নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডান ও আবাহনীর মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ একটি ম্যাচে লাথি মেরে স্ট্যাম্প উড়ানো, বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ করলে আবার হাত দিয়ে স্ট্যাম্প উড়িয়ে ফেলা এবং আম্পায়ারের সাথ তর্কে জড়িয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিলেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। পরে অবশ্য আজকের এহেন আচরণের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। এনিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই ঘটনাকে ক্রিকেটপ্রেমীরা একেক জন একেকভাবে দেখছেন। ফেসবুকে অনেকেই সাকিবের এমন আচরণের কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ তাকে সমর্থনও করেছেন।
আজকের খেলায় আম্পায়ার এলবিডব্লিউ'র আবেদন মেনে আউট না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে লাথি মেরে স্ট্যাম্প উড়িয়ে দেন মোহামেডানের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এরপর আম্পায়ার ইমরান পারভেজের দিকে তেড়ে যান ও বিতণ্ডায় জড়াতেও দেখা গেছে তাকে। পরে আম্পায়ার বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ করলে আবার হাত দিয়ে স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন সাকিব। ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে তিনি কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদের সাথেও।
এই ঘটনার পরে সাকিব আল হাসান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় পোস্ট দিয়ে এ ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করেছেন।
সাকিবের আজকের বিতর্কিত আচরণ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুল লিখেছেন, ‘‘সাকিব আল হাসান আমার প্রিয় খেলোয়াড়। তার খারাপ সময়ে তাকে নিয়ে পত্রিকায় লিখেছি, তার পক্ষে টিভিতে কথা বলেছি। দু:খ লাগে তার এখনকার কিছু কান্ডকারখানা দেখলে। রাজনৈতিক আস্কারা দিয়ে তাকে উদ্ধত মানুষে পরিণত করা হয়েছে। পক্ষপাতদুষ্ট আম্পারিং-এর জন্য আজ তিনি মেজাজ হারিয়েছেন এটা বলছেন অনেকে। এটা হতে পারে। কিন্তু অতীতে তার অনেক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন থাকার কারণে আজকের আচরনটা সহজে ইগনোর করা যাবে না। সাকিবের কাছে দৃষ্টান্তমূলক আচরণ আশা করি। আশা করি ম্যাচ ফিক্সিং আর পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং-এর আবসানও।’’
মোঃ আলামিন মনে করেন, ‘‘লাথি টা সাকিব স্টাম্পে মারে নাই। লাথি মারছে বিসিবি এর মুখে।আমাদের ঘরোয়া লিগে তথাকথিত একটা বড় দলকে ম্যাচ জেতানোর জন্য কি কি হয় তা মোটামুটি সবার জানা। এবার এটা আরো প্রকাশ্যে আসছে খেলাগুলো লাইভ হওয়ার কারণে। আগের কয়েকটা ম্যাচ এ কি হয়েছে তা সবার জানা। আজকে খেলোয়াড়ি দিক থেকে সাকিব এর এ্যাটিটিউট টা ভালো না হলেও আমাদের লিগে যা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে এটা একটা বলিষ্ঠ প্রতিবাদ।’’
আহমাদ সোহাগ লিখেছেন, ‘‘সাকিব আল হাসান যেদিন নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলো ঐদিন সবাই তাকে মাথায় তুলে নেচেছিলো। ঐদিন কারো মনে হয় নাই এটা ক্রিকেটসুলভ আচরণ না। বরং সবাই তাকে বাহবা দিচ্ছিলো। আজকে দেখলাম সবাই সাকিবকে প্রতিবাদের ভাষা শিখাচ্ছে। আমি হলফ করে বলতে পারি একই কাজ যদি সাকিব আজকে ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করতো তাহলে সেইসব মানুষের দেশপ্রেম আজকে উপড়ে পড়তো। আর ফেসবুকে কেঁদেকেঁদে স্ট্যাটাস দিতো, 'আইসিসি আমাগো লগে সবসময় দুই নাম্বারি করে! সাকিব যা করছে উচিত কাজ করছে।’’
সাকিবের বাজে আচরণের নিন্দা জানিয়ে ওয়াসিক বিল্লাহ লিখেছেন, ‘‘খুব বাজে কাজ করেছেন। এতটা বেপরোয়া হওয়া কোন যুক্তিতেই উচিৎ না। পার্ফমেন্সে সেরা হওয়ার পাশাপাশি মানসিকতায়ও সেরা হতে হবে। শুধু খেলার শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে মানুষের ভালোবাসা, সম্মান, শ্রদ্ধা কোনটিই পাওয়া যায় না। তার থেকে একের পর এক বাজে আচরণে আমরা হতাশ হই।’’
জুয়েল খানের মন্তব্য, ‘‘সাকিব আল হাসান যা করেছেন তা অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই অখেলোয়াড় সূলভ আচরণ কিন্তু কথা থেকে যায়..!! সমস্যাটা আসলে কোথায় খতিয়ে দেখার সময় একদমই চলে এসেছে। শুধু দেশ সেরাই নন পৃথিবীর সেরা একজন খেলোয়াড় কেন কদিন পর পর এমন আচরণ কিংবা প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন এমন নিয়ম করে।ক্ষোভটা আসলে কার উপর উগরে দিচ্ছেন সাকিব বারবার। ধরলাম সাকিব আল হাসান তথাকথিত বেয়াদব এবং যদি তাই হয় তাহলে সাকিবকে দমাতে না পারাটা কি বোর্ডের ব্যার্থতা নয়? জ্বি এই একটা ইস্যুই পরিস্কার বার্তা দিচ্ছে কতটা অযোগ্য ব্যক্তিবর্গ ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলো ধরে রেখেছেন। আর সাকিবের এমন প্রতিবাদ গুলো ঐ অযোগ্যদের জন্যেই কিনা প্রশ্নটা তোলা থাক সময়ের কাছেই?’’
অ্যাড. মিজান চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘ক্রমাগত ম্যাচ ফিক্সিং, নিরপেক্ষ আম্পায়ার নিজেই অন্যতম দাবার গুটি, বিনিময়ে পকেটের কিছুটা তুষ্টি। এরূপ বেআইনী অর্জনের সাথে লাথি থাপ্পর কিছু না থাকলে প্যাকেজ পূর্ণ হয় কি করে? সাবাস সাকিব! ক্রিকেটকে সম্মান করে ক্ষমাও চেয়েছে। এর পর জরিমানা আর আন্যায় ভোগান্তি ছাড়া মুরদ থাকলে সাকিব এর কিছু করুক দেখি।’’
কামরুল ইসলামের মন্তব্য, ‘‘আম্পায়ারের সাথে বেয়াদবি ভারতীয় খেলোয়াড়দের অভ্যাস, আইপিএলে তাদের সংস্পর্শে থেকে সাকিব এটা ভালই শিখেছে! আর দেশের ক্ষমতাসীন দলের লোক হওয়ার একটা প্রভাব তো আছেই।’’
গাজী মিজানুর রহমানের লিখেছেন, ‘‘সাকিব আল হাসান তাঁর ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে পোস্টের মাধ্যমের তাঁর ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।ভুল বুঝতে পারা ও স্বীকার করা একধরনের মহৎ গুণ। আমাদের সমাজে অধিকাংশ মানুষ ভুল করার পর নিজের ভুল নিজে স্বীকার করতে চান না। এখানেই সাকিব অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম। যিনি অতি অল্প সময়ে ও সহজে নিজের ভুল নিজে বুঝতে পারেন।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।