পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রমজান মাসে ভোক্তা চাহিদা সবচেয়ে বেশি- সয়াবিন তেল, ডাল, চিনি, ছোলা, খেজুর, পেঁয়াজ, বেগুন ইত্যাদি। পবিত্র রমজান মাস শুরুর মাত্র এক মাস ২৫ দিন আগে বাড়িয়ে দেয়া হলো এ সব পণ্যের অন্যতম সয়াবিন তেলের দাম। ভোক্তা ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই রোজা আসার পৌনে দুইমাস আগেই সয়াবিনের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আর বাজারে তেলের দাম নিয়ে চলছে তেলেসমাতি। আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে যেন ভোক্তা ঠকানোর প্রতিযোগিতা চলছে। যে যেভাবে পারছে দাম নিচ্ছেন। এ যেন রমজান আসার আগেই তেল নিয়ে তেলেসমাতি।
মূলত কয়েকদিন থেকে বাজারের সয়াবিনের অস্বাভাবিক দাম বেড়ে গেছে। ভোক্তা ও খুচরা ব্যবসায়ীদের ধারণা ছিল দাম কমে আসবে। কিন্তু হঠাৎ করে ১৭ ফেব্রæয়ারি পণ্যটির দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে খুচরা, পাইকারি ও মিলগেট পর্যায়ে সয়াবিন ও পাম সুপার তেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। তবে এই দামে রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে সয়াবিন ও পাম সুপার তেল কিনতে পারছেন না ভোক্তারা। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সচিবালয়ে গত বুধবার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশক বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভায় সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়। সভাশেষে সংবাদ সম্মেলন করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সরকার নির্ধারিত সয়াবিন ও পাম সুপার তেলের দাম সাংবাদিকদের জানান। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী প্রতি লিটার সয়াবিন (খোলা) মিলগেটে ১০৭ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১১০ টাকা এবং খুচরা ম‚ল্য ১১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বোতলের প্রতি লিটার সয়াবিন মিলগেট মূল্য ১২৩ টাকা, পরিবেশক মূল্য ১২৭ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বোতলের ৫ লিটার সয়াবিন মিলগেট মূল্য ৫৮৫ টাকা, পরিবেশক মূল্য ৬০০ টাকা এবং খুচরা মূল্য ৬২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পাম সুপারের প্রতি লিটার মিলগেট মূল্য (খোলা) ৯৫ টাকা, পরিবেশক মূল্য ৯৮ এবং খুচরা বাজারে ১০৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গতকাল চট্টগ্রামে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভোগ্যপণ্যের দর নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ে একটি কমিটি আছে। যেখানে ব্যবসায়ীরাও আছেন। এ কমিটি বসে মূল্য নির্ধারণ করে থাকে। সমস্ত ডাটা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটা করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে গত ৬ মাসে তেলের দাম ৬৭ শতাংশ বেড়েছে। যেটা ৭০০ ডলার ছিল, সেটা এখন বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১১শ’ ডলার। সেই দামসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। যেহেতু, দেশে প্রয়োজনের ৯০ ভাগ তেল আমদানি করতে হয়, তাই আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করতে হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও সরকার নির্ধারিত দামে সয়াবিন ও পাম তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতা বিক্রেতাদের অভিযোগ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, আরামবাগ, মতিঝিল, শনিরআখড়া, কাপ্তানবাজার বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। খুচরা পর্যায়ে খোলা সয়াবিন তেল ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাম সুপার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়। বোতলের ৫ লিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৬৬০ টাকার ওপরে। তবে কোম্পানিভেদে ১৩৫ টাকা বোতলের এক লিটার সয়াবিন পাওয়া যাচ্ছে। কোনো কোনো কোম্পানির বোতলের এক লিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। দাম বেশি হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী খোলা সয়াবিন বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার দাম বেঁধে দিলে কী হবে, আমরা তো কম দামে তেল কিনতে পারছি না। আমাদের যে দামে তেল কেনা তাতে ১২৫ টাকার নিচে সুপার তেল বিক্রি করার উপায় নেই। আর খোলা ভালো সয়াবিন এখন পাইকারিতেই বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকার ওপরে। এই দামে কিনলে ১৩৫ টাকার নিচে বিক্রি করা যাবে না। তাই খোলা সয়াবিন আনা বন্ধ করে দিয়েছি।
জানতে চাইলে পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ গোলাম মাওলা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা পাইকারি বাজারে সরকার বেঁধে দেয়া দামে তেল বিক্রি করছি। এখন পাইকারি বাজারে সুপার পাম তেল ৯৬ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১১০ টাকায় লিটার বিক্রি হচ্ছে। তেলের দাম নিয়ে যা হচ্ছে তা ঠিক হচ্ছে না। এভাবে চাপাচাপি করলে বাজারে তেলের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। আমদানিকারকরা তেল আমদানিতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন। তখন বাজারে তেলের সঙ্কট দেখা দেবে।
মৌলভীবাজারের আব্দুর রশীদ অ্যান্ড সন’র ম্যানেজার জানান, সুপার পামের ব্যারেল ১৮ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি লিটারের দাম দাঁড়ায় ১১৭ টাকা (১ ব্যারেলে ১৫৯ লিটার হিসাবে)। আর খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ২০ হাজার টাকা ব্যারেল। এতে প্রতি লিটারের দাম দাঁড়ায় ১২৬ টাকা।
এ তথ্য তুলে ধরা হলে পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ গোলাম মাওলা বলেন, এ তথ্য সঠিক না। আমরা আজ থেকেই দাম কমিয়ে দিয়েছি।
গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, রমজান মাসের চাহিদা সামাল দিতে ব্যবসায়ী ও টিসিবির কাছে ভোজ্যতেল, চিনি, গুড়, খেজুর, পেঁয়াজসহ সব ধরনের পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত আছে। ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়েছেন রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখবেন।
আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশে খুচরা পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করা হলেও সাধারণ মানুষের জন্য টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে তেল বিক্রি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তারপরেও আমরা টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ মানুষকে তেল দেয়ার চেষ্টা করেছি। আগামীতেও আমরা এটি করব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।