Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকা ছাড়ছে ঘরমুখী মানুষ : মহাসড়কে যানজট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০২১, ২:৪৪ পিএম

আগামীকালই কঠোর লকডাউনে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য এমন বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। প্রথম দফায় দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় দফায় বিধিনিষেধ আরও কঠোরভাবে মনিটরিং করার কথা রয়েছে। আর এমন বন্দিদশা যেন মানতেই নারাজ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শ্রমজীবীরা। তাই যে যেভাবে পারছে সেভাবেই ঢাকা ছাড়ছে। যানবাহনের ভিড়ে ঢাকার প্রবশেপথসহ সবগুলো মহাসড়কে ভিড়। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
দূরপাল্লার যান বন্ধ থাকলেও ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ ব্যক্তিগত যানবাহনে করে গ্রামের বাড়ি দিকে ছুটছে তারা। যে যেভাবে পারছে ঝুঁকি নিয়ে সেই গ্রামের বাড়ির দিকে ছুটছে। আজ সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। কোথাও কোথাও তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট। অনেকটা ঈদের ছুটির মতো যানবাহনগুলো গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করছে।
এদিকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে।
যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় এখন এই ঘাটে। এই রুটে বাড়ি ফিরছে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। মঙ্গলবার শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ বলেছে, ফেরিতে যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এমন চাপ শুধু ঈদের সময়ই দেখা যায়।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গড়েছে মৃত্যু ও আক্রান্তের রেকর্ড। সাভারে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন নমুনা দাতাদের ৩৭.৩৬ শতাংশ। এমন স্থান থেকে ট্রাকে করে যাওয়ায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে গ্রামেও।
আজ মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে সাভারের বিভিন্ন মহাসড়কে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ট্রাকে গাদাগাদি করে গ্রামে ফিরতে দেখা গেছে বসবাসরত মানুষের। এসব ট্রাকে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তবুও ট্রাকের পেছনে দৌড়াচ্ছেন ঘরমুখী মানুষ। সুযোগ হলেই উঠে পরছেন ট্রাকে। তাদের দাবি লকডাউনে আয় না হওয়ায় তারা গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন।
ট্রাকে করে গ্রামে ফিরছেন আবেদ আলী। তিনি বলেন, ‘লকডাউনে না খেয়ে থাকলেও আমাদের খবর কেউ রাখেন না। আমরা তো আর না খেয়ে থাকতে পারব না আর কাজ করতেও পারব না; এখানে থাকলে গ্রাম থেকে টাকা নিয়ে চলতে হয়। গ্রামেও ঋণের বোঝা বাড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকি হলেও গ্রামই আমাদের জন্য ভালো।’
অপর যাত্রী বক্কর বলেন, ‘সকাল থেকেই রাস্তায় আছি, গাড়ি পাচ্ছিলাম না। শেষ পর্যন্ত ৮০০ টাকা ভাড়ায় ট্রাকে উঠতে বাধ্য হলাম। বাড়িতে তো যেতে হবেই, এখানে থাকলে খাবো কী? গ্রামে গেলে বাসা ভাড়া লাগবে না। দিনমজুরিতে কাজও করার সুযোগ আছে। তাই গ্রামে ফিরতেই হবে।’
ট্রাকচালক সুজন বলেন, ‘ভাই লকডাউনের আগের কয়েক দিনই একটু যাত্রী হয়। আমরা লকডাউনের মধ্যে খাবো কী বলেন। এখন কয়টা টাকা কামাইতে পারলে লকডাউনে দু’বেলা দুমুঠো খেতে পারব। যাত্রীদেরও যাওয়া দরকার আর আমাদের কয়টা টাকা। আমরা তো কারও ক্ষতি করছি না। এতো লোক নিয়েও তো খুব বেশি টাকা থাকে না। বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিতে হয়।’
এ ব্যাপারে সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক সাজ্জাদ করিম বলেন, আমরা কঠোর মনিটরিংয়ে আছি। ট্রাক কিংবা পিকআপে যাত্রী থাকলে আমারা নামিয়ে দিচ্ছি। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে কাজ করে চলেছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকা ত্যাগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ