Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের প্রেসিডেন্টের বেতন ৫ লাখ, কর পৌনে ৩ লাখ ইস্যুতে বিতর্ক তুঙ্গে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২১, ৪:৫৫ পিএম

দেশবাসীকে নিয়মিত কর দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে গিয়ে প্রসঙ্গক্রমে নিজের মাসিক বেতন সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। পাশাপাশি, প্রতি মাসে কত কর দেন, তা ও জানিয়েছেন তিনি।‘ প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি সরকারী ক্ষেত্রে দেশের সর্বোচ্চ বেতনের অধিকারী। আমার মাসিক বেতন ৫ লাখ টাকা। সেই আমাকেও কিন্তু কর দিতে হয় প্রতি মাসে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।কোবিন্দের এই মন্তব্যেই বিতর্ক এখন তুঙ্গে। -আনন্দবাজার

সোমবার তিন দিনের সরকারী সফরে উত্তরপ্রদেশে গিয়েছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট। বিশেষ ট্রেনে করে রাজধানী দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশের কানপুর জেলায় যাওয়ার পথে ঝিনঝক স্টেশনে কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়ায় ট্রেনটি। সেই রেল স্টেশনের পাশেই প্রেসিডেন্টর সম্মানে আয়োজিত এক সভায় বক্তব্য দেন রামনাথ কোবিন্দ। নিজ বক্তব্যে সাধারণ মানুষকে নিয়মিত আয়কর পরিশোধের ব্যাপারে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে ভারতের প্রেসিডেন্ট বলেন, এই কথা সবাই জানে যে সাধারণ মানুষের দেওয়া করের টাকাতেই দেশের উন্নয়ন হয়। আমাকেও কর দিতে হয়। সভায় নিজের অতীত জীবন স্মরণ করে প্রেসিডেন্ট বলেন, উত্তর প্রদেশের একটি সাধারণ গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে জন্মেছিলাম আমি। কোনও দিনও ভাবিনি একজন সাধারণ গ্রামের ছেলে হয়ে দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে আসীন হতে পারব। বলেন, আমি জীবনে যা করতে পেরেছি, যতখানে এগোতে পেরেছি- তার পুরো কৃতিত্ব আমার গ্রামের। এই গ্রামের মানু্ষের ভালবাসা ও আশির্বাদের জোরেই আজ আমি এখানে দাঁড়িয়ে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি।

সমালোচকদের মতে, আইন অনুযায়ী, দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারী রাষ্ট্রপতির বেতন করের আওতায় পড়ে না। তবে প্রেসিডেন্ট বেতন পান কি না, নাকি ভাতা পান, তা নিয়ে কেন্দ্রের তরফে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এ নিয়ে আয়কর আইনেও স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। তাই প্রেসিডেন্ট বেতনের উপর কর দেন কি না, তা নিয়েও দ্বিধা রয়েছে। তবে, প্রেসিডেন্ট’র কর বাঁচানোর অনেক রাস্তাও রয়েছে। ১৯৬১ সালের ভলান্টারি সারেন্ডার অব স্যালারিজ আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট যদি তাঁর বেতন কনসলিডেটেড ফান্ড অব ইন্ডিয়ায় জমা করেন, সে ক্ষেত্রে তা করের আওতায় পড়বে না।

ভারতের প্রেসিডেন্ট যে যে সুবিধাগুলো পান, তা হল, আজীবন বিনামূল্যে স্বাস্থ্য এবং আবাসন পরিষেবা। পদে আসীন থাকাকালীনও রাইসিনা হিলের কোনও খরচই প্রেসিডেন্টকে বহন করতে হয় না। কারণ, কেন্দ্রীয় বাজেটেই প্রেসিডেন্ট ভবনের জন্য আলাদা করে ২০০ কোটির বেশি বরাদ্দ করা হয়, যার মধ্যে প্রেসিডেন্ট, তাঁর কর্মী এবং প্রেসিডেন্ট ভবনে কর্মরত সকলের ভাতাবাবদ ৮০ কোটিও রাখা হয়। এর মধ্যে করোনা সঙ্কটে সরকারি খরচ বাঁচাতে ২০২০ সালে ১২ মাসের জন্য নিজের বেতনের ৩০ শতাংশ বেতন কম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তাই সরকারি কর্মকর্তা বিশেষ করে শিক্ষকদের রোজগার তাঁর চেয়ে বেশি বলে দাবি করায়, প্রেসিডেন্টের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নেটমাধ্যমে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন বহু মানুষ। রাকেশ গুপ্ত নামের এক নেটাগরিক লেখেন, ১৯৫১ সালের প্রেসিডেন্টের বেতন এবং পেনশন আইন অনুযায়ী, ভারতের প্রেসিডেন্টের বেতন করের আওতায় পড়ে না। তাহলে কি প্রেসিডেন্ট ঘুরিয়ে বেতন বাড়ানোর আর্জি জানাচ্ছেন? হচ্ছে টা কী?’ দুশ্যন্ত মহন্ত নামের এক নেটারিক লেখেন, নির্মলা সীতারামনের কাছে যদি জানতে চাই যে প্রেসিডেন্ট কোন করের আওতায় পড়েন, তার জন্য কি আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে রাখতে হবে?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ