Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টাইব্রেকে স্পেনের স্বপ্ন ভেঙে ফাইনালে ইতালি

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০৭ এএম

ইউরোতে আরও একটি রোমাঞ্চকর ম্যাচ। স্নায়ুক্ষয়ী সব মুহ‚র্তে পেরিয়ে ইতালি-স্পেনের সেমিফাইনালের ফল নির্ধারণ হলো টাইব্রেকে। সেখানেই স্পেনকে হারিয়ে ইউরো ফাইনালে উঠে গেল ইতালি। গতপরশু নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়েও ১-১ গোলে সমতায় ছিল ম্যাচ। টাইব্রেকের ভাগ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ রবার্তো মানচিনির ইতালিই টিকিট কাটল ১১ জুলাইয়ের ফাইনালের।

ওয়েম্বলিতে বল দখল, আক্রমণ ও সুযোগ তৈরি, সব দিকে এগিয়ে থেকেও সেমিফাইনালে ইতালি-বাধা অতিক্রম করতে পারল না স্পেন। স্পেনের দানি অলমো ও আলভারো মোরাতা পেনাল্টি শুটআউটে গোল করতে ব্যর্থ হন। অথচ এই দুজনের সমন্বয়ে পিছিয়ে পড়েও সমতায় ফিরেছিল স্পেন। আর এই জয়ে ২০১২ ইউরোর ফাইনালে হারের প্রতিশোধও নেওয়া হলো ইতালির।
ম্যাচের শুরুতেই চমক দেয় স্পেন। আলভারো মোরাতাসহ সুইজারল্যান্ড ম্যাচের তিনজনকে বাইরে রেখেই একাদশ সাজান লুইস এনরিকে। মোরাতা ছাড়াও বাদ পড়েন পাও তরেস, চোটে ছিলেন না পাবলো সারাবিয়া। এই তিনজনের জায়গায় একাদশে আসেন দানি অলমো, এরিক গার্সিয়া ও মিকেল অয়ারজাভাল। এ পরিবর্তনেই ইতালিকে আক্রমণের বার্তা দিয়ে রাখেন এনরিকে। অন্যদিকে ইতালি দলে বাধ্যতামূলক একটি পরিবর্তন। অনুমেয়ভাবেই চোটে পড়া লিওনার্দো স্পিনাৎসোলার জায়গায় আসেন এমারসন পালমিয়েরি।
ম্যাচের প্রথম কয়েক মিনিট সমান-সমান ছিল দুই দল। দ্রুতই অবশ্য ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় স্পেন। স্বভাবসুলভ বল দখলে রেখে আক্রমণে যাওয়ার পরিকল্পনা করে তারা। স্পেনের পাসিং ফুটবলে কিছুটা ব্যাকফুটেই চলে যায় ইতালি। ১২ মিনিটে অয়ারজাভাল বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারলে বিপদ হতে পারত আজ্জুরিদের। একটু পর ফ্রি-কিক থেকে সুযোগ এসেছিল ইতালির সামনে। তবে তা কাজে লাগেনি। আক্রমণে পিছিয়ে থাকলেও ২১ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে ঠিকই কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল মানচিনির দল। যদিও শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি। ২৫ মিনিটে দানি অলমোকে গোল বঞ্চিত করেন ইতালিয়ান গোলরক্ষক ডোনারুম্মা।
ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিট ইতালির জন্য এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কঠিন ২৫ মিনিট ছিল। স্পেনের ওয়ান টাচ, পাসিং ও আক্রমণের সামনে একরকম কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ইতালি। স্পেন আক্রমণে অনেক এগিয়ে থাকলেও আগের ম্যাচগুলোর মতো ফিনিংয়ে ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে গিয়ে বলার মতো একটি সুযোগ তৈরি করেছিল ইতালি, যদিও তা কাজে লাগেনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও আক্রমণে এগিয়ে ছিল স্পেন। স্প্যানিশ আক্রমণগুলোর বিপক্ষে ইতালির রক্ষণ ছিল দারুণ সফল। এর মাঝে বুসকেটসের শট বার ওপর দিয়ে যায়। পালটা আক্রমণে স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমনের পরীক্ষা নেন ফেদেরিকো কিয়েসা। দ্বিতীয়ার্ধ অবশ্য প্রথমার্ধের মতো এক তরফা ছিল না। পালটা আক্রমণে ইতালিও চেষ্টা করছিল এগিয়ে যাওয়ার। তেমনই এক সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচের ৬০ মিনিটে এগিয়ে যায় ইতালি। স্পেনের তিন ডিফেন্ডারকে সামনে দাঁড়িয়ে রেখে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন কিয়েসা।
এরপর কাছাকাছি গিয়েও সমতা ফেরাতে ব্যর্থ হয় স্পেন। এ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ স্পেনের দখলে থাকলেও প্রতি আক্রমণে ইতালি ভয়ংকর হয়ে উঠছিল। ৮০ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা মোরাতা সমতা ফিরিয়ে স্পেনকে আবার লড়াইয়ে নিয়ে আসে। সমতায় ফিরে ইতালির ওপর আরও আক্রমণাত্মক হয় স্পেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাক্সিক্ষত গোলের দেখা আর মেলেনি।
অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে দুই দলই কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলে। এ সময় দুই দলের খেলাতেই ক্লান্তির ছাপ ছিল স্পষ্ট। তবে জটলা থেকে দুবার সুযোগ এসেছিল স্পেনের, কিন্তু কাজে লাগেনি। অতিরিক্ত সময়েও আর কোনো গোল না হলে ম্যাচ চলে যায় টাইব্রেকারে। আর সেখানেই ইতালির কাছে হার স্পেনের। জয়ের পর নীল সমর্থকেরা যখন জয়োৎসবে মেতেছে, হারের বেদনায় তখন ‘নীল’ হয়েছে লাল সমর্থকেরা!



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ