পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
করোনার এই সংকটকালে মাঠে-ময়দানে রাজনীতির উত্তাপ না থাকলেও ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের কথার রাজনীতি বন্ধ নেই। এখন রাজনীতির প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপ। ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নেতাকে লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার ক্ষেত্রে মানুষকে বিরোধীদলের উসকানি দেয়ার অভিযোগ করতে দেখা যায়। প্রধান বিরোধী দলের পক্ষ থেকে করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের অব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার পাল্টা অভিযোগ আনা হয়েছে। রাজনীতির বিষয়টি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, দেশের সংকটকালেও যেন পরস্পরবিরোধী বোলচাল দিতে হবে। অথচ করোনায় সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে টানাপড়েনের এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষের এখন রাজনীতি নিয়ে ভাবার সময় নেই। তারা জীবন বাঁচাতে মরিয়া। তাদের এখন এমন অবস্থা যে, কোনো রকমে জানটুকু নিয়ে দিন গুজরান করতে পারলেই চলে। সাধারণ মানুষ এখন এমনই পেরেশানির মধ্যে আছে যে, ‘জান বাঁচানো ফরজ’ তাদের কাছে। এ ছাড়া আর কোনো দিকে তাকানোর সুযোগ নেই। সাধারণত আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ রাজনীতি নিয়ে তখনই আলাপ-আলোচনা ও তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হয়, যখন তাদের জীবনযাপনে টানাপড়েন কম এবং সহনীয় পর্যায়ে থাকে। বর্তমানে তাদের এই চিন্তায় বিরাট পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। রাজনীতি নিয়ে আলাপ করার মতো মানসিক অবস্থা তাদের নেই। এখন বেশিরভাগ মানুষেরই সংসারের চাকা সচল রাখা দায় হয়ে পড়েছে। বাজারে গেলে মাথা গরম হয়ে যায়। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কেবল বাড়ছেই। বাজারে গিয়ে তারা হিসাব মিলাতে পারে না। এ নিয়ে সরকার ও বিরোধীদলগুলোর কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। এই যে রমজানের আগে এবং রমজানে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে রয়েছে, তা নিয়ে সরকারের তেমন বিচলন আছে বলে মনে হয় না। নামকাওয়াস্তে টিসিবির পণ্য বাজারে ছেড়ে দিয়ে যেন দায়িত্ব শেষ করছে। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট সাফ করে দিচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সরকার বরাবরই ব্যবসায়ীবান্ধব হিসেবে পরিচিত। ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সে আগে দেখে। তারা ইচ্ছামতো জিনিসপত্রের দাম বাড়ালেও তা মেনে নেয়। মাঝে মাঝে একটু ধমক দিয়ে থেমে যায়। এ ধমককে ব্যবসায়ীরা আমলেই নেয় না। তারা তাদের মতো করে জনগণের অর্থ লুটে নিচ্ছে। এ নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোরও কোনো বিকার নেই। তারা জনগণের হয়ে জোরালো কোনো প্রতিবাদও করছে না।
দুই.
সাধারণ মানুষকে রাজনীতি বিমুখ করে তোলার ফলাফল ভালো হয় কিনা, তা নিয়ে বিস্তর তর্ক-বিতর্ক হতে পারে। যারা রাজনীতি বিমুখ করে তুলতে চান, তারা নিশ্চিতভাবেই বলবেন, সাধারণ মানুষের রাজনীতি নিয়ে ভাবার দরকার কি! এজন্য আমরা আছি। এ ধরনের কথাবার্তা যে, দায়িত্বশীলতার পরিচয় বহন করে না, তা বুঝতে চায় না। এ ধরনের কথা কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাবধারীরা বলে থাকেন। তারা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য সাধারণ মানুষকে জোর করে চুপ করিয়ে রাখেন। চুপ করিয়ে রাখা জায়েজ করার জন্য উন্নয়নের ধোঁয়া তোলেন। উন্নয়নের দোহাই দিয়ে জনগণের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানাভাবে তাদের পকেট ছাফা করার ব্যবস্থা করেন। যুক্তি হিসেবে দাঁড় করানো হয়, উন্নয়ন করতে হলে অর্থ দিতে হবে। নিজেদের অর্থে উন্নয়ন করতে হবে যাতে কারো কাছে হাত পাততে না হয়। জনগণ যে উন্নয়নের চাপে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছে, সেদিকটি উপেক্ষিত থেকে যায়। উন্নয়ন হোক বা না হোক কিংবা ফুটবল খেলায় গোল হোক বা না হোক রেফারির বাঁশি বাজানোর আগেই গোয়ারের মতো ‘আমরা জিতেছি, আমরা জিতেছি’ বলে লাফাতে থাকেন। উন্নয়নের এই ফানুস জনগণের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। এসব উন্নয়ন করতে গিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ যে প্রান্তিক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, তা মোটেও বিবেচনায় নেয়া হয় না। এই করোনাকালে দেশের অর্থনীতি এবং উন্নয়নের সূচকটি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তা নিয়ে এখন তেমন কোনো কথা শোনা যায় না। জিডিপি এবং মাথাপিছু আয়ের হিসাবটিও সাড়ম্বরে তুলে ধরা হচ্ছে না। তুলে না ধরলেও সাধারণ মানুষের আর্থিক দুর্দশা দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না এ সূচক নিম্নগামী। দেশের অর্ধেক মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। কোটি কোটি মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। অনেকের আয় কমে গেছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত মানুষের মধ্যে হাহাকার চলছে। এই বিপুল সংখ্যক মানুষ এখন জীবনসংগ্রামে ব্যতিব্যস্ত। যারা আয় করছে, তারা আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্য খুঁজে পাচ্ছে না। সঞ্চিত অর্থ ভেঙে খেতে খেতে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। তাদের এ অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে এক জীবনে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। অন্যদিকে সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া পেতে পেতে তাদেরকে ইহলোক ত্যাগ করতে হবে। জীবনের তাকিদে এখন তাদের কেবল দৌড়াতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের এই নাজুক অবস্থার মধ্যেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
তিন.
জীবনে যখন অভাব-অনটন লেগে থাকে এবং ক্রমাগত বাড়তে থাকে, তখন কারো পক্ষে মেজাজ ঠিক রাখা সম্ভব নয়। এই মেজাজ খারাপের কারণ যদি সরকারের আকার্যকর ভূমিকার কারণে হয়, তখন তা সহাও যায় না, বলাও যায় না। মানুষের এই অব্যক্ত বেদনা একসময় ক্ষোভে পরিণত হয়। বহু মানুষের ভেতর যদি ক্ষোভ দানাবেঁধে উঠে, তবে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সমাজে দেখা দিতে বাধ্য। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, সন্ত্রাসসহ পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ কমে সমাজ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। যাদের ক্ষমতা আছে, তারা অন্যেরটা কেড়ে নিয়ে নিজের অভাব পূরণ করে। এর অসহায় শিকার হয় সাধারণ মানুষ।
আবার প্রভাবশালীদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই শুরু হলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়। যারা সাধারণ মানুষ তাদের যখন ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ তখন সংসারে চরম অশান্তি দেখা দেয়। অশান্তি থেকে অনেকে আত্মহননের মতো পথও বেছে নেয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সমাজে বেশির ভাগ আত্মহননের মূল কারণ পারিবারিক অশান্তি। এই অশান্তির পেছনের কারণ অর্থনৈতিক টানাপড়েন। তার পেছনের কারণ সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অন্যতম। এর উপর বছর যেতে না যেতেই বাসাভাড়া, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির মূল্যবৃদ্ধি তাদের কাছে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দেয়। এক হিসাবে দেখা গেছে, নগরে যারা ভাড়া বাসায় থাকেন, তাদের আয়ের সত্তুর ভাগই খরচ হয়ে যায় বাসা ভাড়া দিতে গিয়ে। ১০০ টাকার মধ্যে ৩০ টাকায় খাওয়া-দাওয়া, সন্তানের পড়ালেখা, আত্মীয়তা ও সামাজিকতা রক্ষা করা কি সম্ভব? বিশেষ করে যার আয় সীমিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন, তার পক্ষে সংসার চালানো কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠে। অধিকাংশ মানুষের এই সমস্যার কথা সরকার চিন্তা করে বলে মনে হয় না। যদি চিন্তা করত, তবে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করত। এছাড়া প্রায় সবক্ষেত্রে ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ের প্রক্রিয়াতো রয়েছেই। মানুষের ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে সমস্যা হতো না, যদি তাদের আয়-রোজগারে ভ্যাট-ট্যাক্স দেয়ার মতো অবস্থা থাকত। এই যে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, এটা যে কত বড় শুভংকরের ফাঁকি, তা ইতোমধ্যে অর্থনীতিবিদরা বিশ্লেষণ করে দেখিয়ে দিয়েছেন। তারাই বলছেন, যে জিডিপি প্রবৃদ্ধির উন্নতির কথা বলা হচ্ছে, এক সময় তা মুখ থুবড়ে পড়বে। কারণ, এর সাথে সিংহভাগ সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির যোগসূত্র নেই। ভারতে এখন যেমনটি হচ্ছে। দেশটির জিডিপি সরকার এতটাই উচ্চে দেখিয়েছিল যে, এখন তার কঙ্কাল অবস্থা দেখা যাচ্ছে। জিডিপি ৩ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। আমাদের দেশেও এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। সরকার তার উন্নয়ন দেখানোর জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি এখন উচ্চ হারে দেখাচ্ছে বটে, তবে একটা সময় তা ভারতের মতোই হতে পারে। নিশ্চিতভাবেই সরকার অর্থনীতিবিদদের এই মতের সাথে একমত পোষণ করবে না। না করাই স্বাভাবিক। কারণ, কোনো সরকারই তার দেখানো সাফল্য ম্লান করতে চায় না। বাস্তবতা হচ্ছে, সরকারের এই সাফল্যের মধ্যে সাধারণ মানুষ ভাল নেই। তার উপর করোনা অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন শূন্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ধারদেনা করে যে চলবে, সে পথও শেষ হয়ে যাচ্ছে। একজন মানুষ কত ধার করতে পারে? তারপরও মানসম্মান বিকিয়ে শুধু জীবন চালাতে ধার চায়। আর কাছের লোকজন কতই বা ধার দিতে পারে? দেনাদার ব্যক্তি ধার পরিশোধ করতে পারবে কিনা বা ধার শোধ করার মতো অবস্থায় যেতে পারবে কিনা, এ সন্দেহ পাওনাদারের মধ্যে কাজ করে। ফলে এক সময় ধার দিলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে এড়িয়ে যায়। টানাপড়েনের জীবনে এরকম ধার করে চলা মানুষের সংখ্যা এখন কত তার কোনো জরিপ নেই। জরিপ করা হলে, দেখা যাবে অসংখ্য মানুষ ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। অনেকের ধার করার পথও বন্ধ হয়ে গেছে। দুঃখের বিষয়, গত বছর মে মাসে করোনার সময় সরকার হতদরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারকে এককালীন নগদ আড়াই হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেয়া শুরু করে। এই তালিকায় অনেক সচ্চল লোকও ঢুকে পড়ে। তারপরও এ প্রণোদনার অর্থ পুরোপুরি ৫০ লাখ পরিবারের কাছে পৌঁছেনি। ৩৬ লাখ পরিবার পেয়েছে। এছাড়া দরিদ্র মানুষের প্রণোদনার প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে। দেখা যাচ্ছে, প্রণোদনার অর্থ নিয়েও নয়-ছয় হয়েছে এবং হচ্ছে। এ যদি হয় পরিস্থিতি, তাহলে সরকারের দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচি যে ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে, তা বোধকরি বুঝিয়ে বলার অবকাশ নেই। অথচ এ সময়ে দরিদ্র মানুষের পাশে সরকারের সবচেয়ে বেশি করে দাঁড়ানো প্রয়োজন। তা নাহলে, বিশাল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অভাব-অনটনের বোঝা নিয়ে দেশের অর্থনীতি কোনোভাবেই চলতে পারবে না। কেউ কেউ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, প্রশাসনে যারা চাকরি করছে, তারা ভাল থাকলেই সরকারের জন্য স্বস্তি। সাধারণ মানুষের ভালো থাকার প্রয়োজন নেই। তাদের আয় বৃদ্ধি মানে জনসাধারণের আয় বৃদ্ধি। কোনো দেশের সরকারের আচরণে যদি এমন মনোভাব দেখা যায়, তবে সে দেশের সাধারণ মানুষ ভালো থাকতে পারে না।
চার.
জনবান্ধব কোনো সরকার সাধারণ মানুষের জীবনযাপন কঠিন করে তুলতে পারে না। তার কাজ হচ্ছে, মানুষের জীবনযাপন সহজ করে দেশ পরিচালনা করা। জনগণের কোথায়, কি সমস্যা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট করে সমাধান করাই তার কাজ। সুশাসকের আমলে জিনিসপত্রের দাম যখন-তখন বৃদ্ধি কল্পনাও করা যায় না। পাকিস্তান, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ রমজান উপলক্ষে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দিয়েছে। শুধু মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবেই নয়, উন্নত বিশ্বের অনেকে দেশে তাদের স্ব স্ব ধর্মীয় উৎসবের সময় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে ক্রেতাদের সন্তুষ্ট করা হয়। এটা সেসব দেশের সুশাসনের নিদর্শন তুলে ধরে। অথচ আমাদের দেশে রমজান মানেই ব্যবসায়ীদের সোনালী দিন। ব্যবসা করার চরম মৌসুম। যেমন খুশি তেমন বাড়িয়ে একমাসেই সারা বছরের আয় করে নেয়।
এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে ধর্মীয় চেতনা ও সহনশীলতা কাজ করে না। এরকম অরাজকতা আর কোনো দেশে দেখা যায় না। আমরা শায়েস্তা খাঁর আমলের কথা স্মরণ করি এ কারণে যে, তিনি প্রজাদের অতি অল্প দামে জিনিসপত্র ভোগ করার ব্যবস্থা করেছিলেন। জনগণের আয়ের সাথে ব্যয়ের সমন্বয় করেছিলেন। এখন আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে অহরহ বলা হচ্ছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। তবে এ ক্ষমতা কত বেড়েছে, তার হিসাব দেয়া হয় না। করোনার এ সময়ে ক্রয়ক্ষমতার পরিস্থিতি কি, তা বলা হচ্ছে না। এটা স্বাভাবিক, বাঁচতে হলে মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, তারা প্রয়োজনের তুলনায় কতটা কিনছে? প্রয়োজনীয় এক কেজির পরিবর্তে আধা কেজি কিনে কোনো রকমে প্রয়োজন মেটাচ্ছে কিনা? জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সাথে একজন মানুষকে যে বাড়তি অর্থ গুণতে হচ্ছে, এ অর্থ সে জোগাড় করতে পারছে কিনা, এ বিষয়টি সরকার ভাবছে না। সরকার যদি মনে করে, জিনিসপত্রের দাম বাড়বেই, সাধারণ মানুষ তা কীভাবে কিনবে তা দেখার দায়িত্ব তার নয়, তাহলে বলার কিছু নেই। বলার আছে এটুকুই, এ ধরনের মনোভাব কোনো দায়িত্বশীল ও জনবান্ধব সরকারের হতে পারে না।
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।