Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হেফাজত নেতা জসিমকে হত্যার চেষ্টাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করুন -হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:৪৬ পিএম

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মুফতি জসিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাতকারী সন্ত্রাসী মাসুম আহমেদ ইমরানের জবানবন্দি অনুযায়ী হামলার নির্দেশদাতা শাহিন ও মূলহোতারা গ্রেফতার না হলে, শুধু মুফতি জসিম নয়; আরও সিনিয়র কোনো আলেমকে হত্যাচেষ্টা করা হতে পারে। হেফাজত নেতা মুফতি জসিমকে হত্যার চেষ্টাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছে হেফোজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ। হত্যাচেষ্টার মূলহোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত মাওলানা জসিম উদ্দিন। আজ রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, হেফাজত নেতা মুফতি জসিম উদ্দিনকে হত্যার চেষ্টাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করুন। হেফাজত নেতাকে হত্যার পরিকল্পনাকারী মূলহোতাদের আঁড়াল করার পরিণাম শুভ হবে না। অচিরেই হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর নেতা মুফতি জসিম উদ্দিনকে হত্যার চেষ্টাকারী মূলহোতাদের গ্রেফতারের দাবিতে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আল্লামা আবুল কালাম,বাহাদুরপুর পীর আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবী, সহকারী মহাসচিব মুফতি জসিম উদ্দিন, সহ-সভাপতি মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা শফিকউদ্দীন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মাওলানা মুসা বিন ইযহার, সহ-সাধারণ সম্পাদ মাওলানা জাবের কাসেমী, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা আবুল কাশেম, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি এবিএম শরীফুল্লাহ, মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, স্বেচ্চাসেবক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা রাশিদ বিন নূর, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা সাইফুল্লাহ হাবিবী, মাওলানা আ ফ ম আকরাম হোসাইন, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা নাসির উদ্দিন, মাওলানা আবুল কাসেম ও মাওলানা সানাউল্লাহ খান।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থেকে বাসায় ফেরার পথে আততায়ীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মুফতি জসিম উদ্দিন।
হামলার একদিন পর মুফতি জসিম উদ্দিন লালবাগ থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। স্থানীয়রা জানায়, হামলাকারীর নাম মাসুম আহমেদ ইমরান। সে টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করে থাকে। হামলার ঘটনার চারদিন পর দক্ষিণখান থেকে মাসুমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর পুলিশকে দেয়া স্বীকারোক্তিতে মাসুম জানায়, বড়কাটারা মাদরাসার ‘শাহিন হুজুর’ নামের এক ব্যক্তি তাকে এ কাজের জন্য টাকা দিয়েছে। পরবর্তীতে ১৪ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানা থেকে কোর্টে পাঠানো ফরওয়ার্ডিংয়ে হুকুমদাতা হিসেবে ‘শাহিন হুজুর’-এর নাম উল্লেখ করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হেফাজত নেতা মুফতি জসিমের ওপর হামলার ধরণ ও হামলাকারীর স্বীকারোক্তি থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্বরোচিত এ হামলার বিশ দিন পেরিয়ে গেলেও গ্রেফতার হয়নি মূলহোতারা। গ্রেফতারকৃত মাসুম পুলিশের কাছে তার নির্দেশদাতা ‘শাহিন হুজুর’এর নাম স্বীকার করেছে। সংবাদ সম্মেলনে ‘শাহিন হুজুরের’ পরিচয়ও প্রকাশ করেছেন হেফাজত নেতৃবৃন্দ। তার স্থায়ী ঠিকানা লালমনিরহাট। তিনি পরিবার নিয়ে লালবাগে ভাড়া থাকেন। আশরাফুল উলুম বড়কাটারা মাদরাসার কিতাব বিভাগে শিক্ষকতা করেন। বড়কাটারা মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সাইফুল ইসলামকে শাহিনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, মাদরাসায় চাকরির সময় শাহিন তার নাম পরিবর্তন করে মুশাহিদ রাখে। মাওলানা সাইফুল হেফাজত নেতাদের জানিয়েছেন, মুফতি জসিমের ওপর হামলার দুইদিন পর অর্থাৎ ১১ ফেব্রুয়ারি শাহিন তার বাবা অসুস্থতার কথা বলে মাসরাসা থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি যায়, এরপর সে আর মাদরাসায় ফেরেনি। শাহিনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেই সেই মূলহোতাদের নাম বেরিয়ে আসবে। শাহিনের পরিচয় প্রকাশের পরও তাকে গ্রেফতার না করে কালক্ষেপণ করার বিষয়টি খুবই রহস্যজনক উল্লেখ করে হেফাজত নেতারা বলেন, আমরা আশংকা করছি, কোনো কুচক্রী মহলের ইশারায় তাকে গ্রেফতার না করে মূলহোতাদের বাঁচানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হলে, হেফাজত মুফতি জসিমের হত্যাচেষ্টাকারী ও নির্দেশদাতাদের বিচারের দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে বলেও জানানো হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হেফাজতে ইসলাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ