নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
লাশের মিছিল যেখানে, সেখানে আইপিএলের আলোর রোশনাই যেন বড্ড মেনানান। তবে মুখফুটে যেন কেউই কিচ্ছুটি বলছেন না! সেই অব্যক্ত প্রশ্নটিই তুললেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। করোনার এই সময় ভারতে আইপিএল কেন, সাবেক অস্ট্রেলীয় তারকার মনে প্রশ্ন এটিই। একদিকে মৃত্যু, অন্যদিকে কীভাবে আইপিএল চালিয়ে যাওয়া যায়, সরাসরি না হলেও গিলক্রিস্টের টুইটারে রাখা প্রশ্নটাই এখন অনেকের মনে ঘুরপাক খেয়ে চলেছে।
কয়েক দিন ধরেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেরবার ভারত। মৃত্যু বেড়ে গেছে অনেক। গোটা ভারতে বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে করোনায় শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীদের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। অক্সিজেনের অভাব সর্বত্র। করোনা ঠেকাতে বিভিন্ন রাজ্য কিংবা শহরে চলছে কারফিউ। লকডাউন দিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহতার হাত থেকে ভারতবাসীকে রক্ষার। কিন্তু এর মধ্যেও আইপিএল চলছে ভারতজুড়ে। ব্যাপারটি অনেকের মনে প্রশ্ন জাগিয়ে তুললেও সরাসরি এটি নিয়ে কেউই কথা বলছিলেন না। গিলক্রিস্টের টুইটে একাত্মতা ঘোষণা করছেন অনেক নেটিজেনই। গিলক্রিস্টের মনে প্রশ্ন, ‘এ মুহ‚র্তে ভারতে কোভিড পরিস্থিতি খুবই বাজে। এ অবস্থায় আইপিএল চালিয়ে যাওয়াটা কতটুকু ঠিক? নাকি এই আইপিএলই কঠিন সময়ে ভারতের মানুষকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে! যেটিই হোক ভারতীয়দের জন্য আমার শুভকামনা সব সময়ই থাকবে।’
গিলক্রিস্টের এ মন্তব্যে অনেকেই একাত্মতা ঘোষণা করে বিসিসিআইয়ের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের সাফ কথা, এত মৃত্যু, এত আহাজারির মধ্যে আইপিএল আয়োজনের ব্যাপারটি খুবই গৌণ। মৃত্যুর মিছিলের মধ্যে ক্রিকেট উপভোগ করাটা যে বেশ কঠিন, সেটাও বলছেন নেট নাগরিকেরা। কোনো ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার বা ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট কেউ কেন এমন প্রশ্ন তুলছে না, সেটি নিয়েও সমালোচনা করছেন তারা।
তবে অপর একটি দলের মতে, আইপিএল এই কঠিন সময়ে ভারতীয়দের কিছুটা দম ফেলার সুযোগ করে দিচ্ছে। ভারতের অনেক রাজ্যেই এ মুহ‚র্তে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও চলছে রীতিমতো কারফিউ-পরিস্থিতি। মানুষ ঘরবন্দী। এমন একটা শ্বাসরুদ্ধকর সময়ে আইপিএলের ম্যাচগুলো টেলিভিশনে দেখে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলছে তাদের।
তবে গিলক্রিস্টের টুইটকে কেন্দ্র করে আইপিএল নিয়ে সমালোচনাই বেশি। ভারতে যখন করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে, সংক্রমণ রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে, মানুষ হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে হাহাকার করছে, সেখানে বিনোদনম‚লক ক্রিকেট আইপিএল কতটা যুক্তিসংগত, সেটি অনেকেই বলছেন। এই দলের মতে, গিলক্রিস্ট যেটি বলেছেন, সেটি বলার সাহস ভারতের কোনো ক্রিকেটারেরই কখনো হবে না!
তবে এই কাজটিই করে দেখিয়েছে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম। আইপিএল বয়কটের ঘোষণা দিয়ে আলোচনার জন্ম দেওয়া এই গণমাধ্যম হল নিউইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। গণমাধ্যমটির অনলাইন, প্রিন্ট কোনো সংস্করণেই থাকবে না আইপিএলের কভারেজ। এমনকি তাদের সহ-প্রচারমাধ্যমগুলোও আইপিএলের খেলার খবর বয়কট করবে। নিজেদের এমন সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তিও দেখিয়েছে তারা। পাঠকদের উদ্দেশে দেওয়া এক ঘোষণা বার্তায় বলে হয়েছে, ‘ভারতে করোনার সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি চলছে। মানুষ তাদের জীবন বাঁচানোর লড়াই করছে। এই দুর্যোগ সামলানো চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের খবর পাঠাচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেখা দিয়েছে ওষুধ ও অক্সিজেনের ঘাটতি। হাসপাতালগুলোতে আসন খালি নেই বলে নতুন রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না।’
বর্তমান পরিস্থিতিকে মর্মান্তিক আখ্যায়িত করে আরও বলা হয়েছে, ‘এমন মর্মান্তিক সময়ে ভারতে চলছে ক্রিকেট উৎসব। জৈব সুরক্ষা বলয়ে খেলা আয়োজন করা হয়েছে। খেলা নিয়ে কেনো সমস্যা নেই, সমস্যা খেলা আয়োজনের সময় নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল থেকে আইপিএলের খবর প্রচার থেকে বিরত থাকবে নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। মানুষের জীবন ও মৃত্যুর দিকে মনোযোগ দেওয়ার ছোট্ট একটি প্রয়াস এটি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।