মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সউদী সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকান্ডের ঘটনায় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন, সউদী যুবরাজকে সরাসরি দন্ড দিতে গেলে তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ক‚টনৈতিকভাবে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এদিকে, শনিবার পাকিস্তান বলেছে যে, তারা এ ঘটনার বিচারে ‘সউদীর প্রচেষ্টা’ ছিল বলে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তারা দেশটির সাথে ‘সংহতি’ প্রকাশ করেছে।
সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে গ্রেপ্তার বা হত্যার অভিযানে সউদী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান অনুমোদন ছিল বলে দাবি করে গত শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। এই রিপোর্ট সত্তে¡ও বাইডেন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ২০২০ সালে নির্বাচনি প্রচারকালে সউদী আরবকে ‘শরীয়া’ রাষ্ট্র বলে অভিহিত করেছিলেন বাইডেন, যারা ‘সামাজিক মূল্যবোধকে ছাড় দেয় না’। কিন্তু প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পরে তার নতুন গঠিত জাতীয় সুরক্ষা দল তাকে পরামর্শ দিয়েছিল যে, আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও ব্যবস্থা নেয়ার উপায় নেই। আমেরিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আরব মিত্রের সাথে সম্পর্ক লঙ্ঘন না করে তার ক্ষমতার উত্তরাধিকারীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা বা তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক অভিযোগ তোলা থেকে বাইডেনকে বিরত থাকতে হবে।
কর্মকর্তারা বলেছিলেন, হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরে ঐক্যমত্য গড়ে উঠেছে যে, সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযান ও ইরানের মোকাবেলায় সউদী সহযোগিতার ক্ষেত্রে এ ধরণের পদক্ষেপ খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাইডেনের পক্ষে সিদ্ধান্তটি তার সতর্ক প্রবৃত্তিটিকেই প্রকাশ করে। কারণ, সউদী আরবের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার দায়িত্ববোধ তাকে খাশোগি ইস্যুতে সউদী আরবকে মূল্য দিতে বাধ্য করতে বা যুবরাজ মোহাম্মদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বাধা দিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন যেভাবে এই ষড়যন্ত্রের দায় অন্যদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে যেয়ে মানবাধিকার গোষ্ঠীসহ অনেকগুলো সংস্থা বাইডেনকে যুবরাজের বিরুদ্ধে অন্তত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য চাপ দিচ্ছিল। বাইডেনের সহযোগীরা বলেছিলেন যে, ব্যবহারিক বিষয় হিসাবে যুবরাজ মোহাম্মদকে শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। তবে তারা অস্বীকার করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সউদী আরবকে কোন ছাড় দিচ্ছে। ইতিমধ্যে সাংবাদিক জামাল খাসোগজি হত্যাকান্ডে জড়িতসহ বিদেশে নির্বাসিতদের হুমকিদাতা হিসাবে চিহ্নিত সউদি আরবের ৭৬ জনের ওপর ইতোমধ্যে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সেক্রেটারি অফ স্টেট অফ অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন সউদী আরবের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান, যিনি খাশোগি অভিযানে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন এবং যুবরাজকে সুরক্ষা দানকারী সউদী রয়্যাল গার্ডের একটি ইউনিট।
এ দিকে, শনিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জাহিদ চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা জামাল খাশোগি হত্যার বিষয়ে ‘মূল্যায়ন’ সম্বলিত মার্কিন প্রশাসনের ঘোষিত গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়টি লক্ষ্য করেছি।” তিনি বলেন, “পররাষ্ট্র দফতরও লক্ষ করেছে যে সউদী সরকার খাশোগির হত্যাকে একটি ‘ঘৃণিত অপরাধ’ এবং ‘রাজ্যের আইন ও মূল্যবোধের প্রকাশ্য লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সউদী সরকার আরও উল্লেখ করেছে যে দায়বদ্ধ ব্যক্তিদের যথাযথ তদন্ত, দোষী সাব্যস্ত এবং সাজা দেয়া হয়েছে এবং ন্যায়বিচার কার্যকর হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য তারা আইনী ব্যবস্থার মধ্যে সম্ভাব্য সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।”
মুখপাত্র জানান, পাকিস্তান এ বিষয়ে সউদী প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দেয় এবং সউদী আরবের রাজ্যের সাথে সংহতি প্রকাশ করে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তান আইন সম্পর্কিত শাসন, জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা, এবং সমস্ত রাষ্ট্রের নিজ নিজ সাংবিধানিক কাঠামো এবং আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা অনুসারে মানবাধিকার সুরক্ষা এবং প্রচারের উপর গুরুত্বারোপ করে।’ সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।