Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সন্ত্রাসীদের সাথে আপস করবেন না বুহারি

খুন-ধর্ষণ-অপহরণ বেড়েই চলছে নাইজেরিয়ায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

নাইজেরিয়ায় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে খুন, ধর্ষণ, অপহরণের মতো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। গত তিন মাসে স্কুল থেকে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার। দেশটির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় জামফারা প্রদেশের একটি আবাসিক স্কুল থেকে তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার তাদের সবাইকে মুক্তিপণ ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হলেও বারবারই প্রশ্ন উঠছে দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে। যদিও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আপস করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন নাইজেরিয়ান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বুহারি। বোমা হামলা, খুন, ধর্ষণ বা অপহরণ, নাইজেরিয়ার জন্য প্রতিনিয়ত এগুলোই হয়ে উঠছে স্বাভাবিক ঘটনা। দারিদ্র্য নিপীড়িত দেশটির বেশির ভাগ মানুষের কাছে পৌঁছায় না শিক্ষার আলো। তাই উন্নয়নের চাকাও থেমে আছে অনন্তকাল ধরে। বয়স্ক থেকে শিশু এই সন্ত্রাসী তৎপরতা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কেউ। স¤প্রতি স্কুল থেকে শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে প্রায় সাড়ে ৩০০ ছাত্রীকে আবাসিক স্কুল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা। মঙ্গলবার কোনো রকম মুক্তিপণ ছাড়াই ছেড়ে দেয়া হয় তাদের। সন্তানদের পেয়ে যেন নতুন করে প্রাণই ফিরে পান অভিভাবকরা। আর কর্তৃপক্ষ জানায়, মুক্তি পাওয়া সব ছাত্রী ফিরেছে সুস্থ অবস্থায়। তবে সা¤প্রতিক এ ঘটনার পেছনে কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত রয়েছে তা জানায়নি স্থানীয় সরকার। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনার সুফলেই আমাদের মেয়েরা ঘরে ফিরতে পেরেছে। তারা সবাই সুস্থ আছে, এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। তা ছাড়া তাদের মুক্ত করতে কোনো ধরনের পণ দিতে হয়নি। এটাও আমাদের জন্য সুখবর। ২০১৪ সালে উত্তর প‚র্বাঞ্চলীয় চিবুক শহর থেকে ২৭৬ জন ছাত্রীকে অপরণের পর নাইজেরিয়ায় অপরাধ প্রবণতা বাড়তে থাকার বিষয়টি বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করে। গত তিন মাসে স্কুল থেকে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের অপহরণ দেশটিতে এখন এমনই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে, নেহায়েৎ বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছে এগুলো। এমনকি বোকো হারামসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনায় বসেও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির সরকার। সমঝোতায় পৌঁছানো যাচ্ছে না কোনোভাবেই। দেশটির বেশির ভাগ মানুষ কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় আজীবনই বর্ণবৈষম্যের শিকার। এ ছাড়া জাতিগত বিভেদ, চরম দারিদ্র্যতা ক্ষোভ জন্ম দিচ্ছে নাইজেরিয়ানদের মধ্যে। হয়তো সে ক্ষোভ থেকেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম জড়িয়ে পড়ছে এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণত, বড় অঙ্কের মুক্তিপণের আশায় বা কখনো কখনো মানবঢাল ব্যবহার করে চোরাচালান করার সুযোগ তৈরি করতে এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে অপহরণ করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীগোষ্ঠীগুলো। দুর্বল আইনি ব্যবস্থার কারণেই এমন বেপরোয়া সন্ত্রাসীরা বলছে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়। যদিও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আপস করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন নাইজেরিয়ান প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বুহারি। রয়টার্স, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নাইজেরিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ