Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক-তৃতীয়াংশ ভোগেন মস্তিষ্কের রোগে

করোনা থেকে সুস্থতার পর

| প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

একবার করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে যারা সুস্থ হন তাদের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন রোগে ভোগেন। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের মস্তিষ্ক নানা রোগ আক্রান্ত হয়। গত মঙ্গলবার ‘দ্য ল্যানসেট সাইকিয়াট্রি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, করোনায় সংক্রমিত তিনজনের মধ্যে একজনের দীর্ঘস্থায়ী মানসিক স্বাস্থ্য বা স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণ রয়েছে।
গবেষকেরা বলছেন, করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠা ৩৪ শতাংশ করোনাজয়ী মানুষ সংক্রমণের ছয় মাসের মধ্যে মানসিক অথবা নিউরোলজিক্যাল উপসর্গে ভুগেছেন। গবেষণায় দেখা যায়, আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ভোগেন দুশ্চিন্তায়।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে উত্তেজনা বিষয়ক সমস্যা, ১৭ শতাংশ। ১৪ শতাংশ মেজাজ নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়া এবং মেজাজের ওঠানামার সমস্যার কথা জানিয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে স্নায়বিক সমস্যা বেশি তীব্র দেখা গেছে।
যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫ লাখের বেশি রোগীর মেডিকেল তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। এই রোগীদের ক্ষেত্রে তারা কয়েকটি সমস্যা দেখতে পেয়েছেন। সেসব হচ্ছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, স্ট্রোক, পার্কিনসন, স্মৃতিভ্রংশ, গুলেন-বারি সিন্ড্রোম, সাইকোসিস, মুড ডিজঅর্ডার এবং উত্তেজনা। গবেষণার সহযোগী লেখক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোচিকিৎসার ফেলো ম্যাক্সিম টাকুয়েট বলেন, ‘আমাদের গবেষণার ফলাফল এই ইঙ্গিত দেয় যে ফ্লু বা অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের চেয়ে করোনার পর মস্তিষ্কের রোগ ও মানসিক সমস্যা বেশি দেখা যায়।’

সংক্রমণের ছয় মাস পার হওয়ার পর আক্রান্তের ক্ষেত্রে কী ঘটে, তা এখন দেখতে হবে বলে মন্তব্য করেন ম্যাক্সিম। গবেষকেরা বলছেন, করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় কীভাবে সহায়তা করা যেতে পারে, তার ক্ষেত্রে এ গবেষণা ভ‚মিকা রাখবে।
গবেষণার পরিসর ছিল বেশ বড়। দুই লাখ ৩৬ হাজারের বেশি করোনা রোগীর ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্যগত তথ্য এ গবেষণায় বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষকেরা দেখতে পান, ফ্লু থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের চেয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের স্নায়বিক ও মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি ৪৪ শতাংশ বেশি।

গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ২ শতাংশের স্ট্রোক হয়েছে। যারা আবার আইসিইউতে গেছেন তাদের মধ্যে সাত শতাংশের স্ট্রোক হয়েছে। ভাইরাসটি মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেখানে প্রত্যক্ষ ক্ষতির কারণও হতে পারে এটি। এর পাশাপাশি রক্ত জমাট বাঁধার মতো অপ্রত্যক্ষ প্রভাবও দেখা দিতে পারে।

সমস্যাগুলো মূলত পর্যবেক্ষণমূলক সিদ্ধান্ত। তাই এর জন্য কোভিড-১৯ কে সরাসরি দায়ী করতে পারছেন না গবেষকেরা। কিন্তু অন্য ফ্লুতে আক্রান্তদের সঙ্গে তুলনা করে এটা বোঝা যায় যে, কোভিড-১৯ রোগীদের সমস্যাগুলো বেশি দেখা যাচ্ছে। করোনায় সংক্রমিত হওয়া ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের সমস্যার দিকটি উঠে আসায় গবেষণাটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামের মনোরোগবিদ্যার সহযোগী অধ্যাপক মুসা সামি। সূত্র : বিবিসি নিউজ, সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ