Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাথরঘাটায় স্বামীর হাত-পা বেধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, ২ মাসেও হয়নি মামলা

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২১, ৬:৩৬ পিএম

বরগুনার পাথরঘাটায় গভীর রাতে স্বামীর হাত-পা বেধে লেপে মুড়িয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ২ মাস পেরিয়ে গেলেও মামলা হয়নি। ভুক্তভোগী ওই দম্পতি ন্যায় বিচারের আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, ইউপি চেয়ারম্যানের প্রভাবে মামলা নিচ্ছেনা পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, এমন ঘটনা নিয়ে কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি।

বুধবার সকাল ১০ টার সময় ভুক্তভোগী নারী পাথরঘাটায় সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এর আগে গত ১১ মার্চ দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ছোনবুনিয়া এলাকায় এঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তরা হলো, কালমেঘা ইউনিয়নের একই গ্রামের মো. আফাং মৃধার ছেলে ফোরকান (২২), ছোনবুনিয়া গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে রেজাউল (২৫) ও মোস্তফা গাজীর ছেলে কাইউম (২৪)।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কিছুদিন আগে ভুক্তভোগী নারী ওই এলাকায় বসবাস করছেন। ওই এলাকা নির্জন হওয়ায় স্থানীয় কিছু বখাটে প্রায়ই মাদক সেবন করে আসছিল। তাদের ঘরের সামনে মাদক সেবনে নিষেধ করলে তার কিছু দিন পরে গভীর রাতে ভুক্তভোগী নারীর ঘরে ঢুকে স্বামীর হাত-পা বেধে লেপ দিয়ে মুড়িয়ে রেখে স্ত্রীকে ঘরের মধ্যে থাকা দেশীয় অস্ত্র “দা” গলায় ধরে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, ওই দিন গভীর রাতে তাদের ঘরের সামনে এসে ডাক দিয়েই ঘরের মধ্যে ঢুকে গামছা দিয়ে স্বামী খলিলুর রহমানের হাত-পা বেধে ফেলে এবং লেপ দিয়ে মুড়িয়ে তার উপর বসে থাকে ৩ বখাটে। পরে একে একে ৩ জনেই তাকে ধর্ষণ করে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী খলিলুর রহমান জানান, ঘটনার সময় চিৎকার দেয়ার চেষ্টা করলে আমার ঘরে থাকা দা দিয়ে হত্যা করার হুমকি দেয়। তারা চলে গেলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানাই। তারা আমার স্ত্রীকে বাজারের মধ্যে ডেকে নিয়ে বিচার করতে চাইলে তখন অস্বীকৃতি জানাই ‘যে আমার ধর্ষিত স্ত্রীকে বাজারের মধ্যে নিয়ে বিচার করতে চায় তাই’। আমি বাজারে না গেলে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য সোহবার হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকল যুবকদের বলেন ‘সবাই ধর্ষণ করবি এবং সালিশে জরিমানা করে দিবো, সব শেষ হয়ে যাবে’। পরে পাথরঘাটা থানায় গেলে তারা একাধিকবার আমাদের বাড়িতে এসে তদন্ত করলেও কোন মামলা নেয়নি।

এবিষয়ে অভিযুক্ত কাইউম মুঠোফোনে বলেন, ধর্ষণের বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা। তবে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সোহরাব ডেকেছিল প্রতিপক্ষ না আসায় শালিস বৈঠক হয়নি। অভিযুক্ত ফোরকানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তার বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী বলেন, অন্যায় করলে শাস্তি পেতেই হবে।

কালমেঘা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন জানান, ’ধর্ষণের বিচার করার এখতিয়ার আমাদের কারোর নেই। তবে তাদেরকে ডেকেছিলাম তারা আমার অফিসে না আসায় কোন শালিস হয়নি।’

পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন বলেন, ’ঘটনার পরে আমরা সরেজমিনে গিয়েছি। ধর্ষণের স্থান যেখানে দেখানো হয়েছে ওই যায়গায় ৩জন মিলে ১জনকে ধর্ষণ করার সুযোগ দেখা যায়নি। প্রাথমিক ভাবে ধর্ষণের সত্যতা পাওয়া যায়নি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরগুনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ