নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মাহরেজ নাকি মহারাজ? প্রথম দর্শনে রিয়াদ মাহরেজের নামের বানানে এমন ভজকট পাকিয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে মঙ্গলবার রাতে আলজেরিয়ান ফরোয়ার্ড যা করলেন, তাতে ভবিষ্যতে ম্যানচেস্টার সিটির ইতিহাসে তাকে মহারাজের সম্মান দেওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয় আদৌ। জোড়া গোল করলেন, তাতে গতপরশু রাতে দল ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে হট ফেভারিট পিএসজিকে, নিশ্চিত করে ফেলেছে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালও।
অথচ মঞ্চটা হতে পারতো নেইমারেরও! চোটের কারণে কিলিয়ান এমবাপে না থাকায় তো পাদপ্রদীপের আলো কেড়ে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল তার কাছেই! কিন্তু তিনি সেটা কাজে লাগাতে পারলেন কই? বাঁ প্রান্তে অজস্র পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন, যেখানে একটা পাস খুলে দিতে পারতো দারুণ সুযোগ তৈরির সম্ভাবনার দুয়ার, কিন্তু তা আর হয়নি। নেইমার বল ধরে রেখেছেন অনেক বেশি সময়, পাস দেননি, পরে বল হারিয়েছেন। যার খেসারতটাও পিএসজি দিয়েছে ভালোভাবেই, পুরো ম্যাচে লক্ষ্যে শট ছিল না একটিও, যেখানে আগের দুই পর্বে বার্সা আর বায়ার্নের জালে জড়িয়েছিল যথাক্রমে পাঁচ আর তিন গোল।
অথচ শুরুটা বলছিল, সিটির মাঠ ইতিহাদে তুষারস্নাত রাতে ইতিহাসটা গড়তে যাচ্ছে পিএসজিই। তুষারের কারণেই হয়তো, গার্দিওলার দলের সহজাত পাসিং ফুটবলে হচ্ছিল কিছুটা সমস্যা, সঙ্গে প্রথম থেকেই সাঁড়াশি আক্রমণে সিটিজেনদের চেপে ধরেছিলেন মরিসিও পচেত্তিনোর শিষ্যরা। যার হাত ধরে ৭ মিনিটে একটা পেনাল্টিও পেয়ে বসেছিল দলটা। কিন্তু ভিএআর বাগড়া দেয় এতে; জানান দেয়, হাতে নয়, ক্রসটা বিপদমুক্ত করার সময় লেগেছে ওলেসকান্দার জিনচেঙ্কোর কাঁধে। ফলে পেতে পেতেও পেনাল্টিটা পাওয়া হয়নি নেইমারদের। এর মিনিট চারেক পর অনেকটা ধারার উল্টো দিকেই গোল পেয়ে বসে সিটি। গোলরক্ষক এডারসনের দারুণ এক বলের যোগানে পিএসজিকে হকচকিয়ে দিয়ে দ্রæতই আক্রমণে উঠে আসে কোচ পেপ গার্দিওলার দল। বাইলাইনের কাছ থেকে জিনচেঙ্কো বলটা বাড়ান কেভিন ডি ব্রুইনাকে। তার শট মারকিনিয়োস প্রতিহত করলেও ডান দিক থেকে ফিরতি সুযোগটা নেন মাহরেজ, শুরুর দশ মিনিটের ঝাপটার পর স্বাগতিক সিটি পায় গোলের দেখা।
আগের লেগটা সিটি জিতেছিল ২-১ গোলে। ফলে ফাইনালে যেতে হলে পিএসজিকে করতে হতো দুই গোল। নিজেদের মাঠে দ্বিতীয় লেগের এই গোলের ফলে সিটি সামগ্রিকভাবে এগিয়ে যায় ৩-১ ব্যবধানে। তবে তখনো দুই গোল করলে সুযোগ ছিল পিএসজির, খেলাটাকে অতিরিক্ত সময় আর সম্ভাব্য পেনাল্টি শুটআউটে নিয়ে যাওয়ার। মিনিট সাতেক পর সুযোগ অবশ্য পেয়েছিল পিএসজি। সেটা যে লক্ষ্যে থাকেনি, সেজন্যে অবশ্য নেইমারকে নয়, ভাগ্যকেই দুষতে পারেন কোচ মরিসিও পচেত্তিনো। আগের লেগে গোল করা মারকিনিয়োসের হেডারটা এদিন প্রতিহত হয় ক্রসবারে, গোলবঞ্চিত থাকে পিএসজি। এর মিনিট দুয়েক পর পাওয়া সুযোগটাও কাজে লাগাতে পারেনি ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা, সে যাত্রায় দোষী আনহেল ডি মারিয়া। এডারসনের ভুলে পাওয়া বলটা যে তিনি রাখতে পারেননি লক্ষ্যেই! বিরতির আগে সিটিও পেয়েছিল সুযোগ, কিন্তু মাহরেজের শটটা রুখে দিয়েছিলেন পিএসজি গোলরক্ষক কেইলর নাভাস।
বিরতির পরও নাভাসকে ব্যস্তিব্যস্তই রাখছিল সিটি, ৫৪ মিনিটে ফিল ফোডেনের করা দারুণ এক শট ঠেকান সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক। কিন্তু মিনিট দশেক পর আর পারেননি। প্রতি আক্রমণে উঠে আসা জিনচেঙ্কো বল দেওয়া-নেওয়া করেন প্রতিপক্ষ বক্সের একটু আগে, শেষে বলটা বাড়ান মাহরেজকে। অনেকটা ফাঁকায় থাকা তার সহজ ট্যাপ ইনে গোলটা করতে বেগই পেতে হয়নি তেমন। ম্যাচের নিয়তি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল তখনই।
তবে এত বড় ম্যাচে কিছুটা নাটক, উত্তেজনা না ছড়ালে যেন ষোলকলা পূরণ হতো না। সে অভাবটা পূরণ হয় ৬৯ মিনিটে। থ্রো ইন নিতে যাওয়া ডি মারিয়াকে বাঁধা দেন ফার্নান্দিনিও, তবে ডি মারিয়া যা প্রতিক্রিয়া দেখালেন তাতে দেখলেন লাল কার্ড। শুরুতে ধাক্কা মারলেও পরে পা দিয়ে মাড়িয়েই দেন। পান মার্চিং অর্ডার। তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন মার্কো ভেরাত্তি। পিএসজির মনোযোগটা যে নড়ে গেছে, বোঝা যাচ্ছিল তখনই, ফলে প্রত্যাবর্তনের গল্প আর লেখা হয়নি নেইমারদের। আগেরবারের ফাইনালের পর এবারের সেমিফাইনাল শেষেও সঙ্গী হয় একরাশ হতাশা। অন্যদিকে সিটি যেন আনন্দে রীতিমতো হাওয়ায় উড়ছে! হাজার হোক, নিজেদের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল বলে কথা!
ম্যানসিটি -২
পিএসজি-০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।