Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ কম হওয়ার নেপথ্যে ‘জিন’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:২৭ পিএম

বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পরে এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গিয়েছে। এই মহামারির দুই দফা আক্রমণে ইউরোপ, আমেরিকাজুড়ে ভয়াবহ অবস্থা দেখা দিয়েছে। এখনো লকডাউন থেকে বের হতে পারেনি ইউরোপ। তুলনামূলকভাবে ভারতীয় উপমহাদেশ তথা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের অবস্থা অনেক ভালো।

সার্বিকভাবে দেখলে বাংলাদেশ, ভারতের মতো জনবহুল দেশে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন তুলনামূলক কম তেমনই করোনাকে হারানোর সংখ্যাও প্রচুর বেশী। বেশীরভাগ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে। এর কারণ খুঁজতে যেয়ে বিজ্ঞানীরা নতুন তত্ত্ব খুঁজে পেয়েছেন। তারা বলছেন, এর জন্য দায়ী নিয়ান্ডারথাল প্রজাতির মানবের ডিএনএ, যা উপমহাদেশের মানুষের মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার বছর ধরে। সেটাই করোনার বিরুদ্ধে মানুষকে লড়তে ব্যাপকভাবে সাহায্য করছে। এর জেরেই মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীর সংখ্যাও কম।

জাপান ও জার্মানির বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিয়ান্ডারথালের প্রজাতির মানব ও আধুনিক মানবের মধ্যে যৌন সংসর্গ হয়েছিল। তার ফলেই সেই জিন থেকে গিয়েছে ভারতের মানুষের মধ্যে আর সেটাই বড় ঢাল হচ্ছে করোনার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য। প্রসঙ্গত অন্য একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী, নিয়ানডার্থাল মানবের থেকে মানুষের দেহে এসেছে করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কিত জিন। যে ‘হোমিনিন’ (মনুষ্যগোত্রীয়) গোষ্ঠীর প্রজাতির অস্তিত্ব পৃথিবীতে ৬০ হাজার বছর আগে ছিল। এমনটাই দাবি করা হয়েছিল ওই গবেষণায়।

সেই গবেষণা করেছিলেন সুইডেনের দুই জিন বিশেষজ্ঞ দান্তে পাবো এবং হুগো জেবার্গ। তাতে যুক্ত ছিল জার্মানির ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট, জাপানের ওকিনাওয়া ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং সুইডেনের ক্যারোলিনসকা ইনস্টিটিউটও। গবেষণা অনুযায়ী, ইউরোপের (প্রায় আট শতাংশ) তুলনায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের (প্রায় ৩০ শতাংশ) মানুষের সংক্রমিত হওয়ার হার বেশি। কারণ ওই জিনের অংশ দক্ষিণ এশিয়ার মানুষদের ক্ষেত্রে বেশি প্রভাবশালী বলে গবেষণায় দাবি করা হয়েছে।

নিয়ান্ডারথাল একটি জীবাশ্ম-নৃতাত্ত্বিক প্রজাতির নাম যারা প্লাইস্টোসিন যুগে বাস করতো। এরা হোমো গণের অন্তর্ভুক্ত। এজন্যই তাদের দ্বিপদী নাম ‘হোমো নিয়েন্ডারথালেনসিস’ বা ‘হোমো স্যাপিয়েন্স নিয়েন্ডারথালেনসিস’। তাদের আবাসস্থল ছিল ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্য ও পশ্চিম অঞ্চল। ৬ লাখ থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার বছর আগে ইউরোপে প্রথম প্রাক-নিয়ান্ডারথাল চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব ঘটে।

এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে অনেক সময় ‘হোমো হেইডেলবার্জেন্সিস’ নামক অন্য একটি ক্ল্যাডিস্টিক প্রজাতির বৈশিষ্ট্য শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যেখানে জীবাশ্ম হয়ে যাওয়া কঙ্কালের অবশেষ পাওয়া যায়নি সেখানেও ব্যবহৃত পাথরের যন্ত্রপাতির মাধ্যমে নিয়ান্ডারথালদের উপস্থিতি শনাক্ত করা যায়। নিয়ান্ডারথালদের করোটির ক্ষমতা আধুনিক মানুষের চেয়ে বেশি। এটা নির্দেশ করে, সম্ভবত তাদের মস্তিষ্কের আকারও মানুষের চেয়ে বড় ছিল। তারা মূলত মাংসাষী ছিল, এ কারণে শিকারেও তাদের দক্ষতা ছিল অতুলনীয়। গড়পরতায় তাদের উচ্চতা তখনকার হোমো স্যাপিয়েন্সদের সাথে তুলনীয় ছিল।

পুরুষদের উচ্চতা ছিল ১৬৫-১৬৮ সেমি (৫ ফুট ৫), হাড়ের শক্তিশালী গড়নের কারণে তারা বেশ ভারী ছিল। তাদের হাত ও বাহুতে অনেক শক্তি ছিল। নারীদের উচ্চতা ছিল ১৫২-১৫৬ সেমি (৫ ফুট ১)। তাদের স্তনের আকৃতি খুব বড় ছিল। কারণ খুব দ্রুত মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধির জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন ছিল। আর নিয়ান্ডারথাল শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে এই শক্তির একমাত্র উৎস ছিল মায়ের দুধ। সূত্র: দ্য প্রিন্ট।



 

Show all comments
  • Omanisar Otto Hasi ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৫:৫৭ পিএম says : 0
    মাছে ভাতে যেমন বাঙালী শর্দি কাশিতেও বাঙালি, শর্দি কাশিতে বাংলাদেশিদের কখনো ঔষধই লাগেনা করোনার সময় যত ঔষধ খাইছে সব ভয়ে খাইছে
    Total Reply(0) Reply
  • Shahid Bin Ishak ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৫:৫৭ পিএম says : 0
    আল্লাহ আমাদের সকলকে রক্ষা করেছেন। তাই বলে কূফরি করবেন না ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mujibur Rahman ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৫:৫৮ পিএম says : 0
    ইউরোপীয় গবেষণা সম্ভবত এই অন্চলের মানুষদের অসভ্য জাতিতে শ্রেণীভুক্ত করার চেষ্টা থেকে করা হয়েছে!
    Total Reply(0) Reply
  • রিপন ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৬:১৭ পিএম says : 0
    এসব নিউজ প্রচার না করাই ভালো
    Total Reply(0) Reply
  • পলাশ ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৬:১৮ পিএম says : 0
    আল্লাহর অনুগ্রহে আমরা রক্ষা পেয়েছি
    Total Reply(0) Reply
  • Md omor faruk Omor ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৩৮ পিএম says : 0
    Allah..
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জিন

২৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ