মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ানমারে মানবাধিকার বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। এর জন্য এককভাবে দায়ী সেখানকার সামরিক সরকার। এখানেই শেষ নয়। পুরো মিয়ানমারজুড়ে সহিংসতা তীব্র হয়েছে। এ সতর্কতা দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। শুক্রবার দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন- কায়া, চিন এবং কাচিন রাজ্যসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এখনও সশস্ত্র লড়াই চলছে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে বিভিন্ন রিপোর্ট। এসব স্থানে সহিংসতা চলছে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু গ্রুপের সাথে। ১০ সদস্য বিশিষ্ট আঞ্চলিক জোট আসিয়ানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মিয়ানমারে উত্তেজনা নিরসনে কোনো প্রচেষ্টাই দৃশ্যমান নয়। তা সত্তে¡ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে সেনা উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। সহিংস অবস্থা নিরসনে আসিয়ানের সাথে সেনা উপস্থিতি বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মিয়ানমার এটা তার বিপরীত। মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, চার মাসেরও সামান্য বেশি সময়ের মধ্যে মিয়ানমারের গণতন্ত্র ভঙ্গুর থেকে মানবাধিকার বিপর্যয় ঘটেছে। এ সঙ্কটের জন্য এককভাবে দায়ী মিয়ানমারে সামরিক কর্তৃত্ব। এ জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে। উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন্স (আসিয়ান)। কিন্তু তাতে কোনো ফল আসছে না। দেশটিতে সেনাবাহিনী ক্রমশ ক্ষমতা কুক্ষিগত করছে। এর বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থিরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ছেন রাস্তায়। তাদের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত দমনপীড়ন চালাচ্ছে সামরিক জান্তা। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের ধর্মঘটে দেশের অর্থনীতি বিকল হয়ে পড়েছে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনী ও জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গ্রুপগুলোর মধ্যে লড়াই তীব্র হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সঙ্কট সমাধানে আসিয়ান যে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিয়েছে তাতে তেমন অগ্রগতি হয়নি। গত সপ্তাহে আসিয়ানের দু’জন শীর্ষ স্থানীয় দূত মিয়ানমার সফর করেছেন। এ সময় তারা সাক্ষাৎ করেছেন সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং সহ অন্য সামরিক কর্মকর্তাদের সাথে। তাদের এ উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন গণতন্ত্রপন্থি গ্রুপগুলো। তাদের অভিযোগ আলোচনা থেকে তাদেরকে বাইরে রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ, পশ্চিমা দেশগুলো এবং চীন সবাই আসিয়ানের এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে। কিন্তু তাদের কথায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কর্ণপাত করেনি বলেই মনে হয়। পক্ষান্তরে আসিয়ান যে ৫ দফা পরিকল্পনা দিয়েছিল, তার সাথে তারা প্রতারণা করছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত তিন সপ্তাহে কায়া রাজ্য থেকে কমপক্ষে এক লাখ ৮ হাজার মানুষ পালিয়ে গেছেন তাদের বাড়িঘর থেকে। এর মধ্যে অনেকেই বনে-জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তাদের কাছে খাবার, পানি, চিকিৎসা সেবা বা পয়ঃনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। মিশেল ব্যাচেলেট ‘বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্ট’ উদ্ধৃত করে বলেছেন, মিয়ানমারের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী বেসামরিক লোকজনের বাড়িঘর এবং চার্চে গোলা নিক্ষেপ করেছে। তাদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন মিশেল ব্যাচেলেট। তিনি আরো বলেছেন, সদ্য গঠিত বেসামরিক বাহিনী, যারা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস নামে পরিচিত- তারা এবং অন্য সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে অবশ্যই বেসামরিক লোকজনের ক্ষতির বিষয়টি এড়িয়ে যেতে হবে। মিশেল ব্যাচেলেটের অফিস থেকে বলা হয়েছে, এসব আপডেট জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে আগামী জুলাইয়ের অধিবেশনে তুলে ধরবেন তিনি। উল্লেখ্য, ১লা ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে কমপক্ষে ৮৬০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন সহিংসতায়। এর মধ্যে বেশির ভাগই নিহত হয়েছেন সামরিক জান্তার হাতে। কমপক্ষে ৪৮০৪ জনকে খেয়ালখুশিমতো আটক করে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে আছেন বেসামরিক নেত্রী অং সান সুচি, তার প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রীপরিষদের সদস্যরা, সাংবাদিক ও বিরোধীরা। মিয়ানমারে সামরিক জান্তা এতটাই উন্মত্ত হয়ে পড়েছে যে, তারা একজনের অপরাধ অন্যজনের কাঁধে চাপাচ্ছে। জাতিসংঘের অফিসের তথ্য মতে, একজন অধিকার কর্মীর মাকে গত ২৮ শে মে তিন মাসের জেল দেয়া হয়েছে। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।