Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিবে ‘মিয়ানমার ঐক্য সরকার’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০২১, ১১:১৩ এএম

মিয়ানমার সামরিক জান্তাকে সরিয়ে ক্ষমতায় যেতে পারলে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সসম্মানে ফিরিয়ে নিয়ে তাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের একটি ছায়া সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের একটি ছায়া সরকার রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুটিকে ভবিষ্যত গণতান্ত্রিক মিয়ানমারে নিপীড়িত মুসলিম সম্প্রদায়ের নাগরিকত্ব এবং প্রত্যাবাসন প্রতিশ্রুতি দিয়ে জান্তা উৎখাতের সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছে।

মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) তাদের সম্ভাব্য সংখ্যালঘুনীতি নিয়ে তিন পৃষ্ঠার এক বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে সামরিক জান্তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে রোহিঙ্গাদের আহ্বান জানিয়েছেন এনইউজি।

এর পাশাপাশি, দেশটিতে বিদ্যমান ১৯৮২ সালের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে মিয়ানমারে জন্ম নেয়া সবাইকে বা বিশ্বের যেকোনো স্থানে জন্ম নেয়া বার্মিজ নাগরিকের সন্তানদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দানের অঙ্গীকার করেছে এনইউজি।

এনইউজি এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা রোহিঙ্গাদের সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে এই আন্দলনে অংশ নিতে আমাদের এবং অন্যদের সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করার আমন্ত্রণ জানাই।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির এনএলডি (ন্যাশনাল লি ফর ডেমোক্র্যাসি) সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এর পরপরই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মিয়ানমার। বিক্ষোভ দমনে চড়াও হয় সামরিক সরকারও। এতে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন আট শতাধিক মানুষ, বন্দি করা হয়েছে কয়েক হাজার।

এ অবস্থায় জান্তাকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে একটি ছায়া সরকার গড়ে তোলেন মিয়ানমারের রাজনীতিবিদরা, যার বেশিরভাগ সদস্যই এনএলডির। জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) নাম দিয়ে এটিকেই মিয়ানমারের বৈধ সরকার বলে দাবি করেন তারা।
যদিও মিয়ানমার জান্তা এনইউজি’কে ‘সন্ত্রাসী’ বলে ঘোষণা দিয়েছে।

সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকাকালে সু চির গণতান্ত্রিক সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরাতে খুব একটা আন্তরিক ছিল না। কার্যত, তারা ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটিই ব্যবহার করত না, এদের ‘রাখাইনে বসবাসকারী মুসলিম’ বলে উল্লেখ করতেন সু চি সরকারের নেতারা।

তবে সামরিক বাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চোখ খুলেছে ওই নেতাদের একাংশের। এনইউজির বিবৃতিতে তারা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর ‘গুণ্ডা’ সামরিক বাহিনীর সহিংসতা ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গত কয়েক দশক ধরে রাখাইনে চলা সহিংসতায় লাখ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হওয়ার বিষয়টি খুব ভালোভাবে বোঝে জাতীয় ঐক্য সরকার। আমরা এর জন্য গভীরভাব দুঃখিত। আজ সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার শিকার মিয়ানমারের সকল মানুষ রোহিঙ্গাদের দুর্দশার প্রতি সহানুভিূতিশীল।
২০১৭ সালে রাখাইনে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ব্যাপক গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে দেশে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে। এদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের চেয়ে ঐক্য সরকারকেই বাংলাদেশের সমর্থন করা উচিত বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।



 

Show all comments
  • Dadhack ৪ জুন, ২০২১, ১২:৩৮ পিএম says : 0
    If our country ruled by Qur'an then Burma never dare to oppressed Rohingya Muslim, because muslims are brother to each other. ইসলামে মুসলমানরা সকলেই ভাই-বোন --- এক বর্ণনায় আমাদের নবী [সা।] বলেছেন "(মুমিনগণ তাদের পারস্পরিক ভালবাসা এবং করুণায় এক দেহের মতো। যখন শরীরের এক অংশের অবস্থা খারাপ থাকে, তখন বাকী পুরো অংশ) শরীর অস্থিরতা এবং ঘুমের অভাবের সাথে এটিতে যোগ দেয় এবং এর চিকিত্সা নিয়ে ব্যস্ত থাকে একইভাবে, মুসলমানদের উচিত একে অপরকে সাহায্য করার জন্য ছুটে আসা)[বুখারী] " আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কাবার তওয়াফ করছিলেন এবং বললেন, তুমি কত আনন্দিত, আর তোমার সুগন্ধ কতটুকু! আপনি কতটা মহৎ, এবং আপনার পবিত্রতা কত মহান! কিন্তু যার হাতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, বলেন মুমিনের সম্পদ ও রক্তের পবিত্রতা, আপনার [কাবার] পবিত্রতার চেয়ে আল্লাহর দৃষ্টিতে অধিকতর, আর আমরা তাকে ভালভাবে চিন্তা করি না। (ইবনে মাজাহ)
    Total Reply(0) Reply
  • জাকারিয়া আল ইমতিয়াজউদ্দীন ৪ জুন, ২০২১, ২:০৫ পিএম says : 0
    ব্যবহার করার জন্য মুলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে , এরা যখন ক্ষমতায় ছিলো তখনই রোহিঙ্গাদের উপর সবচেয়ে বড় গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Tawhid Anwar Rumi ৪ জুন, ২০২১, ২:০৫ পিএম says : 0
    Good news!!..Hope this is a true speech from your side..Please take your our people back to your country.
    Total Reply(0) Reply
  • Akhter Jahid ৪ জুন, ২০২১, ২:০৫ পিএম says : 0
    এতোদিন আপনারা কোথায় ছিলেন? এখন ঠেলায় পড়ে মুলা ঝুলানো হচ্ছে!
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammod Ali Rasel ৪ জুন, ২০২১, ২:০৬ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের উচিত এদের সহায়তা করা,প্রয়োজনে রোহিঙ্গাদের অস্ত্র ও ট্রেনিং দিয়ে পাঠানো হোক
    Total Reply(0) Reply
  • Abdullah Amin ৪ জুন, ২০২১, ২:০৬ পিএম says : 0
    যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা না গেলে এই রোহিঙ্গারা দেশের বিরাট ক্ষতি করে ফেলবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Faiz Abdullah ৪ জুন, ২০২১, ২:০৬ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের উচিত মিয়ানমার নব সংগঠনকে গোপন মিশন চালিয়ে হলেও সাহায্য সহযোগিতা করা। কৌশলে তাদের থেকে সুবিধা নেয়া।
    Total Reply(0) Reply
  • Azad mullah ৪ জুন, ২০২১, ২:৫১ পিএম says : 0
    আমাদের বাংলাদেশের এখন ভালো ভাবে Smartley ধককতার সহিত কাজ করতে হবে রুহিংঙা বিষয়ে আন্তর্জাতিক ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভাবে আমাদের মিত্রদের কে নিয়ে কাজ করতে হবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ