বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে বসবাসরত কাঁটাতারের বাইরে ও ভেতরে তিন শতাধিক স্থানীয় মানুষের বসতবাড়ী পুড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
২২ মার্চ (সোমবার) পৌনে চারটার সময় বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৮-ওয়েস্টে অনাকাঙ্ক্ষিত এক অগ্নি দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে ক্যাম্প ৯, ক্যাম্প ১০, ক্যাম্প ১১ সহ মোট চারটি ক্যাম্পের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত আকারে আগুন ছড়িয়ে গেলে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৮ ও ৯ পার্শ্ববর্তী বসবাসরত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রায় তিন শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এতে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে শিশু, নারী, পুরুষ ও বৃদ্ধ সহ শত শত স্থানীয় নাগরিক। মঙ্গলবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শনকালে এবিষয়ে জানাযায়।
এসময় ক্ষতিগ্রস্ত সৈয়দ করিমের ছেলে মবিনুল ইসলাম (২৫) জানান, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে শরণার্থী শিবির ঘেরা দেওয়ার পর তাদের ঘরবাড়ি কাঁটাতারের ভিতর পড়ে যায়। হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের ফলে সার্টিফিকেট, মূল্যবান কাগজপত্র, স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র সহ বাড়ির সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সেই সাথে পুড়ে যায় তার বড় ভাইয়ের ব্যাংক লোনের চার লক্ষ নগদ টাকা। যা নতুন বাড়ির নির্মাণ কাজের জন্য রাখা হয়েছিল।
মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ায় প্রাণ বাঁচাতে সবকিছু ছেড়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে আসি। এই অবস্থায় সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
ঘর পুড়ে যাওয়া তাহেরা বেগম (৩০) নামের এক নারী জানান, রোহিঙ্গাদের বাড়ি তাদের বাড়ি প্রায়ই পাশাপাশি হওয়য় স্থানীদের বাড়িতে আগুন চলে আসে।
জীবন বাঁচাতে গিয়ে বাড়ির কোন কিছুই সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এখন সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে তারা। মা বাবা ও ছেলেমেয়েদের খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য কিছু আর নেই।
সরকারের প্রতি তারা অনুরোধ করেছে স্থানীয় বসতবাড়ি থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝে যাতে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়।
মনু নামের একজন বলেন তিন মেয়ে ও দুই ছেলে ও নাতি-নাতনিসহ ১০ জনের পরিবার তার। ঘরবাড়ি পুড়ে সবকিছু হারিয়ে কি করবে কোথায় যাবে কি খাবে বুঝে উঠতে পারছেনা।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এনজিও সহযোগিতা করে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের অনুরোধ রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থদের ও যেন সুবিধার আওতাভুক্ত করা হয়।
লায়লা বেগম ও বেলাল দম্পতি বলেন ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় একসাথে আগুন লাগায় তাদের ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ছোট ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে তারা এখন দিশেহারা।
এই অগ্নিকাণ্ড একটি দুর্বৃত্ত চক্রের পরিকল্পিত বলেও তারা মনে করেন।
বালুখালী ১ নং নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আবছার চৌধুরী বলেন, সোমবার দুপুরে ক্যাম্পে আগুন লাগলেও হঠাৎ আগুন বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
সরকারের প্রশাসন, দমকল বাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় জনগণ ও আগুন নেভানোর কাজে অংশগ্রহণ করে। এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় কয়কশ বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করে চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে অবহিত করে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডটি পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে। এতে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় ৩শ মত ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। কিভাবে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে তা সঠিকভাবে খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসন ও সরকারের কাছে আবেদন জানান তিনি।
এদিকে গতকাল সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মোঃ মোহসীন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে যাদের বসতভিটা পুড়ে গেছে তাদের আশ্বস্ত করেছেন।
তিনি বলেন,২-৩ দিনের মধ্যে তালিকা জমা হলেই আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ স্থানীয়দের বাড়ি নির্মাণের অর্থ ও টিন এবং ২ মাসের খাবার প্রদান করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।