Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউরোপের প্রতি সহযোগিতার হাত বাইডেনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০২১, ৫:৩৯ পিএম

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সংঘাতের যে জট সৃষ্টি হয়েছিল, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একে একে সেগুলি দূর করে সহযোগিতা আরও নিবিড় করার পথে এগোচ্ছেন। বৃহত্তর স্বার্থে অনেক ‘ক্ষুদ্র’ বিষয়ে আপোশ করতে প্রস্তুত তার প্রশাসন। এমনই সদিচ্ছার পরিচয় হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং ও ইউরোপের এয়ারবাস কোম্পানিকে ঘিরে প্রায় দুই দশকের সংঘাত আপাতত পাঁচ বছরের জন্য মুলতুবি করে স্থায়ী সমাধানসূত্রের পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন তিনি।

প্রতিযোগিতার বাজারে সরকারি ভর্তুকির অভিযোগে দুই পক্ষ এতকাল একে অপরের বিরুদ্ধে এমনকি আইনি পদক্ষেপ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শীতল করে তুলেছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৯ সালে মার্কিন প্রশাসনকে ইউরোপের উপর ৭৫০ কোটি ডলার অংকের শাস্তিমূলক শুল্ক চাপানোর অধিকার দিয়েছিল। এক বছর পর ইউরোপও আমেরিকার উপর প্রায় ৪০০ কোটি ডলার অংকের পালটা পদক্ষেপ নেবার অনুমতি পায়। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ শীর্ষ বৈঠকে এমন সাফল্য সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত ইইউ নেতারা। ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, এমন বোঝাপড়ার ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। বিরোধ মেটাতে আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানসূত্র সম্পর্কে আশা প্রকাশ করেছে দুই পক্ষ। সেটা সম্ভব না হলে আবার শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

বাইডেন প্রশাসনের গঠনমূলক মনোভাবের কারণে ইউরোপ থেকে চিজ, মাখন, ওয়াইন, বিমান শিল্পের যন্ত্রাংশ আমদানির উপর শাস্তিমূলক শুল্ক তুলে নেয়া হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও অ্যামেরিকা থেকে বিমান শিল্পের যন্ত্রাংশ, কৃশিজাত পণ্য ও শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য পণ্যের আমদানির উপর শুল্ক তুলে নেবে। এমন মীমাংসার ফলে বোয়িং ও এয়ারবাস কোম্পানির প্রায় একচেটিয়া ব্যবসার সুবিধা হবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। করোনা সংকটের জের ধরে যথেষ্ট অর্ডারের অভাবে দুই কোম্পানিই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া চীনও ভবিষ্যতে বিশাল সরকারি সহায়তা সম্বল করে বেসামরিক বিমান উৎপাদনের ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বোয়িং ও এয়ারবাসের আধিপত্য খর্ব হতে বাধ্য।

এমন সাফল্যের ফলে অন্যান্য বিরোধ মেটানোর ক্ষেত্রেও বাড়তি প্রত্যাশা দেখা যাচ্ছে। তবে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামকে ঘিরে দুই পক্ষের মতমার্থক্য আরও বেশি হওয়ায় দ্রুত নিষ্পত্তির আশা আপাতত কম। প্রেসিডেন্ট বাইডেন এখনো প্রায় তিন বছর আগে ট্রাম্প আমলের চাপানো আমদানি শুল্ক বহাল রেখেছেন। একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে দুই পক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করছে। চলতি বছরের শেষের মধ্যেই সমাধানসূত্রের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।

অন্য একটি বিরোধের ক্ষেত্রেও অ্যাটলান্টিকের দুই প্রান্তের মধ্যে মীমাংসার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি ও ব্রিটেনের মতো কিছু শিল্পোন্নত দেশ বাইডেন প্রশাসনের প্রস্তাব মেনে বহুজাতিক কোম্পানিগুলির আয়ের উপর বিশ্বজুড়ে সর্বনিম্ন ১৫ শতাংশ কর চাপাতে রাজি হয়েছে। সেই প্রস্তাব কার্যকর করতে অনেক সময় লাগলেও একক নীতির ফলে আখেরে সব পক্ষের লাভ হবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ