মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অবকাঠামোগত পরিকল্পনাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন এবং নবায়নযোগ্য শক্তির সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতির সাথে সাথে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা আরো বেশি সম্ভাবনা লাভ করেছে এবং আবহাওয়া পরিবর্তন অগ্রাধিকার হিসাবে পরিগণিত হতে যাচ্ছে। এর ফলে দেশটির খনিজ সরবরাহের উৎসগুলি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে।
গত ৬০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রয়োজনীয় খনিজের ব্যবহার দ্বিগুণ করেছে এবং সেগুলো সরবরাহের জন্য দেশটি অন্যান্য দেশগুলোর ওপর শতভাগ নির্ভরশীল। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চিহ্নিত ৩৫টি দুষ্প্রাপ্য খনিজের মধ্যে কমপক্ষে ২৮টির ৫০ শতাংশ আমদানি করা হয়েছে।
তারা কম-কার্বনযুক্ত প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় লিথিয়াম, কোবাল্ট, গ্রাফিন, ইন্ডিয়াম এবং অন্যান্য দুষ্প্রাপ্য খনিজগুলির ব্যবহার পরিমাণ ২০৫০ সালের মধ্যে ১শ’ শতাংশ থেকে ১ হাজার শতাংশ পর্যন্ত বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ অনুমান তাদের নিজস্ব হিসাব সম্পর্কিত। তবে এটি ব্যাটারি এবং বৈদ্যুতিক মোটর, ক্ষেপণাস্ত্র গাইডেন্সিং সিস্টেম, যোগাযোগ এবং এমনকি উপগ্রহের মতো সামরিক প্রয়োজন, শিল্পকারখানার চাহিদা এবং মার্কিন খনি খনন হ্রাসের সাথে সমনি^ত হয়ে মার্কিন সরবরাহ সঙ্কটের একটি চিত্র তুলে ধরে।
উদাহরণস্বরূপ, একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান তৈরির জন্য কমপক্ষে ৯শ’ ২০ পাউন্ডের বিরল খরিজ উপাদানের প্রয়োজন যা মূলত চীন থেকে আসে। আমদানির ওপর নির্ভরশীলতার এ স্তরটি নিয়ে মার্কিন সরকার তাই উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্রে এখন বিরল খনিজ সরবরাহের ব্যবস্থা নিয়ে একটি পর্যালোচনা চলছে এবং দেশটির জ্বালানি বিভাগ মহামারী সহায়তা প্যাকেজ এবং খনির জন্য ২০২০ সালের খনি খননের প্যাকেজের জন্য ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নাগরিক অস্থিরতা, বাণিজ্য সংক্রান্ত বিরোধ এবং শিল্পসংস্থাগুলির ব্যর্থতা সবই যুক্তরাষ্ট্রের খনিজ সরবরাহ এবং জাতীয় সুরক্ষার অগ্রাধিকার হিসাবে পরিণত বহুবিধ গুরুত্বপূর্ণ খনিচের ওপর নির্ভরশীল পণ্যগুলোর উৎপাদন ব্যাহত করেছে এবং দেশটির নিজস্ব খনি এবং এ খনিজগুলোর পুনর্ব্যবহার এখনও সামান্যই। দেশটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নির্ভরযোগ্য সরবরাহ চেইনে তার কৌশলগত পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগ বাড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা থাকলেও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দেশগুলোর সাথে জড়িত হতে বিশেষত চীন তার ক্রমবর্ধমান খনিজ রফতানির উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোতে, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীলতায় আগ্রহী। খনিজ সঙ্কটে পিছিয়ে পড়া ঠেকাতে এবং সফল এনার্জি ট্রান্সমিশন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে। দেশটি খনন উপযোগী পরিবেশবান্ধব আন্তর্জাতিক চুক্তি করতে পারে।
একইভাবে, তার সংস্থাগুলো এটি নিশ্চিত করতে পারে যে, তারা উন্নয়নশীল অর্থনীতির অপব্যবহার এবং শোষণকে উৎসাহিত করে এমন অস্থায়ী বা সহায়তামূলক উৎস থেকে খনিজ ক্রয় করছে না। পাশাপাশি, বিরল খনিজগুলোর নবায়ন এবং পুনর্ব্যবহারের প্রসারণযোগ্যতা বৃদ্ধি দেশটির খনিজ ব্যবহারকে সহজলভ্য করে তুলতে পারে।
তবে, বিশ্বের ৮০ শতাংশ লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি উপাদান পরিশোধন, যা বিশ্বের ৭৭ শতাংশ ব্যাটারি সেল ক্ষমতা এবং বিশ্বব্যাপী ব্যাটারি উপাদান উৎপাদনের ৬০ শতাংশ বর্তমানে চীনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দুষ্প্রাপ্য খনিজের বাজার এবং বাণিজ্য চুক্তিতে সমর্থন বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। সূত্র : দ্য কনভারসেশন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।