নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
করোনার দিনগুলোতে আইপিএল যেন রোম শহরের পোড়া আর নিরোর বাঁশি বাজানোর গল্পের মতো। রোম যখন পুড়ছিল, নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। আর ভারতে করোনার সংক্রমণে জীবনই যখন সংশয়ে, বিনোদনের উৎস আইপিএল তখন চলছে দেদার খরচ করে। জৈব সুরক্ষাবলয়, ক্রিকেটারদের টিকা দেওয়া, নিয়মিত টেস্ট...কত কিছুই না লাগছে এখানে!
অথচ প্রতিদিনই সংক্রমণ আর মৃত্যুর নতুন রেকর্ড গড়ে যাওয়া ভারতের রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের আওয়াজ, হাসপাতালে আক্রান্তের স্বজনের আর্তনাদ আর শ্মশানগুলোতে পোড়ার গন্ধ। এর মধ্যে ব্যাট-বলের ঠোকাঠুকির শব্দ কি প্রাণ ছুঁতে পারে?
পক্ষে-বিপক্ষে অনেক যুক্তিতর্ক আছে। বিপক্ষেই বেশি। আর এই পক্ষ আরেকটু ভারি হলো ভারতের সাংসদ প্রকাশ কে রাঠোরকে নিয়ে। একসময়ে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা রাঠোর কর্ণাটকের সাংসদ। সরকারের প্রতি তার অনুরোধ, আইপিএল বন্ধ করে দিয়ে বেঙ্গালুরুর এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামকে করোনা সেন্টার বানানো হোক। করোনার কারণে এবার আইপিএলে ‘হোম’ ভেন্যু কোনো দলের নেই, তবে সাধারণত এই চিদাম্বরমকে ‘ঘর’ বানিয়ে আইপিএল খেলে বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্সদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।
করোনার কারণে ভারত দিশেহারা। এর মধ্যে এত আয়োজন করে আইপিএল অনুষ্ঠান নিয়ে ভারতে, ভারতের বাইরে অনেক সমালোচনা আছে। এরই মধ্যে বিদেশি অনেক ক্রিকেটার ভারত ছেড়ে দেশে ফিরে গেছেন। আইপিএল কেন স্থগিত করা হচ্ছে না, মৃত্যুর মিছিলের মধ্যে ক্রিকেট-উৎসব কেন হচ্ছে, তা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে চারিদিকে। এর মধ্যে বিধানসভায় কংগ্রেস দলীয় সদস্য প্রকাশ কে রাঠোর খোলা চিঠিতে লিখেছেন, সরকার যেন ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে (বিসিসিআই) নির্দেশনা দেয় আইপিএল বন্ধ করার জন্য।
পাশাপাশি কর্ণাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (কেএসসিএ) কাছে আহŸান জানিয়েছেন চিদাম্বরম স্টেডিয়ামকে করোনা সেন্টার বানানোর। কেএসসিএকে অবশ্য ধুয়েই দিয়েছেন তিনি, ‘আশ্চর্য লাগছে যে কেএসসিএ এখনো বেঙ্গালুরুতে আইপিএলের ম্যাচ চালিয়ে যাচ্ছে! কেএসসিএ কি ভুলে গেছে যে ভারতের করোনা সংক্রমণের দিক থেকে বেঙ্গালুরু এখন সবার ওপরে? কেএসসিএর চিন্নাস্বামী (চিদাম্বরম) স্টেডিয়ামকে কি বিশাল একটা কোভিড সেন্টারে রূপান্তর করা যায় না!’
পাশাপাশি তিনি এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে ভারতের মেয়েদের হকি দলে এখন সাতজন করোনায় আক্রান্ত। আইপিএলের পাশাপাশি এসবও বন্ধ করতে অনুরোধ সাংসদের, ‘কর্ণাটক সরকারের উচিত সংক্রমণের এই উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সব ধরনের অনুশীলন ও খেলাসংশ্লিষ্ট সবকিছু বন্ধ রাখা।’
ভারতের জার্সিতে কখনো খেলা না হলেও রাঠোর কর্ণাটক রাজ্যদলের হয়ে ১৪টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। তা একদিকে তার অনুরোধের খবরটি প্রকাশ করেছে, তার পাশাপাশি নিজেদেরও একটা কাজের ব্যাখ্যা দিয়েছে ভারতীয় দৈনিক নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। করোনার ঊর্ধ্বগতির মধ্যে আইপিএলের কাভারেজ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পত্রিকাটি। এরপর থেকে নিজেদের ছাপা সংস্করণে আইপিএলের কাভারেজের জন্য নির্ধারিত জায়গায় মহামারির ছবি ও অন্যান্য খবর দেওয়া হচ্ছে।
এমন সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন পত্রিকাটির সম্পাদক, ‘এই করুণ সময়ে জৈব সুরক্ষার এত স্তরের বলয়ের মধ্যে ভারতে এমন একটা ক্রিকেট-উৎসব চলতে থাকাকে আমাদের কাছে পুরোপুরি অসামঞ্জস্যপ‚র্ণ মনে হচ্ছে। এখানে সমস্যাটা খেলা ঘিরে নয়, এর সময়কে ঘিরে। ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও বোঝা উচিত যে আমরা এমন একটা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, যেটা আগে কখনো দেখিনি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।