রাখা হয়েছিল সকল মার্কেট, যার খেসারত এখনকার প্রতিটি মুহূর্তে দিতে হচ্ছে।

সরকারের রূপরেখা এমন হওয়া বাঞ্ছিনীয় ছিল যে, কঠোর লকডাউন চলাকালীন ১৫ দিন বা ১ মাস সকল কিছু লকডাউনের আওতায় থাকবে। জনগণের সুবিধার্থে ১৫ দিন বা ১ মাসের জন্য দেশের শিল্প কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকলে সেই প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যাবেনা। পক্ষান্তরে, যদি এই পরিস্থিতিতে একটি মানুষও মারা যায় তাহলে তার মূল্য অনেক বেশি। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারেও একই নীতি প্রযোজ্য। প্রয়োজনে সরকার এমন নিয়ম চালু করতে পারত যে, অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম বুথ, বিকাশ, রকেট, নগদ সহ সকল অনলাইন ব্যাংকিং বা আর্থিক লেনদেনের কোম্পানিগুলো ১৫ দিন বা ১ মাস কোন রকম বাড়তি ফিস ছাড়া বাধ্যতামূলক লেনদেন করবে। তাতে করে কোম্পানিগুলোর গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে সকলের বাহবা পেত। ব্যাংকারদের প্রতিদিন যুদ্ধ করে ব্যাংকে যাওয়া লাগত না। যুদ্ধ বলছি এই কারনে পথে পরিবহণ সংকট, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জেরা এবং সর্বোপরি তাদের করোনা আক্রান্তের সমূহ সম্ভবনা।

আমাদের উচিত অন্ততপক্ষে করোনাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলো থেকে শিক্ষা নেওয়া। কীভাবে তারা আপদকালীন সময়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে, জানমালের ক্ষতি এড়াতে কী পদ্ধতি তারা অবলম্বন করেছে, কীভাবে তারা এই পরিস্থিতি থেকে সামলে উঠে স্বাভাবিক হয়েছে। বারবার ঠুনকো, অপরিকল্পিত এবং সমন্বয়হীন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরিস্থিত ভালোর চেয়ে খারাপই বেশি হচ্ছে। এগুলো আমরা বারবার দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। তাই দেশের নীতিনির্ধারকদের সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগুনো উচিত যেগুলোর বাস্তব প্রয়োগ সম্ভব।

লেখক: গবেষক, ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজো, ফুজিয়ান, চীন।
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন