Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিরাপত্তা সতর্কতা জারি ইসরাইলে

ক্ষমতার পালাবদল সামনে রেখে সহিংসতার আশঙ্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২১, ১২:০৭ এএম

ইসরাইলে দীর্ঘদিন পর ক্ষমতার পালাবদল সামনে রেখে সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করে বিরল এক সতর্কতা জারি করেছে দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সিন বেট নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান নাদাভ আরগামান কোন নাম উল্লেখ না করে শনিবার ওই বিবৃতিতে বলেন, “স¤প্রতি আমরা অতি সহিংস ও উসকানিম‚লক পরিস্থিতি তৈরির লক্ষণ দেখতে পেয়েছি, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। “এই প্রবণতা নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে এমনভাবে প্রভাবিত করতে পারে যে তারা সহিংস হয়ে উঠতে পারে এবং বেআইনি কিছু করে বসতে পারে যা হয়ত শারীরিক হামলা পর্যন্তও গড়াতে পারে।” ইসরাইলের পার্লামেন্টে এ সপ্তাহেই নতুন সরকার গঠিত হতে পারে, যার মধ্য দিয়ে আবসান হতে পারে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর শাসনের, যিনি রেকর্ড এক যুগ ধরে দেশটির ক্ষমতায়। ইসরাইলে গত ২৩ মার্চের জাতীয় নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় সমর্থন অর্জনে ব্যর্থ হলে সুযোগ পান পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ায়ের লাপিদ। গত বুধবার তিনি ঘোষণা দেন, একটি জোট সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় সমর্থন জোটাতে পেরেছেন তিনি। মধ্যপন্থি লাপিদ একটি অদ্ভুত জোট গড়ে সরকার গঠন করতে চলেছেন, যেখানে বামপন্থি, উদারপন্থি, কট্টরপন্থি, জাতীয়তাবাদী ও ধর্মীয় দল রয়েছে; একইসঙ্গে ইসরাইলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকারের অংশ হতে চলেছে একটির আরব ইসলামি দল। ক্ষমতা ধরে রাখার অন্তিম মুহ‚র্তের চেষ্টা হিসেবে একটি অনলাইন পোস্টে নেতানিয়াহু দেশবাসীকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ওই জোট ‘একটি বিপজ্জনক বামপন্থি সরকার’ হতে চলেছে। নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যার নাম সংবাদ মাধ্যমে এসেছে, কট্টরপন্থি ইয়ামিনা দলের নেতা সেই নাফতালি বেনেটের প্রতি কিছু ডানপন্থি গোষ্ঠী দারুণক্ষুব্ধ, কারণ তিনি মধ্যপন্থি লাপিদের সঙ্গে জোট করেছেন। এর জেরে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক পোস্টে বেনেটকে আক্রমণ করা হচ্ছে। নির্বাচনের আগে বেনেট প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন, তিনি মধ্যপন্থি লাপিদ, অথবা কোনো আরব দলের জোটে যোগ দেবেন না। এখন লাপিদের নতুন জোটে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর বেনেটের নিরাপত্তা জোরদার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এদিকে ডানপন্থিরা লাপিদের সমর্থকদের বাসার সামনে বিক্ষোভ করেছে, যাতে তারা সরকারে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। এ পরিস্থিতিতে উসকানিম‚লক বক্তব্য ও পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আরগামান। তার এই সতর্কবার্তা অনেক ইসরাইলিকেই অতীতের একটি ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে- ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেওয়ার জেরে ১৯৯৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইসহাক রবিনকে গুলি করে হত্যা করেছিল একজন অতি কট্টরপন্থি ইহুদি। ইসরাইলের বামপন্থিরা এরপর বছরের পর বছর ওই ঘটনার অন্যতম উসকানিদাতা হিসেবে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি অভিযোগের আঙুল তুলে আসছে। যদিও এই অভিযোগ পুরোপুরি নাকচ করে আসছেন নেতানিয়াহু, রবিনকে হত্যার ঘটনার নিন্দাও জানিয়ে আসছেন তিনি। লাপিদ ও বেনেটের আশা, তাদের এই ‘ঐক্যের সরকার’ ইসরাইলিদের গভীর রাজনৈতিক বিভাজনকে দ‚র করতে সাহায্য করবে এবং হিংসা দ‚র করবে। রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসরাইল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ