নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দিন দিন ভারতে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পরশু দেশটিতে করোনা শনাক্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। এ অবস্থায় অন্য যেকোনো খেলা আয়োজন থেকেই বিরত থাকার কথা। কিন্তু আইপিএলসংক্রান্ত বাদ্যি ঠিকই বেজে চলেছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে- আইপিএল হবেই। গত মৌসুম সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাটিয়ে এসে এবার ঘরেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটি আয়োজনে বদ্ধ পরিকর তারা।
করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলে এসেছে। দু’দিন আগেই ভারতে নতুন করে ১ লাখ ৩ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতপরশু অবশ্য সংখ্যাটা একটু কমেছে- শনাক্তের পরিমাণ সাড়ে ৯৬ হাজার। কিন্তু এতে বিশেষজ্ঞদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে আরও। কারণ, রোববার ছুটির দিন বলে করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা আগের দিনের তুলনায় অনেক কম হয়েছিল। তবু সংখ্যা লাখ ছুঁই ছুঁই। ভারতে মার্চের মাঝামাঝি থেকে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগামী গ্রাফে একটু বিরতিতেও তাই স্বস্তি মেলেনি। আইপিএল-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবশ্য এতেও ভড়কাচ্ছেন না। যেকোনোভাবেই আইপিএল আয়োজনের সর্বোচ্চ চেষ্টা তারা চালিয়ে যাবেন। হাজার হলেও দর্শকবিহীন এই টুর্নামেন্টেও স্পন্সরের অভাব হয়নি। চার হাজার কোটি রুপির এই টুর্নামেন্ট স্থগিত করতে তাই চাইছে না কেউ।
করোনায় ভারত কাঁপলেও, চলছে আইপিএল-সংক্রান্ত সবকিছু। জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে আছে বলে আইপিএলের দলগুলো এত কড়া নিয়ম মানছে না। রাজ্য সরকারও বলে দিয়েছে এমন সংক্রমণের মাঝেও তারা আইপিএল আয়োজন করতে দেবেন। এরই মধ্যে তিনজন ক্রিকেটার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ১২ জন মাঠকর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন। ছয়জন ইভেন্ট ম্যানেজারও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবু রাজ্যের প্রধান সচিব সিতারাম কুন্তে বলেছেন, ‘আমরা দর্শকবিহীন আইপিএল ম্যাচ আয়োজনের অনুমতি দিয়েছি। আমরা জানি কিছু খেলোয়াড় ও মাঠকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আয়োজকদের করোনা পরীক্ষাসংক্রান্ত সব নিয়ম মানতে হবে, অন্যদের সঙ্গে সামাজিক দ‚রত্ব বজায় রাখতে হবে।’
আইপিএলের হর্তাকর্তারাও তাই আশাবাদী, যতই করোনা সংক্রমণ বাড়ুক না কেন, আইপিএল আয়োজিত হবেই। টুর্নামেন্টের জন্য সৃষ্ট ১২টি জৈব সুরক্ষা বলয়ই তাদের সফলভাবে এই পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেবে বলে ধারণা করছে বিসিসিআই। বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী বলেছেন, ‘গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেমন দেখেছি, একবার সবাই থিতু হলে এবং বলয়ে ঢুকে পড়লে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’ পাকিস্তান সুপার লিগও সে আশা নিয়েই শুরু হয়েছিল। কিন্তু ১০ ম্যাচ পরই টুর্নামেন্ট স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে পিসিবি। জৈব সুরক্ষা বলয় ঠিকভাবে মানতে না পারায় একের পর এক ক্রিকেটার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন পাকিস্তানে। ভারতে এমন কিছু না হলেই হয় এখন!
স্বাভাবিকভাবে যে আইপিএল আয়োজন সম্ভব নয়, সেটা আগেই জানা ছিল। তাই এবার আর হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতি আইপিএল হওয়ার পরিকল্পনা করা হয়নি। বরং নির্দিষ্ট কিছু শহরে সব দলকে রেখে খেলা আয়োজনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুরুতে মুম্বাই ও চেন্নাইয়ে থিতু হয়েছে আট দল। সেখানে জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকছে দলগুলো। এরপর আহমেদাবাদ ও দিল্লিতে যাবে আইপিএল। এবং বেঙ্গালুরু-কলকাতা গিয়ে থামবে আইপিএল ক্যারাভান। এই প্রক্রিয়ায় আপাতত মুম্বাইয়ে পাঁচ দল আছে, তিন দল আছে চেন্নাইয়ে। আইপিএলের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, ভারতে করোনার কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এক রাজ্যেই অবস্থান মুম্বাইয়ের।
গতপরশু শুধুমাত্র মুম্বাইয়েই ৯ হাজার ৮৭৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মহারাষ্ট্র রাজ্যের পরিস্থিতি আরও খারাপ। দেশের নতুন করে শনাক্ত হওয়া প্রায় ৫০ ভাগ রোগী এই অঞ্চলের- আক্রান্ত ৪৭ হাজার ২৮৮ জন। আগের দিনই রাজ্যটিতে ৫৭ হাজার ৭৪ জন ক্রোনা রোগী মিলেছে। বর্তমানে মহারাষ্ট্রে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৭৫ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত। অঞ্চলটি রীতিমতো সুপ্ত জৈব বোমায় রূপান্তরিত হয়েছে। উপায় না দেখে গত ৪ এপ্রিল মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার ছুটির দিনগুলোয় পুরো লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। আর অন্য দিনগুলোয় রাতে কারফিউ জারি করেছে। উপাসনালয়, শপিং মল, সুইমিং পুল—কোনো কিছুই এরই লকডাউনের নিয়ম থেকে ছাড় পায়নি। বাইরে একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি মানুষের ঘোরাফেরাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।