মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
এবার ভারতের বারাণসীতে জ্ঞানবাপী মসজিদ কমপ্লেক্সের ভেতর কোনও মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল কি না, শহরের একটি দেওয়ানি আদালত তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়ার পর সেই রায় নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
একজন হিন্দু আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলেছে, কোনও মন্দির ভেঙে ওই মসজিদ নির্মিত হয়েছিল কি না ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ তা সমীক্ষা করে দেখবে এবং সমীক্ষার খরচ উত্তরপ্রদেশ সরকারকে বহন করতে হবে।
কিন্তু ভারতের মুসলিম নেতারা অনেকেই মনে করছেন কোর্টের এই রায় অসাংবিধানিক এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ভূমিকাও আগে থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ।
এই রায় অযোধ্যার পর ভারতে আর একটি মন্দির-মসজিদ বিবাদ নতুন করে উসকে দেবে বলেও অনেক পর্যবেক্ষক আশঙ্কা করছেন।
ভারতের সুপ্রাচীন শহর বারাণসী বা কাশী, যা এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সংসদীয় কেন্দ্রও বটে, সেখানে হিন্দুদের কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ও মুসলিমদের জ্ঞানবাপী মসজিদ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে বেশ কয়েকশো বছর ধরে।
দুই ধর্মের এই দুটি উপাসনালয়ের মাঝে অভিন্ন দেওয়াল পর্যন্ত আছে।
হিন্দুরা অনেকে বিশ্বাস করেন, মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের হুকুমেই দুহাজার বছরের প্রাচীন কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একটা অংশ ভেঙে ফেলে মসজিদ নিমির্ত হয়েছিল।
সেই জমি হিন্দুদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতেই বছরদেড়েক আগে আদালতে পিটিশন দাখিল করেন আইনজীবী বিজয়শঙ্কর রাস্তোগি।
মি রাস্তোগি বলছেন, "পুরো জ্ঞানবাপী পরিসর জুড়েই আগে স্বয়ম্ভূ বিশ্বেশ্বর শিবের জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির ছিল।"
"ধর্মীয় বিদ্বেষের কারণে ১৬৬৯ সালে বাদশাহ আওরঙ্গজেব সেই মন্দির ভেঙে ফেলার ফরমান জারি করেন, তবে সেই ফরমানেও কোথাও মসজিদ গড়ার কথা বলা ছিল না।"
সিভিল কোর্ট তার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এখন রায় দিয়েছে, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি মসজিদ চত্ত্বরের ভেতর সমীক্ষা চালিয়ে দেখবে সেখানে আগে কোনও মন্দির ছিল কি না - আর সেই কমিটির দুজন সদস্য হতে হবে মুসলিম।
কিন্তু জ্ঞানবাপী মসজিদ কর্তৃপক্ষ আদালতের কাছ থেকে এ ধরনের রায় আশা করেননি।
সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য মহম্মদ তৌহিদ খানের কথায়, "সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের জন্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সার্ভে কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ এই পর্যায়ে সমীচিন হয়নি বলেই আমরা মনে করি।"
"তবু আদালতের রায়কে আমরা সম্মান করব, এবং সামনে যে ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সেটাও নেব।"
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য জাফরইয়াব জিলানিও প্রশ্ন তুলেছেন, জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে একটি মামলা যখন এলাহাবাদ হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে এবং হাইকোর্ট সেখানে তাদের রায় মুলতুবি রেখেছেন - সেখানে কীভাবে সিভিল জজ এই আদেশ দিতে পারেন?
তা ছাড়া ভারতে ১৯৯১ সালে পাস হওয়া ধর্মীয় উপাসনালয় আইনও বলে, অযোধ্যা ছাড়া দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হবে। বারাণসী সিভিল কোর্টের নির্দেশ সেই রায়েরও লঙ্ঘন বলে অনেকে মনে করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।