চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির মাগফেরাতের আশায় লোক খাওয়ানো বা দরিদ্রকে খাওয়ানোর দ্বারা মৃত ব্যক্তির কোনো উপকার হবে কি?
উত্তর : আপনার প্রশ্নের মধ্যেই দু’টি বিষয় ভাগ করা আছে। একটি লোক খাওয়ানো, আরেকটি দরিদ্রকে খাওয়ানো। দরিদ্রকে খাওয়ানোর মধ্যে সওয়াব হওয়া ও মৃত ব্যক্তির উপকার হওয়ার মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই। ইসলামে ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান অন্যতম বিশেষ ইবাদত। মৃতের রূহে সওয়াব রেসানীর জন্য এটি একটি ভালো আমল। তবে ‘লোক খাওয়ানো’ নিয়ে একটু ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে। অন্য একটি ধর্মের বিশ্বাস যে, মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধ না করলে তার আত্মা শান্তি পায় না। সেটি বাড়ির আশপাশে ঘুরে বেড়ায়, অনেক সময় জীবিতদের জ্বালাতন করে ইত্যাদি। ইসলামে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ও অমূলক। আমাদের সমাজে শ্রাদ্ধের অনুসরণে এক ধরনের লোক খাওয়ানো চালু ছিল। একে দোয়া দুরুদের মিশ্রণসহ একটি মেলা বা লোক খাওয়ানোর চাপিয়ে দেয়া অনুষ্ঠান বললেও ভুল হবে না। ঢাকা বিভাগে এ মেলার নাম, খরচা বা খরচ। বলা হয় তার বাবার মৃত্যুর খরচের খানা খেয়ে এলাম। অনেক অঞ্চলে বলে মেলা বা যিয়াফত, কোথাও বলে মেজবানী খানা। এসবে বাড়িওয়ালা ও ধনী-গরীব সবাই খানা খায়। সুতরাং একে সরাসরি সাদাকাহ বলা যায় না। এতে সওয়াব হওয়ার কথা নয়। এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি ভাগ না করে, অনেক নাবালক ওয়ারিশ থাকা সত্তে¡ও এমন কি তারা খুব গরীব হওয়া সত্তে¡ও সমাজের মানুষ মৃতের জন্য একটি বড় খরচে তাদের বাধ্য করে। ইচ্ছা বা সংগতি না থাকলেও তাদের বড় একটি যিয়াফত করতে হয়। এমনকি সমাজের চাপে এ পরিবারটি ঋণ করে হলেও এ রসম পূরণ করে। এরকম দাওয়াত ক্ষেত্র বিশেষে অবৈধ ও গোনাহের কাজ। কারণ এখানে জুলুম ও কুসংস্কার পাওয়া যায়। তবে যদি শ্রাদ্ধের বিকল্প বা সমাজের চাপ মনে না করে কেউ মন থেকেই সবার জন্য একটি উন্মুক্ত খানার আয়োজন করে এটি জায়েজ হতে পারে। সৌজন্যমূলক দাওয়াত হিসাবে আল্লাহ সওয়াবও দিতে পারেন। তবে মাগফেরাতের জন্য যে খানা তা শুধু দরিদ্রদের জন্যই হতে হবে। এতে ধনীরা শরীক হতে পারবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।