Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারে বিক্ষোভে আবারো নির্বিচারে গুলি, একদিনেই মৃত ৩৮

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২১, ৯:৩৯ এএম

মিয়ানমারে গণতন্ত্রের দাবিতে করা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে আবারও নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে জান্তারা। এতে এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতশত মানুষ। বিক্ষোভ দমাতে সামরিক বাহিনী ও পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে। এ অবস্থায় আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা মিয়ানমার।

গতকাল রাতে মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত মাসে দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর এক দিনের হিসাবে গতকালই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গত মঙ্গলবার মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানান। এর পরদিনই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে হতাহতের এ ঘটনা ঘটল। এছাড়া জান্তা সরকার অ্যাসোসিয়েট প্রেসের একজন ফটোগ্রাফারসহ ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।

ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনার বলেন, ‘শুধু আজই (বুধবার) ৩৮ জন মারা গেছে; অভ্যুত্থানের পর সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে আজই। এ নিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের পর অন্তত অর্ধশত মানুষ প্রাণ হারাল।’ অবিলম্বে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাক্টিভিস্ট থিনজার শুনলেই বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘বীভৎস ঘটনা, এটা রীতিমতো হত্যাকাণ্ড। পরিস্থিতি বা অনুভূতি বর্ণনা করার ভাষা নেই আমার।’

রয়টার্স জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্রের সাথে সারা দেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর বিষয়ে জানতে ফোন করা হলেও তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।

বুধবার সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে মোনায়া শহরে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে পাঁচজন মারা যান সেখানে। পাঁচজনের মধ্যে চারজন পুরুষ, অন্যজন নারী।
এদিকে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস গতকালের রক্তক্ষয়ের পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দমন-পীড়ন থেকে সরে এসে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগেও তিনি একাধিকবার সু চিসহ আটক রাজবন্দিদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় মিয়িংগিন শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চারজন নিহত হয়েছে। আর দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে প্রাণ হারিয়েছে দুজন। কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেটের পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাজা গুলি ছোড়েন। মিয়িংগিনে আহত হয়েছে অন্তত ১৭ জন। আর মোনিয়া শহরে দুজন উদ্ধারকর্মী দুজনের মরদেহ সরিয়ে নিতে দেখেছেন। প্রতিদিনের মতো এদিন ইয়াঙ্গুনেও বিক্ষোভ হয়েছে। দেশটির বৃহত্তম এ শহরে একজনের প্রাণহানির কথা জানা গেছে। এসব শহরের পাশাপাশি চিন, কাচিন ও শান রাজ্যে এবং সাগাইং ও দাউই শহরে প্রতিবাদ হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের ওপর বল প্রয়োগের পাশাপাশি ধরপাকড়ও অব্যাহত রয়েছে। ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০০ জনকে আটক করেছে। পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের (এএপিপি) হিসাবে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার ২০০-এর বেশি ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০০ জন এখনো কারাগারে আছে বা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সূত্র : ভোয়া, এএফপি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ