মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে রাজপথে ১০০ দিন হলো দেশটির কৃষকদের। কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে শনিবার রাজধানী নয়াদিল্লির বাইরে ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করতে জড়ো হয়েছেন কৃষকেরা। ‘জান যায় যাক, তবুও তিন কৃষি আইন বাতিল করতেই হবে’-এই মন্ত্রেই রাজপথে ১০০ দিন পার করে দিলেন ভারতের কৃষকরা। এই সময়ের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন আন্দোলনরত ২৪৮ কৃষক। তা সত্ত্বেও ‘জান কবুল’, তবুও নিজেদের দাবি আদায়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বিক্ষোভকারীরা। আগামী দিনগুলোতেও বিক্ষোভ-আন্দোলন অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন কৃষক নেতারা। -আল জাজিরা, এশিয়ানেট নিউজ
১০০তম দিন উদযাপন উপলক্ষে আজ শনিবারও নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। দিল্লির কুন্ডলি-মানসের ও পালওয়াল এক্সেপ্রেস ওয়েতে পাঁচ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন কৃষকরা। এই অবরোধ বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের প্রণীত বহুল বিতর্কিত তিনটি আইনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৬ নভেম্বর থেকে নয়াদিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির কয়েক লাখ কৃষক। আজ শনিবার এই আন্দোলন ১০০তম দিনে পড়ছে। এর মধ্যে সরকারের সঙ্গে তাদের বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সরকার তাদের দাবি না মানায় এখনো আসেনি সফলতা। শীত-রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ের মধ্যেও রাস্তায় আন্দোলনরত, ধর্না দেওয়া কৃষকদের আর্তনাদ সরকারের মন এখনো গলাতে পারেনি। এর মধ্যে আন্দোলন ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বারবার। কখনো বলপূর্বক, আবার কখনো মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখানোর অভিযোগও তুলেছেন কৃষকরা। তবুও রাজধানী ঘিরে অনড়, দৃঢ় সংকল্পিত কৃষকরা। আগামী দিনগুলোতেও আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন কৃষক নেতা রাকেশ তিকায়েত। তিনি বলেছেন, সরকার কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এশিয়ানেট নিউজ জানিয়েছে, কৃষক নেতাদের অভিযোগ, নানা অপপ্রচার চালিয়ে কৃষকদের এই সর্বাত্মক আন্দোলন কলঙ্কিত করার চেষ্টা হয়েছে। ‘সন্ত্রাসী’ ও ‘পাকিস্তানি’ তকমাও জুটেছে কপালে। কিন্তু যত বাধা এসেছে ততই যেন ধীর, স্থির আরও বেশি সংকল্পিত হয়েছেন কৃষকরা। যত তাদের আটকানোর চেষ্টা হয়েছে, তত যেন ট্রাকটর চালানো হাত আকাশের দিকে মাথা তুলে অধিকার আদায়ের দাবি জানিয়েছে। কোনোভাবে বন্ধ করা যায়নি কৃষক আন্দোলন। শুধুই যে ক্ষমতাসীন সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই তা নয়। দীর্ঘ ১০০ দিন রাস্তায়, ট্রাকটরের ওপর ঠাঁয় বসে থাকা কুষকদের লড়তে হয়েছে দিল্লির চরম প্রকৃতির সঙ্গেও। পুরো তিন মাসের হাড় কাঁপানো ৫ ডিগ্রি ঠাণ্ডা গেছে তাদের ওপর দিয়ে। শীতের মধ্যে সহ্য করতে হয়েছে বৃষ্টিও। প্রকৃতির এই নির্মমতার মধ্যে মাথার ওপর ছাদ বলতে খোলা আকাশের নিচে এক টুকরো ত্রিপল। শীত ও বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর এবার আসছে গরম। কয়েক দিন পরই তাপমাত্রা ছুঁয়ে ফেলবে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাতে গলে যেতে শুরু করবে রাস্তার কালো পিচও। তখন এই কাঠফাটা রোদও সহ্য করতে হবে তাদের। কিন্তু রণেভঙ্গ দেওয়ার কোনো লক্ষণই নেই। যত বাধাই আসুক, সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের অধিকারের দাবি জানানো অব্যাহত রাখবেন কৃষকরা। এমনটাই প্রত্যয় আন্দোলনের আয়োজক ও নেতাদের। পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা ও আসাম রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর সেখানকার কৃষকরাও আন্দোলনে যোগ দেবেন বলেও আশা করা হচ্ছে। নয়াদিল্লির নিকটেই গাজিপুর সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকরা ইতোমধ্যে স্পষ্ট জানান দিয়েছেন, এ আন্দোলনে তাদের দাবি, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করা। সেই সঙ্গে বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিল।
নতুন তিনটি কৃষি আইন বাতিল ও সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে ট্রাক ও ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে পাঁচ ঘণ্টার জন্য এই অবরোধ করেছেন কৃষকেরা। চলমান আন্দোলনের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন আন্দোলনরত ২৪৮ কৃষক। তা সত্ত্বেও ‘জান কবুল’, তবুও নিজেদের দাবি আদায়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বিক্ষোভকারীরা। আগামী দিনগুলোতেও বিক্ষোভ-আন্দোলন অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন কৃষক নেতারা। পাঞ্জাব রাজ্যের ৬৮ বছর বয়সী কৃষক অমরজীত সিং বলছেন, ‘মোদি সরকার এই আন্দোলনকে অপমানের জায়গা থেকে দেখছে। তারা কৃষকদের দুর্দশা দেখতে পারছে না। প্রতিবাদ করা ছাড়া আর কোনো উপায় তারা আমাদের জন্য রেখে যায়নি।’ কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের প্রণীত বহুল বিতর্কিত তিনটি আইনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৬ নভেম্বর থেকে নয়াদিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির কয়েক লাখ কৃষক। এরই মধ্যে ভারতের কৃষক আন্দোলন আন্তর্জাতিক মহলে সমর্থন পেয়েছে। পরিবেশবাদী কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ থেকে শুরু করে মার্কিন সংগীতশিল্পী রিয়ান্নাসহ বিভিন্ন তারকা এ আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।