Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

প্রথম দিনেই রাজধানীতে আটক-গ্রেফতার ৭৫৫

বিভিন্ন অজুহাতে বের হচ্ছেন মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২১, ১২:০৪ এএম

করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে সরকারঘোষিত বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে রাজধানীতে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এসব চেকপোস্টে চলাচলকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারীদের চেকপোস্ট পার হতে দেখাতে হয়েছে উপযুক্ত প্রমাণ। তবে কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে অনেকেই ঘর থেকে বের হয়েছেন নানা অজুহাতে, জরুরি সেবার নামে চলতে দেখা যায় বিভিন্ন যানবাহন। শুধু তাই নয়, মাস্ক ছাড়াই জরুরি সেবা কিংবা কাজের নামে বেরিয়ে জরিমানাও গুনতে হয়েছে কাউকে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্দেশনা অমান্য করে বাইরে বের হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) হাতে আটক ও গ্রেফতার হয়েছেন ৭৫৫ জন। তবে নিয়মভঙ্গকারীদের জরিমানা করার চেয়ে বুঝিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেয়ার প্রবণতাই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। কোথাও কোথাও অকারণে বের হওয়াদের ৩০ মিনিট আটকে রেখে পড়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

রাজধানীর মিরপুর এলাকায় বিধিনিষেধ পালন না করে কঠোর লকডাউন কেমন চলছে তা দেখতে আসা শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর বিভাগ। পাশাপাশি অর্ধশত যানবাহনকে মামলার আওতায় নিয়ে এসেছে তারা। গতকাল সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মিরপুর, গাবতলী, টেকনিক্যাল, শাহ আলী, পল্লবী, মিরপুর, কাফরুলসহ অন্যান্য পুলিশ শতাধিক জনকে আটকসহ অর্ধশতাধিক যানবাহনকে মামলা দেয়। মিরপুরে দুই জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এখনো চলে পুলিশের ভ্রাম্যমাণ অভিযান।

মিরপুর বিভাগের ডিসি আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেন, মিরপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে সকাল থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা। স্থাপন করা হয়েছে একাধিক চেকপোস্ট। এসব চেকপোস্টে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন।

তিনি আরো বলেন, জরুরি প্রয়োজনে যারা সড়কে বেরিয়েছেন তাদেরকে মুখোমুখি হতে হয়েছে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের। এই কঠোর লকডাউনের মধ্যেও যথাযথ কারণ ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়ায় শতাধিক জনকে আটক করা হয়েছে মিরপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে। পাশাপাশি দুইজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে অর্ধশত যানবাহনকে মামলার আওতায় আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, যাত্রাবাড়ী ও কাঁচপুর ব্রিজ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, মাতুয়াইল মেডিকেল, সাইনবোর্ড, চিটাগাংরোডে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এর মধ্যে সাইবোর্ড চেকপোস্টে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিকে সমন্বিতভাবে দায়িত্বপালন করতে দেখা গেছে। ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কে সেনাবাহিনীকেও টহল দিতে দেখা যায়। এ সড়কে গার্মেন্টসকর্মীদের রিকশা ও ভ্যানে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। গার্মেন্টসকর্মী ছাড়া খুব অল্প সংখ্যক মানুষকে সড়কে দেখা যায়। রাজধানীর চেকপোস্টগুলোতে আইডিকার্ড, বিদেশগামীদের পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় প্রমাণ পেশ করতে দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজনের বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিশ্চিত করতে হয়।

ওয়ারি বিভাগের ডিসি শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। গার্মেন্টসকর্মীদের আইডিকার্ড দেখে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। চেকপোস্টগুলোতে বের হওয়া মানুষের জরুরি প্রয়োজনের সত্যতার বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যে বিষয়গুলো প্রজ্ঞাপনে আছে তার কিছু কিছু ব্যত্যয় আমরা দেখি। অনেকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে ভুল করলে সেই ভুলটাকেই জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেন।

মিরপুরে গিয়ে দেখা গেছে, চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও কঠোর লকডাউন অমান্য করে অনেকে রাস্তায় বের হচ্ছেন। নানা অজুহাতে অনেকেই বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় বের হচ্ছেন। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছেন। অনেকে আবার মাস্ক ছাড়াই বাইরে ঘোরাফেরা করছেন।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন আমরা মাঠে রয়েছি। আমরা জনগণকে বোঝাচ্ছি। নিজেদের নিরাপত্তার পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনের নিরাপত্তার জন্য ঘরে থাকতে হবে। রাস্তায় বের হয়েছেন তারা কোনও না কোনও অজুহাতে বের হয়েছেন। যারা মাস্ক পরেননি তাদেরকে আমরা বিনামূল্যে মাস্ক দিয়েছি। যারা অমান্য করে রাস্তায় বের হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা করে জনগণকে সচেতন করা সম্ভব নয়, যদি না জনগণ নিজে থেকে সচেতন হয়।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এডিসি ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, লকডাউনে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ মানাতে রাজধানীজুড়ে দিনভর চেকপোস্ট, ভ্রাম্যমাণ আদালত ও টহল পরিচালনা করা হয়। সারাদিনে বিনা কারণে ঘর থেকে বের হয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন ৪৯৭ জন। এছাড়া বিধিনিষেধ অমান্যের দায়ে আরও ২৫৮ জনকে নিয়মিত মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • Mehwish Wania ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪২ এএম says : 0
    আমরাই একমাত্র কৌতূহল প্রবন জাতি।যারা নিজে সেধে বাঁশ নিতে যাই।লকডাউন এটাও নাকি এদের দেখতে বার হয়।ফেসবুকে মিমিচ দেখতে দেখতে নিজেরাই মিম হয়ে গেছে
    Total Reply(0) Reply
  • Subarna Kundu ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪৩ এএম says : 0
    ঢাকা শহরের গলি গুলোতে, সবধরনের দোকান খোলা, এবং মানুষের ভিড়, পুলিশের সেদিকে ও খেয়াল রাখা উচিত , এবং সব সময় সেখানে থাকা উচিত ,
    Total Reply(0) Reply
  • MD Absar ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪৪ এএম says : 0
    পুরো শহরে বিভিন্ন মোরে কয়েকশ রিকশা, মানুষের ভিড,,,শিল্প কারখানা বন্ধ না হলে লকডাউন সফল কাম্য নয়,,
    Total Reply(0) Reply
  • Tipu Soltan ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪৪ এএম says : 0
    আটক করার জন্য পুলিশকে গার্মেন্টসে পাঠিয়ে দিন অনেক লোক পাবে
    Total Reply(0) Reply
  • Atikur Rahman ২ জুলাই, ২০২১, ১:৪৪ এএম says : 0
    রিক্সাওয়ালা,দিনমজুর ও মুদি দোকানিদের মারা ও জরিমানা করার আগে তাদের পরিবারের খোঁজ নিয়ে দেখেন,তারা কি অবস্থায় আছে,কি খেয়ে আছে
    Total Reply(0) Reply
  • Shanto ২ জুলাই, ২০২১, ১০:৩৪ এএম says : 0
    বিশ্বের বেশিরভাগ সরকার শয়তানের এজেন্টদের মতো আচরণ করছে। তারা মানবাধিকার, মানবাধিকার এবং বাকস্বাধীনতার স্বাধীনতা ধ্বংস করছে। তারা সাধারণ মানুষকে তাদের ক্রীতদাস হিসাবে রূপান্তর করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে অবশ্যই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আটক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ