Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বান্দরবানে নওমুসলিম ইমাম হত্যার বিচার দাবি

পার্বত্য চট্টগ্রামে নৃশংস কর্মকান্ডে সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০২১, ১২:০৩ এএম

পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি উগ্রবাদী খুনি-সন্ত্রাসীদের নৃশংসকর্মকান্ডে দেশের সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। কট্টরপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মসজিদের ইমাম নওমুসলিম ওমর ফারুক ত্রিপুরাকে প্রকাশ্যে হত্যার মাধ্যমে পাহাড়ি অঞ্চল থেকে ইসলাম ও মুসলমানদেরকে নির্মূল করার ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। দেশের স্বাধিনতা-সার্বভৌমত্বের স্বার্থেই নওমুসলিম ইমাম ওমর ফারুক ত্রিপুরার খুনীদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে গহীন পাহাড়ি অঞ্চলে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প বৃদ্ধি করে পুরো অঞ্চলে নিরাপত্তা ও নজরদারি শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে।

গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর চকবাজার শাহী মসজিদের সামনে নওমুসলিম ইমাম ওমর ফারুক ত্রিপুরার হত্যার প্রতিবাদ এবং খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জাতীয় ইমাম সমাজ এর উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। এছাড়া বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দও পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নওমুসলিম ইমাম ওমর ফারুক ত্রিপুরার হত্যার সাথে জড়িত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দ্রæত গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশ : পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানে মসজিদের নওমুসলিম ইমাম ওমর ফারুক ত্রিপুরার নৃশংস কর্মকান্ডে র বিচার এবং পাহাড়ি অঞ্চলে মুসলমান ও নিরীহ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে গতকাল বাদ জুমা চকবাজার শাহী মসজিদ চত্বরে জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, শহীদ নওমুসলিম ইমাম ওমর ফারুক ত্রিপুরা হত্যার মাধ্যমে প্রতীয়মান হচ্ছে পাহাড়ি উগ্রবাদী খুনি-সন্ত্রাসীদের নৃশংস কর্মকান্ডে দেশের সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। অনতিবিলম্বে ওমর ফারুক ত্রিপুরার খুনীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাহাড়ি অঞ্চলে সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধি করে সাধারণ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শহীদ ওমর ফারুক ত্রিপুরার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সংগঠনের মহাসচিব ও চকবাজার শাহী মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি মিনহাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা বেলায়েত হোসেন আল ফিরোজী, মুফতি তাসলিম আহমদ, মাওলানা আনোয়ারুল হক, মাওলানা জুবায়ের আহমদ কাসেমী, মাওলানা শামসুল হক, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ গাজী, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মুফতি রহমতউল্লাহ ও মুফতি সুলাইমান। সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের মহাসচিব মুফতী মিনহাজ উদ্দিন বলেন, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সমস্ত রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি-নিরাপত্তা, নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং দেশবিরোধী সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর শেকড় নির্মূলে সকলকে একযোগে পদক্ষেপ প্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কালবিলম্ব করা সমীচীন হবে না।

বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি : পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানে স¤প্রতি জে এস এস এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে নওমুসলিম ইমাম ওমর ফারুক ত্রিপুরাকে নৃশংস কর্মকান্ডে র তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি। বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি ও বিশ্ব মুসলিম পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা একেএম আশরাফুল হক গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, দুঃখজনক ভাবে আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের মুসলমানরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা নিজগৃহে আজ পরবাসী। মুসলিম জনগোষ্ঠীসহ বাঙালিদের জান-মাল, ইজ্জত-আবরু চরম শঙ্কায় রয়েছে। পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের উৎপাতে পার্বত্যাঞ্চল আজ সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের প্রশাসনকে ব্যর্থ করতে এবং দেশের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সন্ত্রাসী জে এস এস কাজ করছে। তিনি অনতিবিলম্বে ইমাম ওমর ফারুক ত্রিপুরার খুনীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং তার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জোর দাবি জানান।

আইএবি ঢাকা মহানগর উত্তর : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেছেন, বান্দরবানের বোয়াংছড়ি মসজিদের ইমাম নওমুসলিম ওমর ফারুক কর্মকান্ডের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ ও আসামী ধরতে সরকার ও প্রশাসন এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। আমরা এ হত্যাকান্ডকে স্বাভাবিক হত্যকান্ড হিসেবে দেখতে পারি না। আমরা মনে করি হত্যাকান্ডটি মুসলমানদের কলিজায় আঘাতের পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি স্পষ্ট আঘাত। তিনি অবিলম্বে নওমুসলিম ওমর ফারুক ত্রিপুরার খুনীদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বৃহস্পতিবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর-এর এক জরুরি সভায় সভাপতির বক্তবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর সহ-সভাপতি আলহাজ আনোয়ার হোসেন, সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন (পরশ)।



 

Show all comments
  • Enamul Shahin ২৬ জুন, ২০২১, ১২:৪৩ এএম says : 0
    একজন সাবালক মানুষ তার মুল্যবোধ ও ধর্মীয় বিশ্বাসে স্বাধীন। ধর্মান্তরিত হওয়া নতুন কোন ঘটনা নয়। নওমুসলিম ওমর ফারককে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করায় হত্যা করা হয়েছে, যা অতি ঘৃণা অপরাধ। এই বর্বোরচিত হত্যাকান্ডের খবর প্রকাশে অনেক সংবাদমাধ্যম সংকীর্ণতার পরিচয় দিয়েছে। পাঠকদের প্রত্যাশা, সংবাদমাধ্যম সমতার নীতি অনুসরণ করে সংবাদ প্রকাশ করবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Shibbir Ahmed Nirob ২৬ জুন, ২০২১, ১২:৪৩ এএম says : 0
    এসব সন্ত্রাসী ও উগ্র ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। উনি মুসলমান হওয়ার জন্যই পাহাড়ি উগ্রবাদীরা তাকে হত্যা করেছে। পাহাড়ে অনেক উগ্রবাদী গোষ্ঠী বেড়েছে। এরা প্রচন্ড বাঙালি বিদ্বেষী। তাই প্রশাসনের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ এদেরকে শাস্তি দেওয়া হউক। তানাহলে এরকম ঘটনা আরো ঘটবে।
    Total Reply(0) Reply
  • মরিক ললুজফ জীগা ২৬ জুন, ২০২১, ১২:৪৪ এএম says : 0
    সরকারের উচিত এই পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অবস্থানে যাওয়া। এইসব সন্ত্রাসীরা দু'চার দিন পরপর একটা ঝামেলা পাকায়। জোয়ালের নিচে বেঁধে এগ্লারে দিয়া হাল চাষ করানো উচিত
    Total Reply(0) Reply
  • তানিম আশরাফ ২৬ জুন, ২০২১, ১২:৪৪ এএম says : 0
    শহীদ ওমর ফারুক ত্রিপুরা শুধু একজন মুসলমান ছিলেন না। তিনি মসজিদের ইমামও ছিলেন, ছিলেন ইসলাম প্রচারকও। এপর্যন্ত পাঁচটি পরিবারকে তিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে সক্ষম হন। নামাজ পড়িয়ে মসজিদ থেকে বের হয়ে বাসায় ফেরার পথে তাকে হ*ত্যা করা হয়েছিল। ইসলাম ধর্মের প্রচার করার জন্যই তাকে হ*ত্যা করা হয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • Robin Ahmed ২৬ জুন, ২০২১, ১২:৪৫ এএম says : 0
    অবশ্যই এটার কঠোর বিচার করতে হবে এবং সেখানকার মুসলিমদের নিরাপত্তা দিতে হবে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী কে।
    Total Reply(0) Reply
  • Rabiul Islam Rabi ২৬ জুন, ২০২১, ১২:৪৫ এএম says : 0
    কী মোটিভ নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে।এসব অভাবী পাহাড়িদের আর্থিক দৈন্য দশাকে টার্গেট করে খ্রিস্ট এনজিও মিশনারিরা ধর্মান্তরিত করছে।বুঝতে বাকি নেই, পার্বত্য জেলাগুলো নিয়ে আমেরিকার গোপন বাসনা রয়েছে, বাংলাদেশ থেকে এ অঞ্চলকে আলাদা করে ফেলা তার মধ্যে একটি। অশান্ত পাহাড় ও সন্তু লারমার শান্তিবাহিনীও এ ষড়যন্ত্রেরই অংশ বৈ কিছু নয়।ভৌগোলিকভাবে পরাশক্তিগুলোর নিকট এ অঞ্চলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে জানা যায়। পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে বাংলাদেশের স্টাডি দরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • a+aman ২৬ জুন, ২০২১, ২:৪৩ এএম says : 0
    Govt and its intelligence service too busy with BNP jamat , but the real problem hill tracts is growing . This is the time to solve it , Arrest all terror group active in hill tracts who kill an threat bangalis there. If shantu larma can live in Dhaka , I want to live in hill tracts why some people have issue with it ? Same way rohingas now should give training and sent back to fight for their right. Its now or never . This rohingas will never go back with the current diplomacy .
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ২৬ জুন, ২০২১, ৩:০৩ এএম says : 0
    কথায় বলে কার কারনে মসজিদে পিননি খাইছো মোল্লা ছিনলানা ,জিয়ার রহমান যদি এই পাহাড়ি এলাকায় লোক জন বসবাস করার সুযোগ না করে দিতেন ,আরো আগেই এসব এলাকা পাহাড়িরা সাধীন করে নিয়ে যেত,এক মাত্র জিয়া জনবসতি করে রক্ষা করেছে। এখন বলতেছে জিয়া কিছুই করে নাই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ