Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবিলম্বে পাটকল চিনিকল খুলে দিতে হবে- ফজলে হোসেন বাদশা

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২১, ৬:৪৫ পিএম

রাজশাহীতে শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বন্ধ করে দেয়া রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকল ও চিনিকল খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, ‘পাটকল-চিনিকল বন্ধ করে শ্রমিকদের বেকার করে দেয়া হচ্ছে। আমরা এই বাংলাদেশ চাইনি। বাংলাদেশ আখচাষী ও চিনিকল রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

ফজলে হোসেন বাদশা সমাবেশে বলেন, ‘এই রাস্তায় যে সমস্ত শ্রমিক-কৃষকেরা অবস্থান ধর্মঘট করছেন, তাদেরকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে সহানুভূতি জানাই। আশ্বাস দিচ্ছি- ওয়ার্কার্স পার্টি চিনিকল-পাটকল-সুতাকলের প্রশ্নে কোন আপস সরকারের সাথে করবে না।’

তিনি বলেন, ‘আজকে উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে উন্নয়নের কি মূল্য আছে। যে পাটের জন্য বাংলাদেশ বিশ^ব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে সেই সমস্ত পাটকল বন্ধ হয়ে গেল। আদমজী যখন বিএনপি সরকারের আমলে বন্ধ হয়, তখন আমরা অনেক কথা বলেছিলাম। প্রধানমন্ত্রীও অনেক কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় এসে সমস্ত পাটকল, চিনিকল এমনকি সুতাকলও বন্ধ করে দিচ্ছি। আজকে এক কোটি মানুষ বেকার। নিঃস্ব। দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দরিদ্র মানুষের কথা উচ্চারিত হচ্ছে না। আমি বলতে চাই- আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করে এই স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি, আমাদের মনে রাখা দরকার করোনাকালে আমাদের দেশে দরিদ্রের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তখন কলকারখানা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।’

এমপি বলেন, ‘এই অবস্থান ধর্মঘট ৬৪ জেলায় হচ্ছে। আমরা অনতি বিলম্বে ঢাকায় মহাসমাবেকশ করব। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় হাজার হাজার কৃষক-শ্রমিক হাজির হয়েছিল। এখন শোষিত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা জনগণের স্বার্থে লড়াই সংগ্রাম করছি। এটা চালিয়ে যাব। মনে রাখা দরকার- পাটকল-চিনিকল বন্ধ করে দিয়ে এক শ্রেণির টাকাওয়ালা ব্যবসায়ী যারা বিদেশ থেকে চিনি আনছে তাদের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। বঞ্চিত করা হচ্ছে দেশের শ্রমিক-কৃষককে।’

আমলাদের সমালোচনা করে বাদশা বলেন, ‘প্রযুক্তিগত কারণে যদি চিনিকল-পাটকল লাভ করতে না পারে বলা হয়, তাহলে আমি বলব- এক শ্রেণির আমলা রয়েছে দুর্নীতিবাজ। তারা লুটপাট করছে। কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু আমলাদের বেতন বন্ধ হয়নি। অর্থাৎ দেশটা লুটেরাদের রামরাজত্বে পরিণত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে।’

দেশের শ্রমিক এবং কৃষেেকক ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অর্থনৈতিক অধিকার অর্জন করতে হবে। সংবিধানে আছে বৈষম্যের সমাজ চলবে না। অথচ সমাজে কিছু লোক লক্ষ-হাজার কোটি টাকার মালিক েেহয় যাচ্ছে। কিছু মানুষ দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। এই বৈষম্য কাম্য নয়। আমরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চাই। আমাদের রাজপথে নামার সময় এসেছে। এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’

অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের রাজশাহী জেলার সভাপতি সিরাজুর রহমান খান। সংহতি প্রকাশ করে আরও বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, জেলার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা, নগর সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, যুবমৈত্রীর জেলার সভাপতি মনির উদ্দিন পান্না, নগর সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির ও সাবেক ছাত্রনেতা সম্রাট রায়হান।

বক্তব্য দেন- জাতীয় কৃষক সমিতির জেলার সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, ওয়ার্কার্স পার্টির নগর সম্পদকমণ্ডলির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, আবদুল মতিন, রাজশাহী চিনিকলের সিবিএ নেতা হাবিবুর রহমান ছানা, রাজশাহী পাটকলের শ্রমিক নেতা আলাল মোল­া, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শ্রমিক ফেডারেশনের আবদুল কুদ্দুস টেবলু, নগর ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা সাঈদ চৌধুরী, সিতানাথ বণিক ও বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহীন শেখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল করিম অপু।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজশাহী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ