নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ফের ধেয়ে আসছে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস। আর এতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমস আয়োজন নিয়ে। বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ করোনা সনাক্তের পর থেকেই হু হু করে বাড়ছিল আক্রান্তের সংংখ্যা। মাঝে কিছুদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সুফল পেয়েছিল দেশ, তাতে কমেছিল আক্রান্ত ও মৃত্যুহার। তবে সময়ের সাথে সাথে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্ক না করায় বেড়েছে আক্রান্ত ও মৃত্যু। টানা চারদিনের মতো গতকালও দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১৭১৯ জন। মৃত্যু ২৬ জনের। সব মিলিয়ে দেশে মোট মৃত্যু ৮ হাজার ৫৯৭ জনের। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৮৭ জনে।
দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি হঠাৎ করেই খারাপের দিকে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে ফের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল স্থগিত করা হয়েছে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ক্যামব্রিজ পদ্ধতির ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে আগামী ৩০ মার্চ থেকে তারা স্কুল-কলেজ খুলবে কিনা? বই মেলা আয়োজন নিয়েও আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত। অথচ এই পরিস্থিতির মধ্যেই বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) তোরজোর শুরু করেছে জাতির পিতার নামে নবম বাংলাদেশ গেমস আয়োজনের। আর তাতেই ‘খেলা বড় না জীবন?’- প্রশ্নটা উঠছে মোটা দাগে।
আগামী ১ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসের খেলা। গত বছরের একই সময়ে এ গেমস আয়োজনের কথা থাকলেও করোনার দাপটে তা স্থগিত করা হয়েছিল। তবে নির্ধারিত বাংলাদেশ গেমস হবে কিনা, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এ প্রসঙ্গে গতকাল বিওএ’র উপ-মহসচিব আশিকুর রহমান মিকু বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমস আয়োজনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। কিন্তু ভয় পাচ্ছি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে। এভাবে করোনা বাড়লে গেমস আয়োজন করা কঠিন হবে।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) সচিব মো. মাসুদ করিম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আমরা এবারের বাংলাদেশ গেমস আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছি। এখন আবার যদি ভিন্ন পরিস্থিতি হয়, তাহলে নতুন করে ভাবতে হবে। আর গেমস যদি হয়, তাহলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মেনেই হবে। তারপরও পরিস্থিতি বিবেচনা করে সবকিছু করতে হবে আমাদের।’ তিনি যোগ করেন, ‘সব ফেডারেশনকে নির্দেশনা দেয়া আছে যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুশাসন মেনেই সবকিছু করতে হবে। বাংলাদেশ গেমস হলে তারা সেটা করবে। এরপর যদি বিশেষ কেনো নির্দেশনা আসে, আমাদের সেভাবেই কাজ করতে হবে।’ এনএসসি সচিব আরও বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি আছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে। এগুলোই ধাপে ধাপে বাস্তবায়িত হবে। এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ অনুশাসন মেনেই সেগুলো হচ্ছে। পরিস্থিতি যদি ভিন্ন রকম কিছু হয়, তাহলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যখন নির্দেশনা আসবে সেগুলো প্রতিপালন সাপেক্ষেই আমরা ক্রীড়া কর্মকাÐ পরিচালনা করবো।’
দেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসে ৩১ ডিসিপ্লিনে খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তা মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার জন অংশ নেবেন। এতো মানুষের সমাগমে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার উপরই জোর দিয়েছেন বিওএ’র উপ-মহাসচিব মিকু, ‘যদি বাংলাদেশ গেমস হয়,তাহলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মেনেই সবকিছু করা হবে। যারা গেমসে অংশ নেবেন তাদের সবাইকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে আসতে বলা হয়েছে। যদি কেউ পরীক্ষা করিয়ে আসতে না পারেন, তাহলে তাদের জন্য আমাদের এখানে পরীক্ষার বুথ থাকবে।’
তবে গেমসে অংশগ্রহণকারীদের জন্য করোনা ভ্যাকসিন নেয়াটা বাধ্যতামূলক করা হয়নি বলেও জানান মিকু। সবশেষে যে তথ্যটি দিলেন মিকু, এখানেই বেধেছে গোল। তাতে সংক্রমণ ছড়ানো কিংবা আক্রান্ত বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে গেমস সংশ্লিষ্ট সকলকে ভ্যাকসিনের আওতায় না এনে কি করে এতো বড় গেমস আয়োজনের ঝুঁকি নিচ্ছে বিওএ? খেলা বড় না, জীবন বড়? সংশ্লিষ্টদের কাছে এ প্রশ্ন দেশের ক্রীড়াবোদ্ধাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।