বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশে প্রায় ২৫ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে যে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ থেকে পৌঁনে ১১ লাখ টন ডাল জাতীয় ফসল উৎপাদন হচ্ছে তার প্রায় ৩৫-৪০ ভাগই দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে। খেসারি ও মুগ ডালের ৪০ ভাগই আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলসহ দক্ষিণ উপক‚লীয় চরাঞ্চলে। তবে দেশে ডালের চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগের যোগানই আমদানি নির্ভর। যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ভারসাম্যেও বিঘœ ঘটাচ্ছে।
তবে সরকার আগামী ৫ বছরে দেশে ডাল জাতীয় ফসল আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির একটি বড় কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। দেশে বর্তমানে প্রতি বছর সোয়া ৮ লাখ থেকে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ডালের আবাদ হচ্ছে। উৎপাদন ১০ লাখ ৬৫ হাজার থেকে পৌনে ১১ লাখ টনের মত। এর মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলেই প্রায় ৫ লাখ টনের মত খেসারি ও মুগ ডালের উৎপাদন হচ্ছে। বারি’র বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে মসুর ডালের ৭টি, খেসারি ডালের ৩টি, মুগ ডালের ৬টি, ছোলার ৯টি, মাসকলাই ডালের ৩টি ও ফেলন ডালের ১টি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছেন। বারি উদ্ভাবিত এসব উচ্চ ফলনশীল জাতের ডালের উৎপাদন হেক্টর প্রতি দেড় টন থেকে ২ টন পর্যন্ত। পাশাপাশি এসব ডালে আমিষের পরিমাণও ২০-৩০ ভাগ। এছাড়া বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানও (বিনা) বেশ কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল ডাল বীজ উদ্ভাবন করেছে।
গোশতের পরেই ডালে প্রোটিন বা আমিষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বলে তা দেশের দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত জনগোষ্ঠীর আমিষের চাহিদা পূরণের একটি সস্তা উৎস বলেও মনে করছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। ডাল থেকে যে পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায় তা ডিম, দুধ বা গোশতের মাধ্যমে অর্জনে প্রায় তিনগুণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। এ কারণে ডালকে ‘গরীবের গোশত’ বলেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এছাড়া ডালের ছোলা বিভিন্ন পশু খাদ্যেরও একটি বড় উপকরণ।
কিন্তু ‘বারি’ ও ‘বিনা’ উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল এবং অধিক প্রোটিনসমৃদ্ধ ডালের বীজ কৃষকের কাছে যেমনি পৌছে না, তেমনি এসব ডালের আবাদ প্রযুক্তিও মাঠ পর্যায়ে হস্তান্তরের খুব একটা উদ্যোগ নেই। বারি গবেষণার মাধ্যমে দেশের আবহাওয়া উপযোগী উচ্চ ফলনশীল ও কৃষকবান্ধব কৃষি পণ্য উদ্ভাবন করে তা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) কাছে হস্তান্তর করে। ডিএই বøক সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে এসব উফশী জাতের আবাদ ও উৎপাদন প্রযুক্তি কৃষকের কাছে পৌছে দেয়ার কথা।
সূত্র মতে, দেশে ২ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে সাড়ে ৩ লাখ টন মসুর ডাল ও ২ লাখ ৮৫ হাজার হেক্টরে প্রায় পৌনে ৪ লাখ টন খেসারি ডাল উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে বরিশাল অঞ্চলেই প্রায় দেড় লাখ হেক্টরে পৌনে ২ লাখ টন খেসারি ডাল উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া গত রবি মৌসুমে দেশে প্রায় ১ লাখ ৮৫ হাজার হেক্টরে আড়াই লাখ টনের মত মুগ ডাল উৎপাদন হয়। যার মধ্যে বরিশাল অঞ্চলেই প্রায় পৌনে ২ লাখ টন মুগ ডাল উৎপাদন হয়েছে।
পাশাপাশি দেশের প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার টন মটর ডাল, ৭৫ হাজার হেক্টরে ৮৭ হাজার টন মাসকলাই ডাল, ৫৬ হাজার হেক্টরে ৭৮ হাজার টন ফেলন ডাল উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে বরিশাল অঞ্চলেই ৩২ হাজার হেক্টরে প্রায় ৪৫ হাজার টন ফেলন ডাল উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়াও সারাদেশে মাত্র ৫শ’ হেক্টর জমিতে প্রায় ৬শ’ টন অড়হর ডাল উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে অত্যন্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ এ ডালের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।