মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মুসলিম অধ্যুষিত জম্মু-কাশ্মিরেও এবার গো-রক্ষকদের তাণ্ডব। ভারতের বিজেপিশাসিত গোবলয়ের রাজ্যগুলিতে যেভাবে শুধুমাত্র সন্দেহের বশে– গুজব ছড়িয়ে নির্দোষ মুসলিমদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়- এক্ষেত্রে ঠিক যেন তারই পুনরাবৃত্তি। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য- যেভাবে কেন্দ্র ঢালাও ডোমিসাইল সার্টিফিকেট ইস্যু করে উপত্যকায় অমুসলিমদের ঢুকিয়ে দিয়ে জনবিন্যাস বদলে দিচ্ছে তার জেরেই এখন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।
জম্মু-কাশ্মিরের রাজৌরি জেলায় গোরক্ষকদের এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। ২০ বছরের এক কাশ্মিরিকে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত কাশ্মিরি যুবকের নাম আইজাজ আহমেদ দর। রাজৌরি পুলিশ স্টেশনের অফিসার জাহাঙ্গির আহমেদ বলেন, আইজাজ তার গরু নিয়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যাচ্ছিল। ওইসময় এক দল দুষ্কৃতি তার উপর চড়াও হয়। তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।
ওই অফিসার স্বীকার করেছেন, এই ঘটনার পিছনে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোন রয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। দোষীদের খুঁজে বের করতে গণতল্লাশি শুরু হয়েছে। যে এফআইআর করা হয়েছে তাতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন)– ৩২৩ (ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যকে আঘাত)– ৩৩৬ (অন্যের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বা জীবনকে বিপদে ফেলে দেয়া– ১৪৭ (দাঙ্গা বাধানো) ও ১৪৮ (ধারালো আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাঙ্গা বাধানো) ধারা দেয়া হয়েছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘আমরা কিছু লোককে শমন পাঠিয়েছি। মূল অপরাধীকে এখনো ধরা যায়নি।’
নিহত আইজাজের তুতো ভাই মুদাসসির নাজার জানান, সোমবার সন্ধ্যায় আইজাজ ও এক ব্যক্তি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল অন্য একটি গ্রাম থেকে মিনি ট্রাকে করে মহিষ আনার জন্য। সেইমতো মহিষ নিয়ে ফেরার সময় এই স্বঘোষিত গোরক্ষকরা তাদের উপর হামলা করে। উন্মত্ত গোরক্ষকদের হাত থেকে বাঁচতে ট্রাক চালক জোরে গাড়ি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু– একটি বিএসএফ ক্যাম্পের কাছে থাকা স্পিড ব্রেকার থাকায় গাড়ির গতি একটু কমতেই গোরক্ষকরা পাথর নিক্ষেপ করতে শুরু করে। ট্রাকটিকে থামাতে বাধ্য করে তারা। নাজার জানান, ট্রাকের চালক কোনো রকমে পালিয়ে যেতে পারলেও আইজাজ পারেনি। হয় লোহার রড– নয়তো পাথর দিয়ে মেরে তার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল এই উন্মত্ত হিংস্র গোরক্ষকরা।
মঙ্গলবার ভোর ৩টা নাগাদ নৃশংস এই ঘটনার কথা জানতে পারে নিহতের পরিবার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইজাজকে জম্মুর একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় আইজাজের।
এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে গোরক্ষকদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার পর আইজাজের গোটা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
রাজৌরির সমাজকর্মী গুফতার চৌধুরি তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, ‘জম্মু অঞ্চলে গত কয়েক বছরে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হেট-ক্রাইম (ঘৃণ্য বিদ্বেষজনিত অপরাধ) বাড়ছে। যারা এভাবে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে নিরীহদের হত্যা করছে তারাই আসল সন্ত্রাসবাদী।’
আইজাজের বাবা মুহাম্মদ আফজল পক্ষাঘাতগ্রস্ত। বাবা-মা ও তিন বোনকে নিয়ে আইজাজের সংসার। সমাজকর্মী চৌধুরী এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন আইজাজের পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাবা– মা ও তিন বোনের দায়িত্ব কে নেবে? আইজাজ কি ন্যায় পাবে? সময়ই এর উত্তর দেবে।’
সূত্র : পুবের কলম
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।