Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারে ‘বসন্ত বিপ্লবের’ ডাক গণতন্ত্রকামীদের

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২১, ১০:১৮ এএম

সেনাবাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে। সাংবাদিকসহ আটক হয়েছেন তিন হাজারের বেশি। এর মধ্যে গত শনিবার এক দিনেই অন্তত ১১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে। এরপরও দমে যাননি গণতন্ত্রকামীরা। বিক্ষোভকারীদের বরাতে চ্যানেল নিউজ এশিয়া জানাচ্ছে, চলতি সপ্তাহের সহিংসতার পর গণতন্ত্রকামীরা আরও প্রত্যয়ী হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আরকান আর্মি, কারেনসহ একাধিক সংগঠন জোট বেঁধেছে সেনা সরকার উৎখাতে।

এদিকে শনিবারের ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ওয়াশিংটন মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জান্তা সরকারের ওপর চাপ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। বিবিসি জানাচ্ছে, গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীরা সোমবার রাতে প্রদীপ জ্বেলে নিহতদের স্মরণ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার শুরু হয়েছে তাদের নতুন এক কর্মসূচি ‘গার্বেজ স্ট্রাইক’। এ কর্মসূচিতে নাগরিকরা ঘরের আবর্জনা রাস্তার মোড়ে ছুড়ে ফেলে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।

অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) নামের একটি সংগঠন বলছে, সোমবারও বিক্ষোভে দমন-পীড়নে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে আটজন নিহত হয়েছেন ইয়াঙ্গুনের দাক্ষিণ দাগন এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীরা ওই এলাকায় বালির বস্তা দিয়ে অবরোধ তৈরি করেছিলেন। নিরাপত্তা বাহিনী তা সরাতে ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে।

স্থানীয় এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেছেন, রাতেও সেখানে গোলাগুলির শব্দ পেয়েছেন তারা। সে কারণে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। এ বিষয়ে পুলিশ বা সেনা কর্র্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে পারেনি সংবাদ সংস্থাটি।

এএপিপির হিসাবে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে দুই মাসে কমপক্ষে ৫১০ জনের মৃত্যু হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে গত শনিবার, সব মিলিয়ে ১৪১ জন নিহত হয়েছেন সেদিন।

মিয়ানমারজুড়ে এই বিক্ষোভের পেছনের অন্যতম সংগঠন জেনারেল স্ট্রাইক কমিটি অব ন্যাশনালিটিজ (জিএসসিএন) ফেইসবুকে পোস্ট করা এক খোলা চিঠিতে ‘সেনাশাসনের বিরোধিতাকারী জনগণ, তরুণ, নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের সুরক্ষা’ নিশ্চিত করতে দেশটিতে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন জাতির সশস্ত্র গোষ্ঠীর সহযোগিতা চেয়েছে।

তাদের ওই আহ্বানে সাড়াও মিলছে। তিনটি সশস্ত্র গ্রুপ মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে সামরিক বাহিনীকে হত্যা বন্ধ করে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে।

মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি, আরাকান আর্মি এবং তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি তাদের ওই যৌথ বিবৃতিতে বলেছে সেনাবাহিনী এই আহ্বানে সাড়া না দিলে তারাও মিয়ানমারের সর্বজাতির আত্মরক্ষার ‘বসন্ত বিপ্লবে’ শামিল হবে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটির বিস্তৃত অংশ দুই ডজন সশস্ত্র গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে; গত কয়েক দিনে ওই গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াইয়ের তীব্রতাও বেড়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ