নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এইতো দেখতে দেখতে ইউরো শুরু হতে এখন মাত্র দু’দিন বাকি। গতপরশু এবারের ইউরোপিয় ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে নামার আগে প্রীতি ম্যাচে লাতভিয়াকে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত করল জার্মানি। আর তাতে রেকর্ড তিন বারের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা ‘এফ’ গ্রæপের দুই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে প্রচ্ছন্ন একটা হুমকি দিয়ে রাখল। সবশেষ ১৯৯৬ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নদের গ্রæপে আছে আসরের বর্তমান শিরোপাধারী দল পর্তুগাল। আছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সও। গ্রæপের অপর দলটি তুলনামূলক ছোটে হলেও অঘটন-ঘটন-পটিয়সী হাঙ্গেরি।
ফলাফল যখন ৭-১, তখন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে জার্মানি-ব্রাজিলের ম্যাচটির কথা হয়তো মনে পড়ে যাবে। তবে একটি তথ্য জেনে পাঠকেরা অবাক হতে পারেন, ব্রাজিলের বিপক্ষে সেই ম্যাচে অথবা লাতভিয়ার বিপক্ষে তাজা ম্যাচটিই শুধুমাত্র ৭ গোলের ব্যবধানে জয় নয় চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত ১৯ বার ১৭টি প্রতিপক্ষের জালে ৭ বার করে বল জড়িয়েছে কোচ জোয়াকিম লোর দল! যারমধ্যে ব্রাজিল ছাড়াও আছে সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের মতো দলও। সবচেয়ে বেশি ৩ বার এ ব্যবধানে হেরেছে লুক্সেমবার্গ।
কি মনে করছেন, জার্মানি বোধহয় ৭ গোলের বেশি কাউকে দিতে পারেনি? এমনটি ভাবলে ভুল করবেন। দলটি এখন অবধি ৯ বার প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়েছে ৮ গোল। ৩ বার ৯ গোল। একবার সাইপ্রাসকে দিয়েছিল ১২ গোল। আর ১৩ সংখ্যাটিকে বলা হয় আনলাকী। এই অশুভ সংখ্যার সাক্ষী হয়েছে ফিনল্যান্ড ও স্যান ম্যারিনো।
ইউরোর আসরে সর্বাধিকবার ফাইনালে উঠা দলটি কাকতালীয়ভাবে প্রতিটি শিরোপা জয়ের আগে অন্তত একটি বড় ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। ১৯৭২ সালের প্রথম ইউরোপ সেরা হওয়ার পর ১৯৮০ সালে দ্বিতীয় ও ১৯৯৬ সালে তৃতীয় শিরোপা জেতে জার্মানি। ১৯৭১ সালে নরওয়েকে ৭-১ ব্যবধানে হারায় তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি। এরপর আশি সালের ইউরোর চারমাস আগে মাল্টাকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দেয় জার্মানরা। সবশেষ শিরোপা জযের আগের বছর ১৯৯৫ সালে মলদোভাকে ৬-১ ব্যবধানে হারায় ইউরোপের শক্তিশালী এ দেশটি।
সর্বসাকুল্যে একটি কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এবারের ইউরোতে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পয়ন ফ্রান্স ও ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালকে একটি হুমকিই দিয়ে রাখল জার্মানি। এবারের আসরে সবচেয়ে শক্তিশালী দল পর্তুগালের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। পেপে, রুবেন দিয়াস, জোসে ফন্টেরা কি পারবেন থমাস মুলার, ফ্রোরিয়ান নুহাস, লেরয় সানে, কেভিন ভোল্যান্ড ও টিমো ওয়েরনারকে রুখতে? মাঝমাঠে বার্নন্দো সিলভা, ব্রæনো ফার্নান্দেস, দানিলোরা কি পারবেন নিজেদের দায়িত্ব সামলাতে? ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরাও কি পারবেন জার্মানের জমাট রক্ষণ ভাঙতে?
একই প্রশ্ন ওঠে ফ্রান্সের রক্ষণের দায়িত্ব সামলানো বেঞ্জামিন পাভার্ড, রাফায়েল ভারানে ও ক্রুট জউমার ক্ষেত্রেও। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা পল পগবার নেতৃত্বে এনগোলো কান্তে, আরিয়েন রাবিওতরা কি পারবেন জার্মানদের রুখতে? করিম বেনজামা, ওলিভার জিরুদ, কিলিয়ান এমবাপেদের ভাগ্যে কি জুটবে? এমন প্রশ্ন অনেক। তবে এসব জটিল সব প্রশ্নের উত্তর সময়ই বলে দেবে। চুকিয়ে দেবে সব সমীকরণ।
আপাতত এত্তোসব কঠিন হিসেবে মাথা গুলিয়ে কাজ নেই। আসুন একটু দেখে নিই গত ম্যাচের চিত্র। কে বা কারাই ভেঙেছে লাতভিয়ার হৃদয়? ভয় জাগিয়ে তুলেছে ফ্রান্স-পর্তুগালের শিবিরে!
মূলত প্রীতি ম্যাচ হলেও জার্মান গোলকিপার ম্যানুয়েল নয়্যারের জন্য মাইলফলকের ম্যাচ ছিল এটি। প্রথম জার্মান গোলকিপার হিসেবে শততম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন। ডেনমার্কের সঙ্গে গত ম্যাচটা ড্র হওয়ায় এই ম্যাচে শুরু থেকেই ক্ষীপ্র গতি লক্ষ্য করা গেছে থমাস মুলার ও কাই হাভের্তজের।
বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া হলে ১৯ মিনিটে আর কোনও ভুল করেননি রবিন গোজেনস। চেলসিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানো হাভের্তজের পাস থেকে গোলটি করেন তিনি। এর পর অবশ্য ব্যবধান ৩-০ করতে সময় লাগেনি জার্মানির। ২১ মিনিটে জাল কাঁপান গুন্দোগান, ২৭ মিনিটে স্কোর লাইন ৩-০ করেন মুলার। যা ছিল দুই বছরেরও বেশি সময় পর ফেরা তারকার প্রথম গোল। ৩৯ মিনিটে আবারও হাভের্তজের নেওয়া শট থেকে গোল আসে। তার শট ঠেকাতে গিয়ে নিজেদের জালে জড়িয়ে দেন লাতভিয়া গোলরক্ষক রবার্টস ওসোলস। বিরতির আগ মুহ‚র্তে স্কোর শিটে নাম তুলেন সার্জ জনাব্রি।
দ্বিতীয়ার্ধেও জার্মানির গোল বন্যা রুখে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না লাতভিয়ার। ৫০ মিনিটে টিমো ভেরনারের গোলে স্কোর হয়ে যায় ৬-০। ৭৫ মিনিটে লাতভিয়া সান্ত¡নাসূচক একটি গোল দিলে পরের মিনিটে আবার তাদের জাল কাঁপিয়ে দেয় জার্মানি। সপ্তম গোলটি করেন লেরয় সানে।
আসছে ইউরোয় ১৬ জুন জার্মানির প্রথম প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। ১৯ জুন তাদের প্রতিপক্ষ পর্তুগাল। গ্রæপের শেষ ম্যাচে ২৪ জুন হাঙ্গেরির মুখোমুখি হবে শিরোপা প্রত্যাশী দলটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।