Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছে ৪০ হাজার শেড, আশ্রয়হীন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা

বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা, সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে শামসুল হক শারেক | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২১, ১১:৫৫ এএম | আপডেট : ২:৩৭ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২১

উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনে মৃতের সংখ্যা সাতজন বলে নিশ্চিত হওয়া গেলেও আগুনে প্রায় ৪০ হাজার বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। আহত ব্যক্তির সংখ্যা শতাধিক বলে জানাগেলেও বাড়তে পারে হতাহতের সংখ্যা। ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে সাত সদস্যের একটি কমিটি।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বালুখালীর আগুনে পুড়ে যাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে এক অমানবিক অবস্থা। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে নিষ্ঠুর সেনা বাহিনী যেভাবে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল ঠিক তার প্রতিচ্ছবিই সেখানে দেখা গেছে।

পুড়ে যাওয়া ক্যাম্পের দায়িত্বরত মাঝিরা বলছেন, চারটি ক্যাম্পের ৩৬০ ব্লকের প্রায় ৪০ হাজার পরিবারের ঘরসহ সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এছাড়াও আগুনে আশপাশের স্থানীয় জনসাধারণের ৩শত ঘরবাড়ি ও পুড়ে গেছে।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সকালে অতিরিক্ত ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. শামসুদ্দোজা নয়ন জানান, ঘটনাস্থলে প্রশাসনের কয়েক স্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত রয়েছে। এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক হিসেবে প্রায় ১৫ হাজার ঘর পুড়ে গেছে। এসব ঘরে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে রাখা হয়েছে।

রোববার (২২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর একে একে আটটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে নারী ও শিশুসহ সাতজন এবং ৪০ হাজার বসতঘর পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া নাগেলেও এর পেছনে একটি দুর্বৃত্ত চক্রের নাশকতা রয়েছে।

স্থানীয় মুনিরুল হক নামের একজন জানান, তিন চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে একসাথে আগুন ছড়িয়ে পড়া রহস্য জনক।

রোহিঙ্গাদের অনেকেই বলেছেন একই কথা। তারা বলেন, একদিকে আগুন দেখে তারা ওদিকে দৌড়াতে গেলে দেখে একই সাথে অন্যদিকেও আগুন জ্বলে উঠতে। এতে করে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে।

ইতোমধ্যে আশ্রয়হীন হাজার হাজার রোহিঙ্গা ফিরে আসতে শুরু করেছে তাদের শেড এলাকার বিরাণ ভূমিতে।

এসময় দেখা গেছে অনেক বা-মা তাদের সন্তানদের এবং অনেক স্বামী তাদের বউ বাচ্চাদের খোঁজ করতে। যারা অগ্নি কান্ডের সময় হারয়ে গেছে।

২০১৭ সালে মিয়ানমারে সেনা নির্যাতনের সময় রোহিঙ্গারা যে নৃশংসতা দেখেছে কাল বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও যেন একই দৃশ্য তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।

3 Attached Images



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অগ্নিকাণ্ড

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ