মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিগত বছরেও ব্রিটেন এবং আমেরিকার গবেষণায় দেখা গেছে, চরমপন্থী সমর্থিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে অনলাইন অনুসন্ধান ব্যাপকমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষকরা বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় পঠন তালিকা, পডকাস্টে প্রচারিত পাঠ্য বা ইউটিউবে অডিওবুক হিসাবে আবৃত্তি করা, চরমপন্থী প্রকাশনা সংস্থাগুলোর বই-পুস্তক এবং সবচেয়ে মারাত্মক সাহিত্যসমূহ, যেগুলো চরমপন্থীদের নৃশংসতার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে, অনলাইনে সেগুলো সম্পর্কে সার্চ এবং পঠন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গিয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসি’র আমেরিকান ইউনিভার্সিটির ব্রায়ান হিউজ বলেছেন, অনলাইন চরমপন্থী আদর্শ সংক্রান্ত সাহিত্যের সহজলভ্যতা কিছু অংশে উচ্চমাত্রার চরমপন্থী কার্যকলাপের জন্য দায়ী। বাদামী বর্ণের অভিবাসীদের দ্বারা ফ্রান্সের সহিংসতা ছড়িয়ে দেয়ার কল্পকাহিনী নিয়ে লেখা ফরাসী লেখক জঁ হাসপাইঁ-এর ‘দ্য ক্যাম্পস অফ দ্য সান্টস’, আমেরিকাতে অভিবাসী বিরোধী কর্মীদের মন জয় করেছিল। অত্যন্ত প্রভাবশালী ফরাসি লেখকদের অনেকেই ফরাসী শেতাঙ্গবাদী ‘নুঁভেল দোহাঁত’ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেলসি স্টিবার বর্ণবাদী বইগুলোর প্রভাব সম্পর্কে বলেছেন, ‘এটি একটি ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বাইবেলের রূপকে লুকিয়ে থাকা অস্ত্রস্বরূপ। স্টিভ ব্যানন এবং স্টিফেন মিলার এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা এবং আইওয়া থেকে আগত একজন কংগ্রেসম্যান স্টিভ কিংসহ বহু শীর্ষস্থানীয় আমেরিকান রিপাবলিকান এভাবেই বর্ণবাদী ধারণা প্রচার করেছেন। ভবিষ্যত পৃথিবী নিয়ে লেখাগুলো বিশেষভাবে ‘গতিবাদী’ নামে পরিচিত শেতাঙ্গবাদী চরমপস্থীদের মধ্যে জনপ্রিয়। তারা বিশ্বাস করেন যে, সভ্যতা (বা অন্তত উদার গণতন্ত্র) শিগগিরই ভেঙে পড়বে। তারা আশাবাদী, সহিংস ঘটনা বা গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে এর যবনিকা ঘটবে।
শেতাঙ্গবাদী চরমপন্থীরা এ জাতীয় লেখকদের অনুসরণ করেন। কারণ তারা কথিত শ্বেতাঙ্গ স্বর্ণযুগের সূচনা করার পথ পরিষ্কার করার জন্য সহিংসতার ব্যবহারকে ন্যায়সঙ্গত মনে করেন। বইগুলো তাদের ধারণা দেয় যে, কীভাবে তা সহিংস বিপ্লবের মাধ্যমে সেই পথ উপলব্ধ করতে হয়। তাই এ জাতীয় লেখার বিষয়গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। এসব লেখার মধ্যে এমন মাত্রায় নৃশংসতার বর্ণনা থাকে যে, পড়ে অনেকেই বমি করে ফেলতে পারেন। এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা ধারণ করার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে, বলেছেন অ্যান্টি-ডিফেমেশন লিগের জোয়ানা মেন্ডেলসন। তিনি বলেন, ‘লোকেরা বই উদ্ধৃত করে এক ধরনের আশ্বাস হিসাবে উল্লেখ করছে, যার মাধ্যমে তাদের উগ্রবাদী দৃষ্টিভঙ্গি বৈধতা পাচ্ছে।’
চরমপন্থী লেখাগুলোর একজন নিবেদিত পাঠক ছিলেন টিমোথি ম্যাকভি, যিনি ১৯৯৯ সালে ওকলাহোমা সিটিতে একটি ফেডারেল ভবনে বোমা মেরে ১শ’ ৬৮ জনকে হত্যা করেছিলেন। (তিনি উপন্যাসে বর্ণিত পদ্ধতিতে সার এবং বিস্ফোরক পদার্থের একটি লরি ব্যবহার করেছিলেন।) অন্যরা সত্যিকারের একটি আধা-সামরিক দল গঠনের জন্য অনুপ্রাণিত হয়েছিল, যেটিকে ‘অর্ডার; নামে অভিহিত হয়েছিল। এ ধরনের চরমপন্থী ধারণাগুলো জাতিবিদ্বেষী এবং অন্যান্য চরমপন্থী দলগুলোর মধ্যে বারবার ঘুরেফিরে আসে। এক সময় যাকে ইউজেনিকস বলা হত, উদাহরণস্বরূপ, বর্তমানে সেটিকেই ‘বর্ণবাদ বাস্তবতা’ হিসাবে অভিহিত করা হয়।
ওয়াশিংটনের আটলান্টিক কাউন্সিলের ঘরোয়া উগ্রবাদ নিয়ে গবেষণা করা জ্যারেড হোল্ট বলেছেন, এ জাতীয় বই এখনও খুব শক্তিশালী। বর্ণবাদী চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর প্রবীণ সদস্যরা তাদের অনুজদের কাছে সঙ্কলনগুলো হস্তান্তর করে থাকেন। এগুলো তাদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে, নতুন উদ্যোগ পরীক্ষা করতে এবং তাদের জীবনের উদ্দেশ্য বোঝার উদ্বেগকে সহজ করতে ব্যবহৃত হয়। এরপর তরুস সদস্যরা নিজেরাই অনুপ্রাণিত হয়ে এসব বই এবং নথিপত্র সন্ধান করে থাকেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।