নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আগেই হোয়াইটওয়াশ। এবার বড় হারে শুরু টি-টোয়েন্টি সিরিজও। গতকাল হ্যামিল্টনের স্যাডন পার্কে স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টাইগাররা হেরেছে ৬৬ রানের বড় ব্যবধানে। কিউইরা টসে জিতে প্রথমে স্কোরবোর্ডে তোলে ২১০ রানের বিশাল সংগ্রহ। এই রানতাড়ায় ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ এর বেশি করতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। অথচ ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বলেছিলেন, দলে জয়ের ক্ষুধা তীব্র। কিন্তু ম্যাচে দেখা গেল না এর ছিটেফোঁটাও। হারের ৩৬০ ডিগ্রি বৃত্তেই আবদ্ধ থাকলো লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এ বৃত্ত ভাঙার কৌশল যেন এখনও রপ্ত করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহরা! খেলার মাঠে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষা যেন নীরবে জানিয়ে দিচ্ছিল, হারই যেন নিয়তি।
মূলত কনওয়ে, ইয়াংয়ের কাছেই হেরেছে বাংলাদেশ। এ দুই কিউই ব্যাটসম্যানের কাছে অসহায় ছিল বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ। আর ইশ সোধির স্পিনে উড়ে গেল টাইগার ব্যাটিং। ফলে নিউজিল্যান্ড সফরে আরেকটি বড় হার যুক্ত হলো বাংলাদেশের নামের পাশে। সিরিজে টিকে থাকার লড়াইয়ে আগামীকাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিততেই হবে টাইগারদের।
গতকাল এমনই এক ম্যাচ খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ, যে ম্যাচে একই দিন অভিজ্ঞ তিন ক্রিকেটার সাকিব, মুশফিক ও তামিমরা ছিলেন না। ম্যাচের আগে চোট নিয়ে ছিটকে মুশফিকুর রহিমের মতো পরীক্ষিত ব্যাটসম্যান। আর এমন ম্যাচেই কিনা স্বাগতিকরা বাংলাদেশকে ছুঁড়ে দেয় ২১১ রানের বড় লক্ষ্য। অথচ আগের হেরে যাওয়া চার টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানই ছিল ১৬৭!
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই ৪ উইকেট হারায় সফরকারীরা। নাঈম শেখের ব্যাটে বাংলাদেশের শুরুটা কিন্তু ছিল আক্রমণাত্মকই। ছোট মাঠে মেরে খেলছিলেন এই ওপেনার। অপরপ্রান্তে লিটন দাস (৪) ছিলেন পুরোটাই ব্যর্থ। দাপুটে শুরু করা নাঈমও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৪.২ ওভারে ফার্গুসনের ফুলার লেন্থের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে তিনি (২৭) বিদায় নেন। তখন বাংলাদেশের দলীয় স্কোর ২ উইকেটে ৩৯।
এরপর সেই চিরচেনা ব্যাটিং ব্যর্থতা। কিউই লেগ স্পিনার ইশ সোধিই মূলত শেষ করেছেন সব সম্ভাবনা। ষষ্ঠ ওভারে প্রথম ওভার বল করতে এসে তিনি ফেরান সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিঠুনকে। সোধিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ৫ রানে ফিরেন সৌম্য। মিঠুন ¯øগ সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন ৪ রানে। এক ওভার পর সোধি ফিরলে বাংলাদেশের ব্যাটিং পুরোটাই ধ্বসে পড়ে। একই ওভারে সোধি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসানকে। ধ্বংসস্তুপে এর পর জীবন পাওয়া আফিফ হোসেন কিউই বোলারদের পেটালেও তাতে শুধু হারের ব্যবধানই কমেছে। ৩৩ বলে ৪৫ রান করে ফার্গুসনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন আফিফ। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ১টি ছয়। এরপর শরিফুল ৫ রানে ফিরলে ৮ উইকেটে ১৪৪ রানে থামে ইনিংস। শেষ পর্যন্ত সাইফউদ্দিন ৩৪ ও নাসুম শূন্য রানে অপরাজিত থাকেন। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ২৮ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন ইশ সোধি। ফার্গুসন নেন ২৫ রানে ২ উইকেট। টিম সাউদি ৩৪ ও হামিশ বেনেট ২০ রানে পান একটি করে উইকেট।
অথচ দিনের শুরুতেই হোঁচট খায় স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের অভিষিক্ত স্পিনার নাসুম আহমেদ প্রথম ওভারেই গোল্ডেন ডাকে ফেরান কিউই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান ফিনকে। দলীয় মাত্র ১ রানে প্রথম উইকেট হারালে নিউজিল্যান্ডের রানের চাকা কিন্তু থেমে থাকেনি। পাওয়ার প্লেতে তা দিব্যি ছুটেছে। ওপেনার মার্টিন গাপটিলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৬ ওভারে নিউজিল্যান্ড তুনে ৪৮ রান। তবে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা গাপটিলকে ফিরিয়ে আবারও কিউইদের রাশ টেনে ধরার চেষ্টা করেছিলেন নাসুম। ফেরার আগে গাপটিল ২৭ বলে ৩৫ রান করেন। তাতে ভাঙে গাপটিল-কনওয়ের ৫২ রানের জুটি। তাতে কি? কনওয়ের বিধ্বংসী ইনিংসে রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিকরা।
ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলা কনওয়েকে সঙ্গ দেন অভিষিক্ত আরেক ব্যাটসম্যান উইল ইয়াং। তিনি কনওয়ের সঙ্গে গড়েন ৬০ বলে ১০৫ রানের জুটি! হুমকি হয়ে দাঁড়ানো এই জুটি অবশ্য ভাঙেন মেহেদী। তার বলে আফিফের হাতে ক্যাচ দেন ইয়াং। ততক্ষণে অবশ্য ৩০ বলে ৫৩ রান তুলে ফেলেন তিনি। এই রানে ছিল ৪টি ছয় ও ২টি চারের মার। ইয়াং ফিরে গেলে দলের বড় স্কোর গড়তে কনওয়েকে সঙ্গ দেন গেøন ফিলিপস। শেষ পর্যন্ত ১০ বলে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। কনওয়ে ১১টি চার ও ৩ ছয়ের মারে ৫২ বলে অপরাজিত ৯২ রান করে হন ম্যাচসেরা।
বাংলাদেশের পক্ষে ৩০ রানে দুই উইকেট শিকার করেন নাসুম আহমেদ। মেহেদী হাসান ৩৭ রানে নেন ১ উইকেট। অভিষিক্ত শরিফুল ও মুস্তাফিজুর রহমান উইকেটের দেখা পাননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
নিউজিল্যান্ড : ২০ ওভারে ২১০/৩ (গাপটিল ৩৫, অ্যালেন ০, কনওয়ে ৯২*, ইয়াং ৫৩, ফিলিপস ২৪*; নাসুম ২/৩০, সাইফ ০/৪৩, শরিফুল ০/৫০, মুস্তাফিজ ০/৪৮, মেহেদি ১/৩৭)
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৪৪/৮ (নাঈম ২৭, লিটন ৪, সৌম্য ৫, মিঠুন ৪, মাহমুদউল্লাহ ১১, আফিফ ৪৫, মেহেদি ০, সাইফ ৩৪*, শরিফুল ৫, নাসুম ০*; সাউদি ১/৩৪, বেনেট ১/২০, ফার্গুসন ২/২৫, সোধি ৪/২৮, চাপম্যান ০/৯, ফিলিপস ০/৫, মিচেল ০/২১)
ফল : নিউজিল্যান্ড ৬৬ রানে জয়ী।
সিরিজ : ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউজিল্যান্ড ১-০ তে এগিয়ে।
ম্যাচসেরা : ডেভন কনওয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।