Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ার নন্দীগ্রামেও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে ফাটল

বরাদ্দ বাতিলের হুমকি ইউএনওর

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০২১, ৮:০৩ পিএম

বগুড়ার নন্দীগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে থাকা এখন ঝুঁকির ব্যাপার । সরকারি এই ঘর বরাদ্দ পেলেও দেয়াল ধসে দুর্ঘটনার শঙ্কায় ভূমিহীনরা এখনো ঘরে উঠতে পাচ্ছেনা। কেননা নির্মাণের মেয়াদ ৬ মাস পেরোবার আগেই ঘরের মেঝেতে ফাটল ধরেছে। সিমেন্টের পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে। টিন চঁইুয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। ফলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে ফাটল ধরা ঘরে থাকতে চাচ্ছেননা ভূমিহীনরা।

তবে ফাটল ধরা ঘরগুলো দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে বলে উপজেলা প্রশাসন দাবি করছেন। ঘর বরাদ্দ পেয়ে যেসব ভূমিহীনরা এখনো ঘরে উঠেনি। তাদের এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে নন্দীগ্রাম উপজেলায় গৃহহীনদেরকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশ কিছু ঘর, মেঝে ও পিলার নির্মাণের ছয় মাসের মধ্যেই ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে আশ্রয় নেওয়া সুবিধাভোগী নিম্নবিত্ত মানুষগুলো আছেন আতঙ্কে। ফাটল ধরা ঘরগুলো তড়িঘড়ি করেও মেরামত করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে বর্ষণ গ্রামের পুকুরপাড়ে সদ্য নির্মাণকৃত ঘরগুলো মাটি কেটে ভিত্তি না দিয়েই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকটাই তড়িঘড়ি করে ঘরগুলো নির্মাণ ও মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার না করার কারণেই ঘরের এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ঘরে কেউ এখনো না উঠায়, সেইসব ঘর ফাঁকা পেয়ে রাতে চলে মাদক সেবীদের আড্ডা।

জানা গেছে, মুজিববর্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধীনে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম পর্যায়ে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ১৫৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার ঘর পায়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয় ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। এই টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি রুম, একটি টয়লেট, একটি স্টোর রুম ও বারান্দা। চারদিকে ইটের দেয়াল এবং ওপরে সবুজ রঙের টিনের ছাদ রয়েছে। দুই শতাংশ খাস জমির ওপর এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। ঘর ভূমিহীনদের মাঝে বুঝে দেওয়া হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। প্রথমে ঘরগুলো পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হন ভূমিহীন পরিবারগুলো।

ঘর পাওয়া ভূমিহীনরা জানান, মুজিববর্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধীনে গেছেন ও গোপালপুর পুকুরপাড়ের অনেক ঘরে ছয় মাসের মধ্যেই দেখা দিয়েছে দেয়াল, মেঝে ও বারান্দার পিলারে ফাটল। দাসগ্রাম পুকুরপাড়ে ১৭টি নির্মাণ করা ঘরে কেউ এখনো উঠেননি। সেখানে যাওয়ার মতো কোনো রাস্তা নেই। যার ফলে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ঘরগুলো। এদিকে গোপালপুর পুকুরপাড়ে ঘর বরাদ্দ পায় জালাল মন্ডল। তার ঘর এখনো ফাঁকা রয়েছে। এখনো ঘরে উঠেননি। তবে তার ঘরের বারান্দার পিলার ভেঙে পড়লে তড়িঘড়ি করে মেরামত করা হয়েছে। সরকারের ঘর পাওয়া রিয়াজ উদ্দিন, শাহীনুর, হালিমা বিবি, আশরাফ আলীসহ অনেকে জানান, তাদের বেশ কয়েকটি ঘরে-মেঝে ফাটল ধরেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থা হয়েছে। এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে এসব ফাটল ধরা ঘরে থাকতে ভয় লাগছে। এমন ঘর পেলাম যে, ঘরে থাকা এখন ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবু তাহের বলেন, কোনো ঘরের বারান্দার পিলার ভেঙে পড়েনি। কেউ ঠেলা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। যে ঘরগুলো একটু ফাটল ধরেছে, সেগুলো মেরামত করে দেয়া হচ্ছে।

এপ্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিফা নুসরাত বলেন, আমার সময়ে কাজগুলো করা হয়নি। উপভোগীরা কোন কারন ছাড়া তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ঘরে উঠছে না। তিনি আরো জানান , অনেক ঘর খালি আছে। কিছু কিছু ঘর মেরামত করা হচ্ছে। ঘরে না ওঠার কারনে এবং ঘর গুলো পড়ে থাকতে থাকতে থাকতে কিছুটা নষ্ট হয়েছে। তাই মেরমত হচ্ছে। তাদের এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছে। এরপরেও যদি ঘরে না উঠে, তাহলে ঘর বাতিল করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বগুড়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ