Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মুক্তিপণের জন্য ‘মাইকিং করা সেই খালু’র হাতে খুন হলো শিশু রিয়াদ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০২১, ৫:২৪ পিএম | আপডেট : ৬:৩০ পিএম, ৫ মে, ২০২১

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে রিয়াদ (৭) নামে এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আসামির দেওয়া তথ্য মতে, বুধবার ভোরে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি তালতলা মাদবর বাজার সংলগ্ন বিলের ডোবা থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ সুজন (২৮) নামে একজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার সুজন নিহত রিয়াদের দূর সম্পর্কের খালু হয়। অথচ তিনি রিয়াদকে খোঁজে পাওয়ার জন্য মাইকিংও করেছিলেন।

তিনি গাইবান্দার সদর থানার মিয়াপাড়া পূর্ব কমলয় গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শওকত জামিল গণমাধ্যমকে জানান, ২৮ এপ্রিল সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় শিশু রিয়াদের বাবা রাজু বাদী হয়ে একটি নিখোঁজের ডায়েরি করেন। এর আগে ২৪ এপ্রিল ইফতারের পর সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী সোনামিয়া বাজার রেল লাইন পূর্বপাড়া এলাকার ভাড়া বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হয় রিয়াদ। এরই মধ্যে অপরিচিত একটি মোবাইল নম্বর থেকে রিয়াদের বাবার মোবাইল ফোনে ছেলেকে ফিরে পেতে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে একটি ফোন আসে। পরে সেই মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরে আমরা তদন্ত শুরু করি। এক পর্যায়ে আমরা অপহরণকারীকে শনাক্ত করি।

তিনি জানান, বুধবার ভোরে সিদ্ধিরগঞ্জের চর সিমুলপাড়া এলাকা থেকে অপহরণকারী সুজনকে আটক করি এবং তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জালকুড়ির তালতলা বিলের একটি ডোবা থেকে শিশু রিয়াদের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত শিশু রিয়াদ সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরশিমুল পাড়ার স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতো। সে তার মা-বাবার কনিষ্ঠ সন্তান। আদমজী সোনামিয়া বাজার এলাকায় করিম মিস্ত্রির ভাড়া বাসায় বাবা-মায়ের সাথে থাকতো শিশু রিয়াদ। রিয়াদের গ্রামের বাড়ি গাইবান্দা জেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের মিয়াপাড়া গ্রামে বলে জানান তিনি। শিশু রিয়াদের বাবা দিনমজুর রাজু জানান, তার পরিবার এবং অভিযুক্ত আসামি উভয়ের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায়। কর্মসূত্রে তারা সিদ্ধিরগঞ্জে ভাড়াটিয়া হিসেবে আলাদা আলাদা ঠিকানায় বসবাস করেন।

রাজু বলেন, নিখোঁজের দিন বিকেলে আমার ভায়রা সুজন আমার দুই ছেলেকে দোকান থেকে কেক কিনে দেওয়ার জন্য নিয়ে যায়। পরে আমার দুই ছেলে কেক নিয়ে বাসায় আসে এবং আমার বড় ছেলে রিয়াদ আবার বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ হয়। আমরা তাকে না পেয়ে খোঁজাখুজি করতে শুরু করি। আমাদের সাথে সুজনও বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে। সুজন মাইক ভাড়া করে মাইকিংও করে। পরে অন্য একটি অপরিচিত ব্যক্তির ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে আমার কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কণ্ঠ শুনেই সুজনকে আমার সন্দেহ হয়। আমি সাথে সাথে পুলিশকে বিষয়টি জানাই।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানায়, শিশু রিয়াদ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আমরা একজনকে আটক করেছি। প্রাথমিকভাবে আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে আরো একজনের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছি। তবে তদন্তের কারণে আমরা এখনি তার নাম বলতে পারছি না। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ