Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সিরিয়ায় এখনও লাখ লাখ মানুষ নিখোঁজ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলেছেন, সিরিয়ায় দশ বছরের গৃহযুদ্ধের সময় নির্বিচারে আটক লাখ লাখ মানুষের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। এছাড়া আরও হাজার হাজার মানুষকে হেফাজতে রেখে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়েছে জাতিসংঘের তদন্তকারীদের নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সিরিয়া যুদ্ধের সব পক্ষই যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থেকেছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্যাতিতরা তদন্তকারীদের যে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন তাতে ‘অকল্পনীয় দুর্ভোগের’ বর্ণনা দিয়েছেন। এদের মধ্যে ১১ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনাও রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমন করতে প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের বাহিনী মারাত্মক শক্তিপ্রয়োগ শুরু করলে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। পুরো দেশ বিধ্বস্ত করে দেওয়া এই গৃহযুদ্ধে অন্তত তিন লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় এবং দেশটির জনসংখ্যার অর্ধেকই বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। আর প্রায় ৬০ লাখ বিদেশি শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেয়। সিরিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে তদন্ত করতে ‘স্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশন’গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। বিভিন্ন পক্ষের শতাধিক কারাগার খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ২৬৫০ জনেরও বেশি মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কমিশনটি। এতে বলা হয়েছে, যুদ্ধে জড়িত প্রায় সবগুলো পক্ষই মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। কমিশনের চেয়ারম্যান পাউলো পিনহেইরো বলেন, ‘সরকারি বাহিনীগুলো নির্বিচারে রাজনৈতিক বিরোধী, সাংবাদিক, মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্ট এবং বিক্ষোভকারীদের আটক করে।, এ থেকেই সংঘাত শুরু হয় এবং এটাই সংঘাত শুরু হওয়ার ম‚ল কারণ।’ তিনি আরও বলেন, ‘সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এবং হায়াত তাহরির আল শাম ও ইসলামিক স্টেটের মতো জাতিসংঘ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো মানুষের স্বাধীনতা হরণ করতে শুরু করে, চরমভাবে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে শুরু করে। এর সঙ্গে তাদের সা¤প্রদায়িক মনোভাবও জড়িয়ে ছিল।’ বিভিন্ন আটক থাকা পুরনো বন্দিরা মাসের পর মাস ধরে দিনের আলো না দেখা, নোংরা পানি পান ও বাসি খাবার খেতে বাধ্য হওয়ার কথা জানিয়েছেন। বচলেছেন শত শত বন্দিকে একসঙ্গে রাখা হলেও সেখানে ছিলো না কোনও টয়লেট দেওয়া হয়নি কোনও চিকিৎসাও। খবরে আরো বলা হয়, সাবেক বন্দিরা মাসের পর মাস ধরে দিনের আলো না দেখার কথা, অপরিষ্কার পানি পান করার ও বাসী খাবার খেতে বাধ্য হওয়ার কথা জানিয়েছেন। পায়খানাবিহীন অতিরিক্ত বন্দিতে প‚র্ণ সেলে তাদের থাকতে হয়েছে এবং কোনো চিকিৎসাও দেওয়া হয়নি। স্বীকারোক্তি আদায় ও অন্যান্য উদ্দেশ্য প‚রণে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছে এসব বন্দির ওপর। কোনো বিচার ছাড়াই বন্দিদের মেরে ফেলা হয়েছে অথবা যে ধরনের বিচারে বন্দিদের মৃত্যুদÐ দেওয়া হয়েছে সেগুলো পক্ষপাতদুষ্ট ছিল বলে কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আটক অবস্থায় কতোজন বন্দি মারা গেছেন তার সঠিক সংখ্যা অজ্ঞাতই রয়ে গেছে। তবে প্রতিবেদনের রক্ষণশীল হিসাবগুলো বলছে, সরকারি হেফাজতে লাখো মানুষ নিহত হয়েছেন। সিরিয়ার সরকার ও জঙ্গি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম বন্দিদের নির্যাতন করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। সংঘটিত অপরাধের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সব দেশের প্রতি আহŸান জানিয়েছে জাতিসংঘের সিরিয়া বিষয়ক তদন্ত কমিশন। বিবিসি।

 



 

Show all comments
  • habib ৩ মার্চ, ২০২১, ১০:৪৭ এএম says : 0
    OIC members are fail to protect Muslim around the world
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানুষ

২৭ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ