বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মাদারীপুরের ঘটকচর এলাকায় শনিবার বেলা ১২টার দিকে আওয়ামীলীগের বিরাজমান এক গ্রুপের অতর্কিত হামলায় কেন্দুয়া ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সোহরাব হোসেন সর্দারের মার্কেটে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে বিক্ষুদ্ধরা। এসময় মার্কেটে অবস্থিত দুইটি ব্যাংকের শাখা, ৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, প্রায় ১৫টি মটরসাইকেলে ভাংচুর চালানো হয়। এতে সদর থানা পুলিশ, নারী ও শিশুসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লার দেয়া একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান গ্রুপের লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের কলাবাড়ী এলাকায় পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করার চেষ্টা করেন। এসময় দুই গ্রুপের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করলে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে শাজাহান খান গ্রুপের লোকজন কলাবাড়ী থেকে মাদারীপুর শহরে আসার পথে ঘটকচর এলাকায় ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও কেন্দুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সোহরাব হোসে সর্দারের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ‘সর্দার মার্কেট’-এ অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় মার্কেটে অবস্থিত কৃষি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকের দুটি শাখা, রেখা বিউটি পার্লার, একটি হোটেলে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। এছাড়াও মার্কেটের প্রায় ৭টি ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ১৫টি মটরসাইকেল ভেঙ্গে ফেলেন বিক্ষুদ্ধরা। পরে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুদ্ধদের ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। এসময় পুলিশ, নারী ও শিশুসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে।
এব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ্য সোহরাব হোসেন সর্দার জানান, ‘জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রুবেল খান, এমপি পুত্র আসিবুর রহমান খান ও কেন্দুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়নাল মাতুব্বরের লোকজন প্রায় শ’খানিক মটরসাইকেল বহন নিয়ে আমার নিজস্ব মার্কেটে হামলা ও ভাংচুর চালায়। এমন কোন দোকানপাঠ নেই যে তার তান্ডব না চালিয়েছে। দুটি ব্যাংক, মসজিদ-মাদ্রাসা পর্যন্ত তারা রক্ষা করে নাই। সিসি টিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করবো। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি আ’লীগের সাথে ভর দিয়ে আমাদের ক্ষতি করছে। আমি কঠোর বিচার দাবী করছি।’
অভিযোগের বিষয় জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রুবেল খান বলেন, ‘স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত, তিন বারের সংসদ সদস্য মৌলভী আসমত আলী খানকে নিয়ে শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা যে কটুক্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছে, তারই প্রতিবাদে শনিবার আমাদের নির্ধারিত প্রতিবাদ সভা ছিল কলাবাড়ী। সেখানে শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লার লোকজন আমাদের সাথে ইচ্ছে করে বিরোধে জড়িয়েছে। এতে আমাদের কিছুই করার নেই। বিচ্ছুন্ন কিছু ঘটনাও ঘটেছে।’
আইন-শৃঙ্খলার বিষয় মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এহসানুর রহমান ভূইয়া জানান, ‘বিরাজমান দুই গ্রুপের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও যাওয়ার সময় কিছু বিক্ষুদ্ধরা দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করেছে। যা কয়েকটি সিসি টিভি দেখে সনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মে রাজৈর উপজেলার শান্তি নিকেতন কেন্দ্রে ঈদ পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মোল¬া মুক্তিযোদ্ধা আছমত আলী খানের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা নিয়ে কটুক্তি করেন। শাহাবুদ্দিন মোল¬ার এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিবাদ হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।