মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নরেন্দ্র মোদী ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে মূলত ঝড় তুলেছিলেন তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে- কর্মসংস্থান, উন্নতি আর লাল ফিতার দৌরাত্ম কমানো। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে তার বড় বিজয় বড় ধরণের সংস্কারেরও আশা তৈরি করেছিলো।
কিন্তু তার অর্থনৈতিক রেকর্ড বলছে তার সাত বছরের প্রধানমন্ত্রীত্ব আসলে হতাশাকেই উস্কে দিয়েছে। আর এতে আরও আঘাত করেছে করোনা মহামারি।
প্রবৃদ্ধির ধীরগতি
নরেন্দ্র মোদী ২০২৫ সালের মধ্যে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলেন ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বা মুদ্রাস্ফীতির সাথে সমন্বয়ের পরেও কমবেশি ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কিন্তু করোনা পূর্ববর্তী পর্যালোচনায় দেখা গেছে সেটি সর্বোচ্চ আড়াই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে। মহামারির কারণে কমতে পারে আরও অন্তত ২-৩শ বিলিয়ন ডলার।
মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, তেলের বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধিও এখন একটি বড় উদ্বেগের বিষয় বলে বলছেন অর্থনীতিবিদ অজিত রানাদে।
তবে এমন পরিস্থিতির জন্য কোভিডই এককভাবে দায়ী নয়।
মি. মোদী যখন ক্ষমতায় আসেন তখন ভারতের জিডিপি ছিলো ৭-৮ শতাংশ, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ তিন মাসে সেটি নেমে আসে ৩.১ শতাংশে।
২০১৬ সালের আলোচিত মুদ্রা নিষেধাজ্ঞা যা অর্থ প্রবাহ থেকে ৮৬ শতাংশ নগদ অর্থ সরিয়ে নেয়, আর 'গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স' বা জিএসটি নামে নতুন এক কর ব্যবসার ক্ষেত্রে বড় আঘাত করে।
আর এগুলোই নতুন বড় বড় সমস্যার সূত্রপাত করে।
চাকুরী হারানোর সংখ্যা বাড়ছেই
সেন্টার ফর মনিটরিং অব দা ইন্ডিয়ান ইকোনমির সিইও মহেশ ভায়াস বলছেন ভারতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো ২০১১-১২ সাল থেকে বিনিয়োগের নিম্মমুখী প্রবণতা।
"এরপর ২০১৬ সাল থেকে আমাদের আরও কয়েকটি অর্থনৈতিক আঘাত সইতে হয়েছে"।
মুদ্রা নিষেধাজ্ঞা, জিএসটি ও মাঝে মধ্যে লকডাউন- এসব কিছুই কর্মসংস্থান কমিয়েছে, তিনি বলছিলেন।
বেকারত্ব ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয় ২০১৭-১৮ সালে। আর ২০২১ সালের শুরুতে এসে অন্তত আড়াই কোটি মানুষ কাজ হারায় আর দারিদ্রসীমায় ঢুকে যায় আরও সাড়ে সাত কোটি মানুষ।
মিস্টার রানাদে বলছেন একই সময়ে প্রতি বছর যে ২ কোটি কাজের সুযোগ তৈরি করা দরকার সেখান থেকেও অনেক দূরে মোদী সরকার।
গত এক দশকে প্রতি বছর মাত্র ৪৩ লাখ কাজের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, বলছিলেন তিনি।
রপ্তানিতে ভাটা
মি. মোদীর সবচেয়ে বড় শ্লোগান ছিলো 'মেক ইন ইন্ডিয়া' যার লক্ষ্য ছিলো লাল ফিতার দৌরাত্ম কমিয়ে আর বিনিয়োগ বাড়িয়ে ভারতকে বৈশ্বিক উৎপাদকে পরিণত করা।
যার লক্ষ্য ছিলো এ খাত থেকে জিডিপির ২৫ শতাংশ নিশ্চিত করা কিন্তু গত বছরে এটি আটকে আছে পনের শতাংশে।
আর সবচেয়ে খারাপ খবর হলো এ খাতে কাজের সংস্থান গত পাঁচ বছরে কমে অর্ধেক হয়েছে।
এক দশক ধরে রপ্তানি আটকে আছে তিনশ বিলিয়ন ডলারের আশেপাশে।
বরং প্রধানমন্ত্রী মোদীর সময়েই বাংলাদেশের মতো ছোট কিছু প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে কিছু বাজারের অংশীদারিত্ব ক্রমান্বয়ে হারিয়েছে ভারত।
অবকাঠামো নির্মাণ
অবকাঠামো প্রতিষ্ঠান ফিডব্যাক ইনফ্রার সহ প্রতিষ্ঠাতা ভিনায়ক চ্যাটার্জি বলছেন, মি. মোদীর সরকার প্রতিদিন গড়ে ৩৬ কিলোমিটার সড়ক তৈরির কাজ করেছে যা আগের সরকারের সময়ে ছিলো ৮-১১ কিলোমিটার।
নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ দ্বিগুণ হয়েছে গত পাঁচ বছরে। এখন একশ গিগাওয়াট উৎপাদন হলেও ২০২৩ সাল নাগাদ লক্ষ্য হলো ১৭৫ গিগাওয়াট।
অর্থনীতিবিদরা অনেকেই মিস্টার মোদীর জনপ্রিয় প্রকল্প যেমন লাখ লাখ নতুন টয়লেট তৈরি করা, গৃহ ঋণ, গরীবের জন্য গ্যাস ও পানিতে ভর্তুকি- এগুলোর প্রশংসাই করেন।
যদিও বহু টয়লেটই ব্যবহৃত হচ্ছে না বা পানি সরবরাহ নেই আর ভর্তুকির যে সুবিধা পেত মানুষ তাকে সংকটে ফেলেছে তেলের দাম বৃদ্ধি। বিবিসি বাংলা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।